SAFE WILDLIFE: লকডাউনে এবার কাজাখের শহরের কাছে দেখা গেল বিরল তুষার চিতাকে

Main কোভিড-১৯ দেশ বন্যপ্রাণ বিদেশ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গোটা বিশ্ব। মানুষের পাশাপাশি এখন বন্য জীবজন্তুও নিরাপদ নয়। তাদের বিষয়েও নজর রাখা শুরু হয়েছে। সারা বিশ্বে এরকম একাধিক ন্যাশনাল পার্ক ও বন্য এলাকা আছে। যেখানে রয়েছে নানা প্রজাতির জীবজন্তু। এই সময়ে তারা কেমন আছে। সেই খবর আমরা বিভিন্ন সূত্র ধরে জানার চেষ্টা করেছি। সংবাদ প্রভাকর টাইমস ‘সেফ ওয়াইল্ডলাইফ’ শিরোণামে এক ধারাবাহিক প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে। আজ পঞ্চম পর্ব।

Published on: মে ২৫, ২০২০ @ ১৮:৩০ 

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, ২৫ মে:  এর আগেও আমরা দেখেছি কখনও আফ্রিকা, কখনও ভারত আবার কখনও ইউরোপের কোনও দেশে বন্যপ্রাণী জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছে। লকডাউনে মানুষ ঘরবন্দি হলেও বন্যপ্রাণীদের জীবনে নেমে এসেছে মুক্ত প্রাণের হাওয়া। তারা স্বেচ্ছায় বেরিয়ে পড়ছে। তেমনই এক মা ও তার বাচ্চা সহ বেশ কয়েকটি তুষার চিতাবাঘকে কাজাখের শহর আলমাটির কাছে এক জনপ্রিয় পর্বতারোহনের গন্তব্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেল। ট্র্যাপিং ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই বিরল দৃশ্য। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। সংবাদ সংস্থা রয়টার এই বিরল দৃশ্য ও তার সংবাদ তুলে ধরেছে আমাদের সামনে।

সংবাদ প্রভাকর টাইমস এর আগে পাঁচটি এমন সংবাদ পরিবেশন করেছে। আমরা আমাদের পাঠকদের এমন ধরনের সংবাদ পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।আমরা চাই লকডাউন নিয়ে সাদামাটা খবর পরিবেশন করে মানুষের বিরক্তি সঞ্চার না করতে। লকডাউনে বন্যপ্রাণ কি অবস্থায় আছে তারা কি করছে সেইসব সংবাদ আমরা দিতে চাই পাঠকের কাছে। তাই আমরা বিশ্বের নানা প্রান্তে জনপ্রিয় সব সংবাদ সংস্থা সংবাদ মাধ্যমের সূত্র ধরে আমাদের পাঠকের কাছে সেই সমস্ত সংবাদ সংগ্রহ করে আমাদের মতো করে তাতে আরও অতিরিক্ত কিছু তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে সংবাদটিকে সমৃদ্ধ করে তুলতে।

ট্র্যাপিং ক্যামেরা সেট করে জানা গেল তুষার চিতার অস্তিত্ব

বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের কাছে খবর ছিল যে কাজাখের শহর আলমাটির বিগ আলমাটি লেকের কাছে তিনটি তুষার চিতাবাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের অস্তিত্ব জানা এবং প্রমাণ সংগ্রহের জন্য একটি এনজিও লেকের ধারে একটি ট্র্যাপিং ক্যামেরা সেট করে। সেই ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে একটি পুরুষ তুষার চিতাবাঘ, একটি মা ও তার শাবককেঈই ছবি ধরা পড়ার পরই বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের মনে আশার সঞ্চার হয়। কারণ, এখন, এই ধরনের তুষার চিতাবাঘের দেখা পাওয়া খুবই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এদের সংখ্যা সেই অর্থে তেমন একটা বাড়ছে না। তাই এই ধরনের বন্যপ্রাণ বিরল বলেই মনে করা হয়।

প্রাণিবিদ অ্যালেক্সি গ্রেচিয়েভ যা বলেছেন

  • স্নো লিপার্ড ফাউন্ডেশনের সাথে কাজ করা প্রাণিবিদ অ্যালেক্সি গ্রেচিয়েভ বলছিলেন যে আলমাটির নিকটবর্তী পর্বতমালায় প্রায় 20টির মতো প্রাণী রয়েছে, যার ফলে এদের দর্শন অত্যন্ত বিরল হয়ে পড়েছে। তুষার চিতাটির গায়ে ধূসর বা সাদা পশম রয়েছে। আছে কালো দাগ এবং ঝোপযুক্ত লেজযুক্ত এবং এরা মূলতঃ রাশিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, নেপাল, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান, ভারতের পার্বত্য অঞ্চলগুলি সহ বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বিচরণ করে থাকে।
  • গ্র্যাচিওভ আরও বলছিলেন যে আমাদের একটি সাধারণ ভ্রান্ত ধারণা হ’ল তুষার চিতা কেবল উচ্চ পার্বত্য এলাকায় বাস করে, যখন বাস্তবে তারা মানুষের কাছাকাছি বাস করে বেশিরভাগ মানুষ তা বুঝতে পারে।
  • “এটি একটি অনন্য জনসংখ্যা যা মানুষের উপস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। প্রতিটি তুষার চিতা সম্ভবত মানুষ দেখে, গাড়ি দেখে, শহরকে প্রতিদিন দেখে। এটি তার আবাসস্থলের অচলাবস্থাকে দেখে।”
  • ফাউন্ডেশনের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হ’ল স্নো চিতা জনগোষ্ঠীর বংশবৃদ্ধি করা এবং বন্যের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে তুষার চিতাবাঘের জনসংখ্যাকে পুনর্নির্মাণ করা।

ভারতে তুষার চিতাবাঘ

ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে ধারণা করা যেতে পারে যে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ এবং সিকিম জুড়ে প্রায় 400 থেকে 700 তুষার চিতা রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে এই তুষার চিতা হ’ল শীর্ষ শিকারি, এইভাবে তাদের বাস্তুতন্ত্রের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিকার করা তাদের জন্য এখন একটি বড় হুমকি।

‘প্রজেক্ট স্নো লেপার্ড’-পরিবেশ মন্ত্রকের একটি উদ্যোগ। অংশীদারিত্বমূলক নীতি এবং কর্মের মাধ্যমে সংরক্ষণ প্রচার করে ভারতের উচ্চতর বন্যপ্রাণী জনগোষ্ঠী এবং তাদের আবাসস্থলগুলির অনন্য প্রাকৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করা এবং সংরক্ষণ করাই হল এর মূল লক্ষ্য।

মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার তুষার চিতাগুলিকে সনাক্ত করা কঠিন

মূলত মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী তুষার চিতাগুলিকে সনাক্ত করা অত্যন্ত কঠিন, যা তাদের জনসংখ্যাকে সঠিকভাবে অনুমান করা আরও শক্ত করে তোলে। বিশ্বব্যাপী, 2% এরও কম তুষার চিতার আবাস তাদের জনসংখ্যার মূল্যায়ন করার জন্য নমুনা তৈরি করা হয়েছে।মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে বিশ্বব্যাপী ১০,০০০ এরও কম জনসংখ্যার মধ্যে কাজাখস্তানে প্রায় দেড়শো তুষার চিতা রয়েছে, যা কেবল শহরের সীমাতেই থাকে।

তুষার চিতাবাঘ বা “প্যান্থেরা উন্সিয়া”

“প্যান্থেরা উন্সিয়া” যা পূর্বে “উন্সিয়া উন্সিয়া” নামে পরিচিত ছিলো। ১৮৫৪ সালে বিজ্ঞানী গ্রে উন্সিয়া এটির নামকরণ করেন। তারপর থেকে এটি “উন্সিয়া উন্সিয়া” নামেই পরিচিত ছিল। এমন কি কিছুদিন আগ পর্যন্ত এর নাম ছিল “উন্সিয়া উন্সিয়া”। কিন্তু আধুনিক জিন গবেষণায় একে প্যান্থেরা গনের অধীনে রাখা হয়। আর 2008 সাল থেকে এর বৈজ্ঞানিক নাম হয় “প্যান্থেরা উন্সিয়া” জেনেটিক রিসার্চ এ দেখা যায়, অন্যান্য বড় বিড়াল এর তুলনায় বাঘ এর সাথে এদের সবচেয়ে বেশি জিনঘটিত মিল রয়েছে। আর একে বাঘের “সিস্টার স্পেসিসেস” বলা হয়।
প্যান্থেরা গনের বাকি প্রজাতি গুলো বাঘ,সিংহ, জাগুয়ার, চিতাবাঘ এর তুলনায় আকারে ছোট। স্নো লেপার্ড এর ওজন 25-60 কেজি পর্যন্ত হয়। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুদের ওজন 75 কেজি পর্যন্ত হয়। তবে কমবয়সী স্ত্রীদের ওজন 25 কেজিরও কম হতে পারে! এদের দেহের দৈর্ঘ্য 75-150 সে.মি. আর লেজের দৈর্ঘ্য 80-100 সে.মি.হয়। এদের দেহ আন্দাজে লেজ বড় হয়।সূত্র ও ছবিঃ  রয়টার্স

Published on: মে ২৫, ২০২০ @ ১৮:৩০


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

70 − = 63