
- “অর্জুন সিং, অগর মাই কা লাল হো তো- ম্যায় আপকো অ্যাইলান করতা হু- চলো কামারহাটি সে লড়াই করো।”
- “যদি বদলা নিতে না পারি, বিষ খেয়ে মৃত্যুবরণ করব, তবু তোমাদের কাছে মাথা নোয়াবো না।”
সংবাদদাতা– অনিরুদ্ধ পাল
Published on: মে ৩১, ২০১৯ @ ১৭:৩৬
এসপিটি নিউজ, নৈহাটি, ৩১মে: ভোটের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে এক সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক উত্তাপ এতটুকু কমেনি অন্তত বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে। বিশেষ করে ভাটপাড়ায়। যেখান থেকে উপ-নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরে গিয়েছেন তৃণমূলের মদন মিত্র। সদ্য তৃণমূল ত্যাগ করে চলে যাওয়া অর্জুন সিং-এর ছেলে পবন সিং-এর কাছে হারলেও তাঁর লড়াই যে মূলত অর্জুনের বিরুদ্ধে তা কিন্তু গতকাল নৈহাটির ধর্না মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেটা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন মদন।
হার নিয়ে মদনের পোস্ট মর্টেম
ভাটপাড়ায় অর্জুনের সাংঠনিক শক্তি যে মদন মিত্রের চেয়ে ঢের বেশি সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। কিন্তু সেই সাংগঠনিক শক্তি যে পুরোটাই পেশি নির্ভর সেটা বলতেও দ্বিধা করেননি। তিনি এও জানিয়েছেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাঁকে ভাটপাড়ায় নির্বাচন লড়তে আসতে হয়েছিল। ফলে এখানকার ভৌগলিক অবস্থান জানা পুরোপুরিভাবে তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পেশি শক্তিকে সামনে রেখে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়ে হত্যা করারও পরিকল্পনা করা হয়েছে।
মদনের হুঙ্কার
আর তা নিয়েই মুখ খুলেছেন এবার মদন মিত্র। বৃহস্পতিবার নৈহাটি পুরসভার সামনে ধর্না মঞ্চে দাঁড়িয়ে অর্জুন সিং-কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন মদন মিত্র। বলেন- “আরে, কিসের শের! আপনা এলাকায় কুত্তা ভি শের হ্যায়। আরে অর্জুন সিং, তোমায় আমি বলে যাচ্ছি, মাই কা লাল যদি হও- আসো ভবানীপুরে আমার সঙ্গে লড়তে। মাই কা লাল যদি হও- আসো কামারহাটিতে আমার সঙ্গে লড়তে। আমি ভবানীপুরের মদন মিত্র, হাতে ১২দিন সময় নিয়ে প্রশ্ন করি নেতৃত্বের কাছে- বলেছেন নেত্রী তুমি একজন ফৌজি। আমি বলেছিলাম কামারহাটির কাছে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বলেছিলেন- একজন সৈনিকের কোনও বর্ডার নির্ধারিত হয় না। আজ পেট্রাপোল তো কাল লাডাখ। আমি চলে এসছিলাম। আমি কোনও বিচার করিনি। একদিকে বারাকপুর আর একদিকে নৈহাটি। চারদিক দিয়ে ঘিরে নিলে আমি রাস্তা পাব না বেরোবার। তাই সেই মতো বেরোবার পরিকল্পনা আমরা করতে পারিনি।”
বুথ কর্মীদের সম্মান বাড়াতে হবে
একই সঙ্গে তৃণমূলের এই খারাপ ফলের বিষয় নিয়েও নিজের মতামত ব্যক্ত করেন তিনি বলেন- “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বুঝিয়ে দিতে হবে বনগাঁ থেকে দার্জিলিং-এর পাহাড় কোথাও একটা প্রবঞ্চনা, কোথাও টাকা, কোথাও অনাস্থা হতে পারে। কিন্তু মানুষ বেইমানি করে না। কোথাও একটা গোলমাল হয়েছে। আর এই গোলমালে বিপুল জয়ের তথ্য নিতে হবে। অনুসন্ধান করতে হবে। আর তার জন্য প্রত্যেকটা বুথে বুথে আমাদের মনে রাখতে হবে হয়তো পুলিশ এসছে আমাদের পাহাড়া দেবে, কিন্তু প্রত্যেকটা বুথে আমার মা-ভাইদের যে পাহারা দেবে সে আমারা তৃণমূলের কর্মী, সে আমার বুথের কর্মী। সেই নজর রাখবে।লুকিয়ে ফোন করে বলে দেবে- দাদা, ওরা অ্যাটাক করতে এসেছে।ওরা জড়ো হয়েছে, আপনি যদি কিছু করেন। আজকে কেন, বার বার এই কথা বলছি।”
খুঁজে বের করতে হবে গ্যাপ
“জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ, সুজিত, নির্মলদা কে নয়, তাপস রায়, রথীন ঘোষ সকলকে বলছি- সেই গ্যাপটা আমাদের খুঁজে বার করতে হবে।কেন গ্যাপ হল, কোথায় আমাদের ভুল ছিল, এসব খতিয়ে দেখার সময় এসেছে।”
“রবার্ট ক্রুসের গল্প মনে রাখবেন- ‘ফেইলিওর অফ দ্য পিলার অফ সাকসেস।’ অর্জুন সিং, তোমার সমস্ত পরিকল্পনা আমরা কিন্তু সিনেমার মতো দেখছি। অগর মাই কা লাল হো তো- ম্যায় আপকো অ্যাইলান করতা হু- চলো কামারহাটি সে লড়াই করো। আমি ভগবানের নামে শপথ নিয়ে বলছি- আমি মদন মিত্র বিশ্বামিত্র গোত্র, আজকে এখানে যখন আসি আমার কাছে দুটো হোয়াটসাপ আসে। তাতে লেখা আছে- সাবধান, কৈলাস বিজয়বর্গী লিস্ট করছে। আবারও কিন্তু টানবে। আরে কত টানবে, টানতে টানতে ইলাস্টিক ছিঁড়ে যাবে। কিন্তু মদন মিত্র আত্মসমর্পন করবে না। যারা আমার ২২ মাসের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। আমার পরিবার শেষ হয়ে গেছে। আমাদের পরিবারের শান্তি শেষ হয়ে গেছে। তাই বলছি- যদি বদলা নিতে না পারি, বিষ খেয়ে মৃত্যুবরণ করব, তবু তোমাদের কাছে মাথা নোয়াবো না।”
Published on: মে ৩১, ২০১৯ @ ১৭:৩৬