সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল ছবি-রামপ্রসাদ সাউ
Published on: এপ্রি ১৩, ২০১৮ @ ১৯:৪৫
এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ১৩ এপ্রিলঃ প্রায় ৪০ দিন পর লালগড়ের জঙ্গলের সেই বাঘকে অবশেষে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করল বন দফতর। সংবাদ প্রভাকর টাইমস প্রথম থেকেই লিখে আসছিল বন দফতরের ব্যর্থতার কথা। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটিকে ধরা যে তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না সেটা বারে বারে বলে এসছে এই পত্রিকা। বাঘটিকে ধরার যে কৌশল বন দফতর নিয়ে ছিল সেটা নিয়েও কোনও কোনও মহলে প্রশ্নও তুলেছিল, তারা আশঙ্কাও করেছিল শেষ পর্যন্ত বাঘটিকে জীবিত অবস্থায় ধরা যাবে তো? সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। মেদিনীপুরের ধেড়ুয়ায় জঙ্গলে শুক্রবার দুপুরে একদল আদিবাসী বল্লম দিয়ে বাঘটিকে হত্যা করে। এই অবস্থায় মাথায় হাত এখন বন দফতরের।
সেই ২ মার্চ লালগড়ের ঝিটকার জঙ্গলে একটি পুরুষ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখা যায়। বন দফতরের ট্র্যাপ ক্যামেরায় বাঘটির ছবি ধরা পড়ে। কিন্তু তারপর থেকে বাঘটিকে ধরতে কল্রকমের চেষ্টাই না চালিয়েছে তারা। কিন্তু সব ভস্মে ঘি ঢালার মতো হয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাঘটি নাকানি-চোবানি খাইওয়েছে বন দফতরকে। এই বাঘের আতঙ্কে মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রামের মানুষজনের কাজকর্ম শিকেয় উঠেছিল।
ইতিমধ্যে জঙ্গলমহলে শিকার উৎসব শুরু হয়েছে। বন দফতরের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই আসিবাসীরা জঙ্গলের ভিতর অস্ত্র নিয়ে শিকার করতে ঢুকছে এখন প্রতিদিন। এদিনও ৭০জনের একটি দল শিকার করতে মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া অঞ্চলের বাঘঘরার জঙ্গলে আদিবাসীরা যখন শিকারে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পূর্ণবয়স্ক বাঘটি। দু’জন যখন বাঘের আক্রমণে কাবু হয়ে পড়েছে তখন উপায় না দেখে তাদের সঙ্গী-সাথীরা বল্লম দিয়ে আঘাত করে বাঘটিকে। বল্লম ছুড়ে মারে বাঘটির দিকে। বল্লমের খোঁচায় ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গলটি।
বাঘের মৃত্যুর খবর পেয়ে কার্যত এদিন হাফ ছেড়ে বাঁচল বন দফতর। যে কাজ তারা এতদিন কাঠখড় পুড়িয়েও করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ সেটার সুযোগ কাজে লাগিয়ে একদল লোক বাঘটিকে হত্যা করল। এটা বন দফতরের কাছে একটা বিরাট ব্যররথতা বলে মনে করছে ব্যঘ্র বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিযোগ, ভারতে ব্যাঘ্র প্রকল্প করে যেভাবে বাঘ সংরক্ষণে জোর দেওয়া হচ্ছে তখন এভাবে একটি বাঘের মৃত্যুর জন্য বন দফতরকে জবাব দিতেই হবে। এর দায় তাদেরই নিতে হবে।
মৃত বাঘটিকে ময়না তদন্তের জন্য মেদিনীপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চাঁদড়া রেঞ্জের শিয়ারবনী বিটের অন্তর্গত গুড়গুড়িপাল থানার ধেঁড়ুয়া অঞ্চলের বাঘঘরার জঙ্গলে মৃত বাঘটিকে উদ্ধার করা হয়। বাঘের আক্রমনে জখম দুই আদিবাসীকে নিয়ে আসা হয়েছে মেদিনীপুর হাসপাতালে। তবে এভাবে বাঘের মৃত্যু অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। এজন্য দায়ী করা হচ্ছে বন দফতরকে।
Published on: এপ্রি ১৩, ২০১৮ @ ১৯:৪৫