বিশ্ববাসীর চোখে ধুলো দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু পাকিস্তানের , সংবাদমাধ্যমকে নিয়ে যাবে জৈশ-এর সদর কার্যালয়ে

দেশ বিদেশ
শেয়ার করুন

Published on: ফেব্রু ২৩, ২০১৯ @ ১৮:৫৪

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ এরই নাম পাকিস্তান। দোষ করে যাবে। জঙ্গিদের সমানে মদত করে যাবে। তবু কিছুতেই স্বীকার করবে না সেকথা। পুলওয়ামার হামলার পর পাকিস্তানের ছত্রছায়ায় থাকা সেদেশ থেকে সমস্ত সুবিধা নেওয়া সেদেশে ঘঁটি গেড়ে বসে থাকা সুবিশাল অট্টালিকায় ঘেরা স্থানে জঙ্গি কাজকর্ম করে চলা জৈশ-ই-মহম্মদ যারা ঘটনার দায় নিজেরাই স্বীকার করে নিয়েছে। আর পাকিস্তান সমানে বলে চলেছে না এমনটা হয়নি। পাকিস্তান এমন কাউকে মদত করে না। এখন তারা এক নয়া নাটক ফেদেছে। যেখানে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাহওয়ালপুরে জৈশ-ই-মহম্মদের সদর কার্যালয় আছে পাকিস্তান এখন সেটিকে মাদ্রসা মসজিদ বলে চালানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ ব্যাপারে তারা এতটাই এগিয়ে গেছে যে বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমকে সেখানে নিয়ে গিয়ে দেখাতে চায় সেখানে কোনও জঙ্গি কার্যকলাপই হয় না। বরং সেখানে মাদ্রাসার ছাত্রদের পড়াশুনো করানো হয়।

পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানে জঙ্গিদের ঠিকানা এটা প্রচার হওয়ার পর থেকেই তীব্র আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছে, সেদেশের সরকার বিশ্বের খারাপ নজর থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে নয়া কৌশল নিয়েছে। পাকবাহিনী শুক্রবার বাহওয়ালপুরে জৈশ-ই-মহম্মদ সদর দফতরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পাকিস্তানি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী চৌধুরী ফাওয়াদ হোসেন বলেন পাঞ্জাব প্রদেশের সরকার বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চৌধুরী বলেছেন, যে মাদ্রাসাকে জৈশ-ই-মহম্মদের আশ্রয়স্থল বলা হচ্ছে সরকার সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের শনিবার সেখানে নিয়ে গিয়ে তা নিশ্চিত করে দেখাবে। সেখানে জঙ্গি কার্যকলাপ নয় সেখানে দাতব্য কাজকর্ম করা হয়ে থাকে।

পাকিস্তানি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী চৌধুরী ফাওয়াদ হোসেন শনিবারের এক ভিডিও বার্তায় বলেন যে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যানের অধীনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেই কর্মসূচীর অঙ্গ হিসেবে পাঞ্জাব প্রদেশের বাহওয়ালপুরের একটি মসজিদের নিয়ন্ত্রণ প্রশাসন নিয়েছে ইতিমধ্যে। তিনি বলেন, এটি একটি মসজিদ যা ভারত দাবি করছে সেটি আসলে জৈশ-ই-মহম্মদের সদর দফতর। শনিবার, পাঞ্জাব সরকার এই মাদ্রাসায় সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের নিয়ে যাবে যাতে তারা বুঝতে পারবে যে এখানে ৭০০ ছাত্রদের মাদ্রাসার শিক্ষদানের পাশাপাশি দাতব্য কাজকর্ম হয়ে থাকে।

ফাওয়াদ হোসেন বলেন, আমরা জানাতে চাই যে জৈশ-এর সদর দফতর বলে যা বলা হচ্ছে আসলে সেটা একটা মাদ্রসা আর কাশ্মীরের পুলওয়ামার হামলার সাথে সেই মাদ্রাসার কর্মকাণ্ডের কোনও যোগসাজশ নেই। ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যানে আমাদের নিজস্ব নীতি আছে যা সব পক্ষের দ্বারা সমর্থিত এবং আমরা এটি অনুসরণ করে চলেছি।”

পাকিস্তান সরকার শুক্রবার দাবি করেছিল যে বাহওয়ালপুরের জৈশ-ই-মহম্মদের ক্যাম্পাসটি তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।এই সিদ্ধান্ত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের শেষে গৃহীত হয়। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র দফতর এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে গিয়ে বলেন, যে পাঞ্জাব সরকার বাহওয়ালপুরের মাদ্রাসা-তুল-শাবির ও জামা মসজিদ সুহয়ানআল্লার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। বলা হয়ে থাকে এইভবনগুলি কিন্তু জৈশ-ই-মহম্মদ নিজেদের সদর দফতর হিসেবেই ব্যবহার ব্যবহার করে থাকে। যাতে সকলের নজরে এগুলি মাদ্রাসা, মসজিদ হিসেবেই থাকে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ের এক আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা চালানো হয়, যেখানে ৪০ জওয়ান শহীদ হন। হামলার পরপরই পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করে। জৈশ-ই-মহম্মদ গড়ে তোলে কুখ্যাত জঙ্গি মাওলানা মাসুদ আজহার এবং এটি্র সদর সদর পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাহওয়ালপুরে অবস্থিত।

বৃহস্পতিবার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অবৈধ ঘোষিত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দ্রুততার সঙ্গে করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই বৈঠকে মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সাঈদের জামাত-উদ-দাওয়া এবং তার দাতব্য প্রতিষ্ঠান ফলহে-এ-ইনসানিয়তকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের মতে, জামাত-উদ-দাওয়ার পরিচালনায় ৩০০টি মাদ্রাসা, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল রয়েছে।

Published on: ফেব্রু ২৩, ২০১৯ @ ১৮:৫৪


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 + = 15