
“হোমস্টে-র যে পাবলিসিটি এবং তাদের যে রেজিস্ট্রেশন সেই ব্যাপারে আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন”- অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, ভারত পর্যটন
“এদিন যে স্কুল থেকে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা পারফরম্যান্স করতে এসেছে সেই স্ক্লকে আমাদের কমিটি একটি ঠান্ডা জলের মেশিন উপহার দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে”- সমর ঘোষ, প্রধান উপদেষ্টা, এটিএসপিবি
Published on: মার্চ ১২, ২০২৫ at ২৩:৩২
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১২ মার্চ : “রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে-“
কবিগুরুর লেখা এই গানের কথাগুলি যেন আজ কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্যুরিজম সার্ভিস প্রোভাইডার্স অফ বেঙ্গল (এটিএসপিবি) –র বসন্ত উৎসবে এক প্রাণবন্ত চেহারায় ফিরে এল নানাভাবে নানারঙে নানা মুহূর্তে।
একদিন বাদেই দোল উৎসব। সেই উপলক্ষে প্রাক দোল উৎসবকে ঘিরে কলকাতা প্রেস ক্লাবে ১২ মার্চ, ২০২৫ এক জমকালো উৎসব উদযাপন করল এটিএসপিবি। যেখানে তারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই করেনি, সমাজসেবামূলক কাজের মহান উদ্যোগের কথাও বলেছেন, যা উপস্থিত প্রতিটি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে বিদেশ পর্যটকরা যেমন ছিলেন তেমনই হাজির হয়েছিলেন প্রধান অতিথি হিসাবে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের পূর্ব ভারতের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জ্যোতির্ময় বিশ্বাস, ছত্তিশগড় পর্যটনের কলকাতার আধিকারিক চিন্ময় দাশগুপ্ত।
এদিন বসন্ত উৎসবে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকটি হোমস্টে মালিকদের উদ্দেশ্যে ভারতীয় পর্যটন মন্ত্রকের পূর্ব ভারতের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন- “হোমস্টে-র যে পাবলিসিটি এবং তাদের যে রেজিস্ট্রেশন সেই ব্যাপারে আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন। কিভাবে সেটাকে আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় যাতে হোমস্টে-র শ্রীবৃদ্ধি ঘটে সেই ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য আপনারা আমাদের অফিসে আসবেন আমরা সেই ব্যাপারে কথা বলব। আর আপনাদের এই অনুষ্ঠানের সার্বিক মঙ্গল কামনা করি। এটা আপনাদের অর্গানাইজেশন ভবিষ্যতে আরও ভাল্ভাবে বসন্ত উৎসব পালন করতে পারে , আরও বেশি করে বাংলা তথা ভারতের সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারে সেই কামনা করি। ‘
ছত্তিশগড় ট্যুরিজমের কলকাতার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক চিন্ময় দাশগুপ্ত বক্তব্যের মধ্যে না ঢুকে এটিএসপিবি-র সভাপতি সাগর গুহ, যুগ্ম সম্পাদক স্বরূপ ভট্টাচার্য ও তারক সাহাক এবং সমর ঘোষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এই অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করেন।
এটিএসপি বি-র সভাপতি সাগর গুহ বলেন- “আমরা এই বসন্ত উৎসব উদযাপন করছি বসন্তের আগমনে। এই উৎসবে গান ও নাচের মাধ্যমে বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। শান্তিনিকেতনের সুন্দর ঐতিহ্যকে এই উৎসবের মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে। আমরা বসন্ত উৎসবে সবাইকে স্বাগত জানাই। আমরা প্রতি বছর এই উৎসব উদযাপন করি। আমরা চাই আপনারা এই উৎসবে যোগ দিন এবং এই রঙের উৎসবে মেতে উঠুন। “
এটিএসপিবি-র প্রধান উপদেষ্টা সমর ঘোষ এই উৎসবের মঞ্চ থেকে দারুন একটা ঘোষণা করেন, যা গোটা উৎসবকে সত্যি এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। তিনি বলেন- “এখানে এদিন যে স্কুল থেকে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা পারফরম্যান্স করতে এসেছে সেই স্ক্লকে আমাদের কমিটি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের আমরা একটী ঠান্ডা জলের মেশিন উপহার দেব। খুব শীঘ্রই কমিটির সদস্যরা ওখানে গিয়ে আলোচনা করে ঐ মেশিনটিকে ইনস্টল করে দিয়ে আসবেন।“
যুগ্ম সম্পাদক স্বরূপ ভট্টাচার্য বক্তব্যের বহর না বাড়িয়ে অনুষ্ঠান শুরু করার কথা ঘোষণা করেন। প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠান্বের সূচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয়ে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের গান ও নাচের মাধ্যমে। তবে রাধা-কৃষ্ণের দোল উৎসবের গানের ডালি নিয়ে সাজানো একসাধারণ এক নাচের কোলাজ উপস্থাপন করে নৃতাঙ্গন ড্রিম ড্যান্স অ্যাকাডেমি-র ছাত্রীরা। অনুষ্ঠান মঞ্চে তাদের শিক্ষিকাকে সম্বর্ধিত করা হয়।
তবে একেবারের শেষে অবুষ্ঠানকে জমিয়ে দেয় বাংলার বিখ্যাত বাংলা সঙ্গীতের ব্যান্ড ‘দোহার’’। বাংলার নানা ধরনের লোকগীতি দিয়ে তারা তাদের গানের দালি সাজিয়ে তা উপস্থাপন করেন নিজেদের মতো করে। যা উপস্থিত সকল দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। যার মধ্যে ছিল- “টাক ডুম টাক ডুম বাজাই…”, “বন্ধু বিনে, প্রাণ বাঁচে না”।
এদিনের অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য যুগ্ম সম্পাদক স্বরূপ ভট্টচার্য ও তারক সাহার নেতৃত্বে এটিএসপিবি-র গোটা টিমকে অভিনন্দন জানান সভাপতি সাগর গুহ। তবে সবার উপরে অ্যাসোসিয়েশনের প্রবীণ সদস্য সমর ঘোষের প্রতিও জানান শ্রদ্ধাপূর্বক সম্মান।
অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্যুরিজম সার্ভিস প্রোভাইডার্স অফ বেঙ্গল-এর উদ্যোগে ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে শীতকালীন পর্যটন মেলা। যার নাম তারা দিয়েছে বেঙ্গল ট্যুরিজম ফেস্ট বা বিটিএফ। এবার আগামী জুন মাসে তারা আয়োজন করতে চলেছে গ্রীষ্মকালীন পর্যটন মেলার। ইতিমধ্যে তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তারা।
তাই তো আবার সেই কবিগুরুর লাইন দিয়েই শেষ করতে হয়-
রঙ যেন মোর মর্মে লাগে, আমার সকল কর্মে লাগে, / সন্ধ্যাদীপের আগায় লাগে, গভীর রাতের জাগায় লাগে।।“
Published on: মার্চ ১২, ২০২৫ at ২৩:৩২