সমবেত লোকনাথ ভক্তদের হর্ষোধ্বনিতে বাবার মহানাম প্রচারকের মাথায় উঠল ‘রাজ মুকুট’
Published on: জানু ১২, ২০২৫ at ০১:৩০
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, শিমুরালি (নদিয়া), ১২ জানুয়ারি: আজ থেকে তিরিশ বছর আগে বাবা লোকনাথের নাম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ভক্তদের মাঝে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই ত্রিকালদর্শী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারীর নাম সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া আর সমস্ত প্রান্তে বাবার একটা করে মন্দির গড়ে তোলার সাহায্য করা। সেই সঙ্গে বাবার জন্মসাথন চাকলা ধামকে বিশ্বের দরবারে পরিচিতি ঘটানো আর ভক্তদের চাকলাধামমুখি করা। এই সমস্ত কাজে আজ সফল হয়েছেন চাকলা ধামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং বাবার মহানাম প্রচারক নবকুমার দাস। অসুস্থ শরীরেও তিনি এই কাজ থেকে বিরত হননি। আজ তার এই মহান কাজকে সম্মান জানাতে শিমুরালি ব্রহ্মচারী লোকনাথ বাবার আশ্রম থেকে ‘রাজ মুকুট’ পরিয়ে বাবার মহানাম প্রচারক যোগ্য ভক্তকে এক অভূতপূর্ব সম্মান প্রদান করা হল।
এদিন এই সম্মান প্রদানের আগে শিমুরালি লোকনাথ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা মধু বাবা ‘রাজ মুকুট’ হাতে নিয়ে বলেন- “আগেকার দিনে মহারাজরা পরতো এটা। আর এখন পরে বাবা লোকনাথ। যিনি অসুস্থ। কথা বলতে পারছেন না। কাশছেন। ডাক্তার বলছেন আপনি কথা বলবেন না। আর দু’হাত গাড়ির মধ্যে রেখে কাঁদতে কাঁদতে চললেন বাবা লোকনাথের মহানাম প্রচা্র করতে। আজ যেসব লোকনাথ সংগঠন এসছে তাদের অনুরোধ করব সকলে মিলে আর সাধুবাবারা সকলে মিলে আমাদের শ্রদ্ধেয় দাদা নবকুমার দাসকে এই মুকুট পরাবে। যত সংগঠন এসছে সবাই দাঁড়িয়ে থেকে এটা নবদাকে পরিয়ে একটা ছবি তুলে রাখতে চাই যেদিন আমরা থাকব না এই ছবিটা বাঁধানো থাকবে , আর তা সকলে দেখবে। এই মহারাজ অর্থাৎ বাবা লোকনাথ যাকে এই মহারাজের দায়িত্ব দিয়েছে যিনি বিশ্বব্যাপী বাবার মহানাম প্রচার করে চলেছেন তাকে এই মুকুট পরানো হচ্ছে। এটি বাবা লোকনাথ ব্যবহার করতেন। সেই বাবা লোকনাথের মুকুট আজ সকলের সামনে আমাদের নবকুমার দাস মহাশয়ের মাথায় তুলে দিতে চাই। আর সাক্ষীও থাকতে চাই। আজ যত মহারাজ এসছেন এবং যত মা-বোনেরা এসেছেন , যত মন্দির কমিটি থেকে এসেছেন , আমি আশা রাখি আমার কথার কেউ বিপক্ষে যাবেন না। যে আমরা নবদার পক্ষে নেই। তাই নবদাকে বাবা লোকনাথের যোগ্য সন্তান বাবা লোকনাথের উত্তরসূরী হিসাবে এই মুকুট পরিয়ে সম্বর্ধিত করতে চাই।“ এর পরই উপস্থিত ভক্তদের থেকে সমবেত কণ্ঠে হর্ষধ্বনি ওঠে- জয় বাবা লোকনাথের জয়। জয় চাকলাধামের জয়।
মধু বাবার মুখ থেকে এত কথা শোনার পর মঞ্চে এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নবকুমার দাস ধীরে ধীরে এগিয়ে আসেন সামনে মাইকের দিকে। মাইকটিকে কাছে টেনে নিয়ে বলে ওঠেন- “এত বড় কথা বললেন মধু বাবা!”
এরপর নবকুমার দাস বলেন- “আজ যে মুকুটটা পেলাম এই মন্দির থেকে সেই সম্মানটা লোকনাথ বাবার চরনে দিয়ে গেলাম। এই মুকুট বাবার চরণে না দিলে অন্যায় হবে। “
তার কথা শুনে উপস্থিত ভক্তদের থেকে চিৎকার করে বলে ওঠেন- এটা আপনার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রেখে দেবেন।“
কিন্তু নবকুমার দাস প্রতুত্তরে বলে ওঠেন- “আমি এখন এটা বাবার চরনে রেখে দেব। তারপর একটা মুকুট কিনে বাবার চরণে রেখে এই মুকুট সেদিন নিয়ে যাব। আমি মধুদাকে দায়িত্ব দিলাম এই মুকুট বাবার চরণে থাকবে। “
এ কথা শুনে আর এক লোকনাথ ভক্ত সুস্মিতা চক্রবর্তী শ্রোতাদের মাঝে দাঁড়িয়েই বলেন- “আজ এটা বাবা চেয়েছে। তাই মধু বাবার উপর বিরাজ করে এই সম্মানটা উনি পেলেন। এটা আপনার বাড়ি নিয়ে যাওয়াই উচিত।“
এরপর মাইক হাতে তুলে নিয়ে সমস্ত ভক্তদের উদ্দেশ্য করে জানতে চান মহানির্বাণ মঠের শঙ্কর মহারাজ- “তাহলে সবাই কি বলছেন- জোরে হাত তুলে বলুন হ্যাঁ অথবা না। মুকুটটা কার জন্য? জবাবে ভক্তদের সকলেই বলেন – “মুকুট নবদার জন্য।“
তাই সকলে মিলে যখন দিচ্ছে তখন এটা গ্রহণ করাই উচিত। ভক্তের বোঝা ভগবান বয়ে নিয়ে যায়। বাবা লোকনাথ আপনার এই মুকুট বয়ে নিয়ে এসছে। এখন আপনার যদি ইচ্ছা হয় তাহলে বাবাকে সুন্দর করে সাজান। “
বাসুদেব বাবা বলেন- “নবকুমার দাস যে বাবার চারিদিকে নাম প্রচার করে বেরাচ্ছে তাকে আজ মধুদা যে সম্মান দিলেন আসলে লোকনাথ বাবাই তার মাধ্যমে এটা করালেন। সত্যি এটা যে তিনি আজ সম্মানিত হয়েছেন। তার নামটাও যেমন নবকুমার মানে নতুন ভাবে উৎপত্তি হচ্ছে সেই নতুনভাবে আবার যাতে তিনি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন এবং সমস্ত মন্দিরকে যাতে ভক্তদের কাছে পরিচিত করাতে পারেন জাগ্রত করতে পারেন যে সনাতনীরা জাগো , তোমাদের সময় হয়েছে জাগো – যার উদ্দেশ্যে বলছি এই নবকুমার দাস নতুন ভাবে যে সাজল এটাই যাতে বাবার বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে তিনি সাজতে পারেন, এই কামনাই করছি।“
গঙ্গাসাগরের সাধু স্বামী চন্দ্রেশেখরানন্দ বলেন- “বিশ্বের কোনায় কোনায় বাবা লোকনাথের নাম প্রচার করার জন্য নবকুমার দাস এক মহান দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। সুদূর আমেরিকা থেকে শুরু করে বাংলাদেশ অনেক দেশে মূর্তি পৌঁছে গিয়েছে। আমাদের চিন্তাভাবনা আছে যে আগামিদিনে প্রতিটা ঘরে প্রতিটা দোকানে প্রতিটা ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানে যেন বাবা লোকনাথের মূর্তি পৌঁছে যায়। আজ চাকলায় যাওয়ার মূলে কিন্তু এই বাবা। আজকে যে অনুষ্ঠানে এসেছি এই অনুষ্ঠানের দায়িত্বে কিন্তু ইনি। আমরা সকলেই চাই ওনার আরও শ্রীবৃদ্ধি হোক। বাবা লোকনাথের মহানাম প্রচার আরও জোরদার হোক।“
Published on: জানু ১২, ২০২৫ at ০১:৩০