Published on: ডিসে ৮, ২০২০ @ ১৮:৪০
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৮ ডিসেম্বর: পতিত পাবনী গঙ্গা। পবিত্র গঙ্গা। মা গঙ্গা। কতভাবেই না গঙ্গাকে ডাকা যায়। এই গঙ্গার সঙ্গে আমাদের রয়েছে এক আত্মিক যোগ। জন্ম থেকে মৃত্যু সবেতেই গঙ্গার পবিত্র জল আমাদের কাজে লাগে। যে কোনও শুভ কাজেই গঙ্গা জল প্রয়োজন। সেই গঙ্গাকে নিয়ে আজ ভাবার সময় এসেছে। গঙ্গা দূষণ রুখতে নেওয়া হয়েছে একাধিক প্রকল্প। কিন্তু এর বাইরেও সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাদের সকলেরই উচিত গঙ্গার পবিত্রতা রক্ষায় এগিয়ে আসা। আর সেই মহান কাজটাই করেছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি রাজস্থানের ভরতপুর রাজ পরিবারের সদস্য ও এক্সোটিক হেরিটেজ গ্রুপের চেয়ারম্যান রাজ সিং। গঙ্গাকে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান দেওয়ার জন্য তিনি এক অনবদ্য প্রয়াস নিয়েছেন। কলকাতায় গঙ্গাবক্ষে শুরু করলেন রয়্যাল ক্রুজ পরিষেবা।যে ক্রুজের নাম-‘অন্তরা গ্যাঞ্জেস ভয়েজার্স ২’।
গঙ্গা নিয়ে তিনি প্রকাশ করলেন তাঁর স্বচ্ছ ভাবনা
রাজ সিং মনে করেন- “গঙ্গা পরিষ্কার রাখা একটি সুন্দর এবং ধর্মীয় কাজ। আমাদের প্রবীণরা গঙ্গার পবিত্রতা রক্ষা করেছিলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ গঙ্গাকে পরিষ্কার রাখতে যে শ্রদ্ধা রাখা দরকার সেদিকে কোনও যত্ন নেওয়া হয় না।”এখানেই থেমে থাকেননি এই রাজস্থানী বিশিষ্ট শিল্পপতি ও প্রকৃতিপ্রেমী। শিল্পপতি ছাড়াও তাঁর আরও একটি বড় পরিচয় আছে। রাজ সিং একজন বিশিষ্ট পক্ষিবিদ, রয়্যাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির সহযোগী এবং গবেষক বিশ্ব ভ্রমণকারী। তাঁর জীবনের প্রথম আবেগ বন্যজীবন সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক ইতিহাস সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানটি সাফল্যহীন। ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং রান্নার প্রতিও আছে তাঁর আকর্ষণ। কাজেই গঙ্গা নিয়ে তাঁর চিন্তাভাবনা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
“গঙ্গাকে পরিষ্কার রাখতে আধ্যাত্মিক পরিশোধন জরুরি, গঙ্গাকে কেবল নিজের মনকে শুদ্ধ করেই পরিষ্কার করা যায়। গঙ্গা শব্দের নিছক উচ্চারণই পবিত্রতার অনুভূতি এনে দেয়, তবে এটি কেবল আমাদের সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের সাথে যুক্ত একটি নদী নয়। যদিও বলা হয় যে গঙ্গায় ডুব দিলে প্রায় সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়, তবে ময়লা এবং ময়লা গঙ্গায় এমনটা করা কি ন্যায়সঙ্গত? তাই, গঙ্গা বিশুদ্ধকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।” বলেন রাজ সিং।
গঙ্গাকে ঘিরে রাজ সিং নিয়েছেন একাধিক উদ্যোগ
পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গাবক্ষে যাত্রা স্মরণীয় করে রাখার জন্য, গঙ্গার পবিত্রতা, গুণ এবং মহিমা প্রদর্শন করতে এবং গঙ্গাকে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান দেওয়ার জন্য দশ বছর আগে কলকাতা থেকে বারাণসী রয়্যাল ক্রুজ পরিষেবা শুরু করেছিলেন। এর আগেও তিনি কলকাতা থেকে বারাণসী এবং ঢাকায় গঙ্গায় ক্রুজ পরিষেবা শুরু করেন। পর্যটন দৃষ্টিকোণ থেকে এটিতে অনেকগুলি সম্ভাবনা দেখা যায়। তাঁর ক্রুজটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, সাইলেন্সার, নর্দমা ব্যবস্থা সহ সজ্জিত, যা গঙ্গাকে দূষণমুক্ত রাখে এবং তা শব্দহীন।
ক্রুজ পরিষেবা নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন
সম্প্রতি কলকাতায় গঙ্গাবক্ষে ক্রুজ পরিষেবা নিয়ে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে ভারত সরকারের পর্যটন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক রুপিন্দর ব্রার, রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগমের কলকাতার অফিসার ইনচার্জ হিঙ্গলজ দন রতনু, রাজস্থানী শিল্পপতি সঞ্জয় বার্ডিয়াসহ পর্যটন ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত নেহা চ্যাটার্জী খান, সুমনা পলও উপস্থিত ছিলেন। রাজস্থানী শিল্পপতি রাজ সিং আরও জানান যে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ক্রুজ পরিষেবাটি 2019 সালের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। উভয় দেশের জন্য প্রথমবারের মতো জলপথ চালু হয়।
এক নজরে ‘গ্যাঞ্জেস ভয়েজার্স ২’
- ক্রুজটি আয়তনে 56 মিটার দীর্ঘ।
- মোট তিন তলার এই ক্রুজটি।
- একেবারে গ্রাউন্ড ফ্লোরে আছে মোট 28টি সুইট। যার মধ্যে পাঁচটি আছে প্রিমিয়াম সুইট। আয়ত্নে ঘরগুলি 12.5 মিটার।
- দ্বিতলে আছে মোট 10টি সুইট।
- আছে একটি সুদৃশ্য রেস্টুরেন্ট যেখানে 60জনের একসঙ্গে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
- একেবারে উপর তলায় আছে 18টি সুইট।
- আছে স্মোকিং জোন, সান ডেক, ক্যাপ্টেন রুম, লাউঞ্জ ও বার।
- আছে সুটি স্পা রুম এবং একটি মিনি জিম।
এই সব ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে ক্রুজ
জানা গেল, মূলত এখন কলকাতা এবং রাজ্যের আধ্যাত্মিক স্থানগুলি দর্শনের জন্য এই ক্রুজ পরিষেবা চালু করা হয়েছে। এছাড়াও বিবাহ কিংবা যে কোনও ধরনের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই ক্রুজ ভাড়া নেওয়া যেতে পারে। তবে ক্রুজ বড়দিন, নিউ ইয়ার এই সব দিনগুলিতে বিশেষ ট্রিপ দিয়ে থাকে। বর্তমানে এই ক্রুজ সুন্দরবন ট্রিপ করতে পারে। এখন ‘গ্যাঞ্জেস ভয়েজার্স ২’ চালু হয়েছে। এরপর আসবে ‘গ্যাঞ্জেস ভয়েজার্স ১’ এবং পরে আসবে ‘বেঙ্গল গঙ্গা ক্রুজ’। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন-https://www.antaracruises.com
Published on: ডিসে ৮, ২০২০ @ ১৮:৪০