Published on: সেপ্টে ২৩, ২০১৮ @ ১৫:০২
এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ সত্যি গাধাটির দিকে ইদানীং তাকানো যেত না। জীবনসঙ্গিনীকে হারিয়ে সে একেবারে মনমরা হয়ে পড়েছিল।সামনে কাউকে দেখলেই গুঁতোতে যেত। ক্রমেই অশান্ত হয়ে উঠছিল। স্ত্রীকে হারিয়ে কারও কি মাথার ঠিক থাকে, বলুন! তাও আবার এক চিতার আক্রমণে যেভাবে বউটাকে অকালে মরতে হল সে ব্যাথা বড়ই দাগা দিয়ে যাচ্ছিল গাধাটিকে। তাই গাধাটিকে শান্ত করতে গ্রামবাসীরাই দূরের গ্রাম থেকে আর এক জীবনসঙ্গিনী খুঁজে এনে তার সঙ্গে ঘটা করে বিয়ে দিয়ে দিল। এবার গাধাটি শান্ত হয়েছে।দক্ষিণ ভারতের মাইসোরের হুরা গ্রামে এই কাহিনি রীতিমতো বিখ্যাত হয়ে গেছে।
গ্রামবাসীদের এজন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। গাধাটির বিয়ের জন্য স্ত্রীর খোঁজে কম দৌড়াদৌড়ি করতে হয়নি। সদ্য স্ত্রী হারানো গাধা। তাকে তো যেমন-তেমন পাত্রী দেওয়া যায় না।সুন্দরী না হলেও সুশ্রী তো হতেই হবে। যে স্ত্রী হারা গাধাটিকে ভালবেসে কাছে টেনে নেবে। আপন করে নেবে। খুঁজতে খুঁজতে তারা অবশ্য তেমনই এক জীবনসঙ্গিনীর খোঁজ পান।
হুরা গ্রাম থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে চামারাজানগর জেলায়। নিয়ে আসা হয় নবযৌবনা জীবনসঙ্গিনীকে। প্রথম যেদিন গাধাটি তাকে দেখে সেদিনই সে তার প্রেমে পড়ে যায়। তার গা ঘেঁষে থাকা শুরু করে। কাউকে আর গুঁতোই নি। গ্রামবাসীরা বুঝতে পারে- যাক তাহলে গাধা তাহলে এবার শান্ত হল। এবার তাহলে এর সঙ্গেই গাধাটির বিয়ে দেওয়া হোক। সকলেই একমত হন।
আয়োজন করা হয় বিয়ের। এর আগে জানিয়ে রাখা ভাল যে স্ত্রী গাধাটিকে কিনে আনার জন্য গ্রামবাসীরা ২০ হাজার টাকা যোগাড়ও করে ফেলেছিলেন। সেই টাকা নিয়েও গেছিলেন। কিন্তু সেখানকার মানুষজন এমন ঘটনার কথা শুনে জানিয়ে দেন তারা কোনও দাম নেবেন না। কাজেই সেই ২০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটা করে গাধার বিয়ের আয়োজন করা হয়।
সে আয়োজন বললে কম বলা হবে। এলাহী ব্যাপার। না দেখলে বিশ্বাস করাই কঠিন হবে। ছাদনাতলায় বর-কনে-কে নিয়ে আসা হয় বিয়ের সাজে। বর বেশে গাধা আর কনের বেশে তার জীবনসঙ্গিনী। নতুন জামা-কাপড়ে বেশ দেখাচ্ছিল দুটিকে। পুরোহিত ডেকে সিঁদুর, আতপচাল, ফুলের মালা, মঙ্গলসূত্র থেকে শুরু করে বিয়ের সমস্ত আচার মেনেই সম্পন্ন করা হল গাধার বিয়ে।
ছাদনাতলায় যখন গাধা তার জীবনসঙ্গিনীর সামনে দাঁড়িয়েছে তখন কিন্তু দু’জনের হেব্বি টেনশন। হাজার হোক দু’জনের দুটি পথ যে শেষে এক হতে চলেছে। একজন সদ্য বউ হারা। আর অপরজন আবার এসেছে দূর দেশ থেকে। একেবারে অচেনা-অজানা পরিবেশ। বরের চেয়ে আবার চার বছরের ছোট। অশান্ত গাধাকে সে কি পারবে মানিয়ে নিতে? মন দিয়ে ভালবাসতে? টেনশনে দু’জনের মুখ একেবারে ফিউজ। যাই হোক গ্রামবাসীদের সাহচর্যে অবশেষে দুটিতে ভরসা পেল। কাছাকাছি হল তারা। সাতপাকে বাঁধা পড়ল ওরা।
জানা গেছে, গত জুলাই মাসে চিতার হানায় প্রাণ হারায় গাধাটির সঙ্গিনী। তারপর থেকে অশান্ত হয়ে ওঠায় গ্রামবাসীরা গাধাটির তাই দ্বিতীয় বিয়ের ব্যবস্থা করে শান্ত করল।
Published on: সেপ্টে ২৩, ২০১৮ @ ১৫:০২