আমায় পছন্দ না হলে দেবেন না তাতে কিছু যায় আসে না, যারা দেবে তা নিয়েই আমার সরকার হয়ে যাবে-মমতা

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: ফেব্রু ৪, ২০২১ @ ২২:০৪

এসপিটি নিউজ:   আজ তফশিলি জাতি-উপজাতিদের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় শুরুতেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে কয়েকজন সরব হন। আর তাতেই ক্ষব্ধ হয়ে বক্তৃতা থামিয়ে দেন। পরে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই বক্তব্য রাখা শুরু করেন মমতা। আর তখনই উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকেন- আপনাদের জন্য অফুরন্ত পরিশ্রম করছি।তারপরেও চাই। আরো চাই। আমায় পছন্দ না হলে ভোট দেবেন না। তাতে কিছু যায় আসে না। যারা দেবে তা নিয়েই আমার সরকার হয়ে যাবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনের বক্তৃতার পুরোটা জুড়ে ছিল বিজেপি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ। এমনকি, এদিনও টিভি মিডিয়াও তার রোষের হাত থেকে নিস্তার পায়নি। মমতা বলেন- “আমি তো ভগবান নই। ভগবানও সব কিছু করতে পারে না। মানুষ যখন মৃত্যুর মুখে পতিত হয় তখন যদি কেউ এসে বলে ভগবান বাঁচাও! সব কি বাঁচাতে পারে? সব বাঁচাতে পারে না। আর চার-পাঁচ দিন বাদে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা  হবে। এই ক’বছর ধরে আপনাদের জন্য অফুরন্ত পরিশ্রম করছি। আর তার উপর প্রত্যেক এসে বলে আমার এই চাই, আমার ওই চাই। চাইলেই তো হবে না। চাইলে দিতে তো হবে। দেবোটা কোথা থেকে?”

এখানেই না থেমে মমতা প্রশ্ন করেন – “কি বাকি আছে বলুন তো? একটা পরিবার সবুজশ্রী পাচ্ছে। একটা পরিবার কন্যাশ্রী পাচ্ছে। একটা পরিবার বিনা পয়সায় রেশন পাচ্ছে। একটা পরিবার বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য-চিকিৎসা পাচ্ছে। একটা পরিবারের তাদের ছেলে-কিংবা মেয়ে সবুজসাথী সাইকেল পাচ্ছে। একটা পরিবার কি পাচ্ছে না বলুন তো? তারপরেও চাই। আরো চাই। আরো চাই।”

“বিজেপিকে কত টুকু চেনেন। কালকে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিকবাবু বলে গেছেন- ত্রিপুরায় গিয়ে দেখে আসুন মানুষের কী হাল করেছে। আজকে আপনাদের কারও তো মাইনে বন্ধ হয়নি। এত বড় কোভিড চলে গেল আজ পর্যন্ত কোনও শিক্ষক থেকে একজনও আমার রাজ্যের একজনও সরকারি কর্মচারী বলতে পারবে না যে তারা মাইনে পায়নি।” বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এরপরই বিজেপির দিকে নিশানা করেন মমতা । বলেন- খাদ্যের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। উন্নয়নের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। এত বড় আমফান ঝড় হয়ে গেল। একজন দু’জনের বাড়ি নিয়ে সমস্যা হয়েছে। তাই নিয়ে আপনারা অনেকেই গালাগালি দিলেন আমায়। কিন্তু একবারও তো বললেন না লক্ষ লক্ষ মানুষকে যে আমরা উপকার করলাম, আমরা যে ঝড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ, বাড়ি, জল  পরিষেবা পুনরায় দিলাম। একবারও তো ভাবলেন না।”

এখানেই না থেমে এবার মমতা তোপের মুখে পড়ে টিভি মিডিয়া। বলেন- “একটা ছোট্ট কথা নিয়ে টিভিগুলো রাজনীতি করে। টিভিগুলো বিজেপি-র কাছে বিক্রি হয়ে গেছে।আপনারা কী করবেন? ওদের সাংবাদিকদের কোনও দোষ নেই। টিভিগুলো বিজেপি-র ডুগডুগি হয়ে গেছে। এরা আপনারটা একদিন দেখাবে। তারপর আর আপনারটা আর দেখাবে না মাথায় রাখবেন।”

“আমায় ভালোবেসে বললে আমি ঘর মুছে দেব। আমি বাসন মেজে দেব। কিন্তু আমায় চমকে-ধমকে কোনও কাজ করা যাবে না। তার কারণ আমি কিন্তু স্ট্রিট ফাইটার। আমি রাস্তার লোক। আমি রাস্তাটাকে খুব ভালো বুঝি। রাস্তাটাকে আমি খুব ভালো চিনি। এটা মাথায় রাখতে হবে।”

এ কথা বলার পরই রীতিমতো উউতেজিত হয়ে মমতা বন্যোপাধ্যায় বলে ওঠেন- “আর জেনে রাখবেন আমি এখানে মানুষের দয়ায় আসি। নির্বাচনের আগে কেউ এসে যদি ব্ল্যাক মেইলিং করে! এই দিতে হবে ওই দিতে হবে বলে – না, পারবো না। তাতে আপনার আমায় পছন্দ না হলে ভোট দেবেন না। কিছু যায় আসে না। যারা দেবে তা নিয়েই আমার সরকার হয়ে যাবে।”

সভার শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন- “আমি যাদের বকে ছিলাম তারা চলে আসুন। আমি আপনাদের কথা শুনবো। আমি যেমন সবার সামনে বকি, তেমন ভালোওবাসি সবার সামনে। আমি এমনই।”

Published on: ফেব্রু ৪, ২০২১ @ ২২:০৪


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − = 9