সংক্রমণ কমলেও সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাত্রী প্রবেশ স্থগিত করা ছয়টি দেশের তালিকায় ভারত কেন, প্রশ্ন টাফি’র চেয়ারম্যানের

কোভিড-১৯ দেশ বিদেশ বিমান ভ্রমণ
শেয়ার করুন

 Published on: আগ ৫, ২০২১ @ ১৮:৪১
Reporter:Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৫ আগস্ট: দেশে সামগ্রিকভাবে করোনা সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে অনেক কম। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায়। অথচ সংযুক্ত আরব আমিরাত মূলত ছয়টি দেশ- ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, নাইজেরিয়া ও উগান্ডা থেকে যাত্রী প্রবেশ স্থগিত করেছে। যদিও মঙ্গলবার ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ক্রাইসিস অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি আবার ঘোষণা করেছে যে যেসব দেশে তাদের দেশের বাসিন্দারা আটকে আছেন তারা কোভিড ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজের যথাযথ শংসাপত্র দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। আর এই ছাড় ওই ছয়টি দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আর এই তালিকায় ভারতকে ফেলে দেওয়ায় তীব্র আপত্তি জানিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টাফি’র চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি।

প্রশ্ন তুললেন টাফি’র চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি

ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি প্রশ্ন তোলেন- কোন যুক্তিতে কিসের ভিত্তিতে কোন নিয়মে ভারতকেও এই ছয়টি দেশের মধ্যে ফেলে দেওয়া হল? তারা কি এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একবার খতিয়ে দেখেছেন কি সারা ভারতে মোট জনসংখ্যার নিরিখে মোট সংক্রামিতের হার কত। সংখ্যার নিরিখে দেখলে মনে হবে অনেক। কিন্তু যেটা পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা কিংবা উগান্ডার ক্ষেত্রে বিশাল সেটা তো ভারতের ক্ষেত্রে খুবই কম। কারণ, আমাদের দেশের জংসংখ্যাও তো অনেক। সেই নিরিখে বিচার করলে শতকরা হার অনেক কম।

গত ৩৯ দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজারেরও নীচে

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজার ৯৮২। এর ফলে, গত ৩৯ দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজারেরও নীচে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি, রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সমন্বয়মূলক প্রয়াসের কারণেই এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে।ভারতে সুস্পষ্টভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আজ দাঁড়িয়েছে ৪ লক্ষ ১১ হাজার ৭৬, যা মোট আক্রান্তের কেবল ১.২৯ শতাংশ।দেশে নমুনা পরীক্ষার হার লাগাতার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ লক্ষ ৬৪ হাজার ৩০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৪৭ কোটি ৪৮ লক্ষ ৯৩ হাজার ৩৬৩।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ভারতে কোভিড পরিস্থিতির বর্তমান চিত্র

দেশব্যাপী টিকাকরণ অভিযানের আওতায় এখনও পর্যন্ত ৪৮ কোটি ৯৩ কোটি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে
দেশে এখনও পর্যন্ত সুস্থতার সংখ্যা ৩ কোটি ৯ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭৪৮
জাতীয় স্তরে সুস্থতার হার বর্তমানে ৯৭.৩৭ শতাংশ
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ হাজার ৭২৬ জন করোনামুক্ত হয়েছেন
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজার ৯৮২
ভারতে সুস্পষ্টভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ৪ লক্ষ ১১ হাজার ৭৬
দেশে মোট আক্রান্তের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে করোনায় আক্রান্তের হার ১.২৯ শতাংশ
সাপ্তাহিক-ভিত্তিতে আক্রান্তের হার ৫ শতাংশের নীচে, বর্তমানে ২.৩৭ শতাংশ
দৈনিক-ভিত্তিতে আক্রান্তের হার ২.৫৮ শতাংশ, গত ১০ দিন ৩ শতাংশের নীচে
নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো লাগাতার বৃদ্ধি পেয়েছে – মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৪৭ কোটি ৪৮ লক্ষ।

কোভিড ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রেও সারা বিশ্বে আমরাই এগিয়ে

উপরের পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে টাফি’র চেয়ারম্যান অলিন পাঞ্জাবি বলেন- দেখুন সংযুক্ত আরব আমিরাত কি করবে সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু যেখানে তারা আমাদের দেশের যাত্রীদের প্রবেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছেন তা নিয়ে তো আমাদের মনে প্রশ্ন উঠছে। পাকিস্তান, নেপাল, উগান্ডার সঙ্গে যদি ভারতকেও একই আসনে ফেলে দেওয়া হয় সেটা তো কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সংক্রমণের হার দেশে এখন অনেক কম। তাছাড়া কোভিড ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রেও আমরা সারা বিশ্বে এখন এক নম্বর জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। সেক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতিতে এখানকার যাত্রীদের সমস্যায় ফেলে দেওয়া হল। মনে রাখতে হবে যে ভারত থেকে বহু যাত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতে শিক্ষা, ব্যবসা, কাজের জন্য যান। এখন তাদের কি হবে বলতে পারেন?

সংযুক্ত আরব আমিরাত বলছে যে ভৈধ আবাসিক ভিসা সহ প্রবাসীরা যারা ওই দেশে কোবিড ভ্যাকসিনের উভয় ডোজ পেয়েছেন তাদেরই আজ অর্থা ৫ আগস্ট থেকে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে। সেখানে আরও বলা হয়েছে যে ভ্রমণের কমপক্ষে ১৪ দিন আগে তারা অবশ্যই দ্বিতীয় টিকার ডোজ পেয়েছেন এবং এটি প্রমাণ করে এমন একটি সার্টিফিকেট তাদের দেখাতে হবে।এটি ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ক্রাইসিস অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনসিইএমএ) কর্তৃক ঘোষিত রেহাইগুলির মধ্যে একটি। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, নাইজেরিয়া এবং উগান্ডার ভ্রমণকারীদের জন্য ছাড়গুলি প্রযোজ্য বলে জানানো হয়েছে।উপরন্তু, মূল সেক্টর থেকে টিকা দেওয়া এবং টিকা ছাড়ানো ভ্রমণকারীদেরও প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী: ডাক্তার, নার্স এবং টেকনিশিয়ান।বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও ফিরে আসতে পারেন।

ট্রানজিট যাত্রীদের জন্য ভ্রমণ আবার শুরু হবে। তারা অবশ্যই প্রস্থান করার সময় থেকে ৭২ ঘণ্টা পরে পিসিআর পরীক্ষা করবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিমানবন্দরগুলি ট্রানজিট যাত্রীদের জন্য বিশেষ লাউঞ্জ বরাদ্দ করবে বলে জানিয়েছে।

 Published on: আগ ৫, ২০২১ @ ১৮:৪১

 


শেয়ার করুন