মসজিদের ভিতর সেই বন্দুকধারী কী ভীষণ হিংস্র হয়ে উঠেছিল-বর্ণনা দিলেন বেঁচে ফিরে আসা ওরা ক’জন

বিদেশ
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ১৫, ২০১৯ @ ১৮:০৩

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ ওরা সকলেই প্রায় নানা দেশ থেকে নিউজিল্যান্ডে গেছেন। দেশটিকে ভাল লাগে। আর বিশ্বাস-সেখানে আছে শান্তি। আছে সুরক্ষাও। কিন্তু যে পরিস্থিতির মুখে আজ ওদের পড়তে হল তা বোধ হয় কোনওদিনও ওরা ভুলতে পারবেন না।

কি বললেন এক প্রত্যক্ষদর্শী আনোয়ার আলসালেহ

১) আল নূর মসজিদের ভিতরে তিনি তখন ছিলেন। নামাজ পড়ার আগে মসজিদের ছোট্ট বাথ্রুমের ভিতরে হাত-মুখ ধুয়ে নিচ্ছিলেন। আর সেই সময় তিনি দেখতে পান একজন বন্দুকধারী ব্যক্তি সামনে দিয়ে চলে গেল।এমনটা দেখে তাঁর মনে ভয় ধরে গেল।

২) এরপর তিনি নিজেকে লুকিয়ে ফেলেন। লুকিয়ে ফোন করেন পুলিশকে। ততক্ষণে মসজিদের ভিতর গুলি চালানো শুরু করে দিয়েছে সেই বন্দুকধারী। তিনি যতবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা চেষতা করেন ততবারই তা কেটে যাচ্ছিল। এরই মধ্যে তিনি আর দেরী না করে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দিয়ে যান। ফের বলতে থাকেন-মসজিদের ভিতর বড় ধরনের এক গণহত্যা চলছে। দয়া করে সাহায্য পাঠান। দেরী করলে সব শেষ হয়ে যাবে।পুলিশকে কল করুন। সাহায্য পাঠান।” কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এবারেও তিনি যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। ততক্ষণে ভিতরে লাশ পড়তে শুরু করে দিয়েছে।

৩) আলসালেহ বলছিলেন- “গুলি চালানোর সময় ওই বন্দুকধারী কি সব বলছিল। গুলি চালানোর প্রায় ২০ মিনিট বাদে সেখানে পুলিশ আসে।

৪) আলসালেহ বলেন, শুটিং শুরু হওয়ার প্রায় ২0 মিনিট পর পুলিশ এসে পৌঁছায়। মাথার পিছনে অস্ত্র নিয়ে  বিল্ডিং-এর দিক থেকে নেতৃত্ব দেন এবং সামনে পড়েছিল অসংখ্য মৃতদেহ। যার মধ্যে নারী ও শিশুদের দেহ ছিল চোখে পড়ার মতো। এই হামলাটিকে তিনি “সন্ত্রাসীদের চেয়েও খারাপ” তিনি বর্ণা করেন। আসলে সে হল একজন ঠান্ডা মাথার খুনি।বলেন আলসালেহ।

৫) আলসালেহ ১৯৬৬ সালে প্যালেস্তাইন থেকে নিউজিল্যান্ডে চলে যান এবং মনে করেন এটি বেঁচে থাকার একটি নিরাপদ জায়গা। তিনি মসজিদের প্রতিবেশীদের প্রতি তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, “নিউজিল্যান্ডের লোকেরা ভালো। এখানে আমার অনেক বন্ধু আছে।”

মাত্র ছ’মাস আগে সিরিয়া থেকে এসেছিলেন পরিবার নিয়ে, তাঁকেও হত্যা করল

১) একজন জর্ডনীয় ব্যক্তি, যিনি নিজের নাম বলতে চাইলেন না সংবাদ মাধ্যমের কাছে- বলছিলেন সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তের কথা।  সাত বছর আগে নিউজিল্যান্ডে চলে যান কারণ এটি তার সন্তানদের থাকার পক্ষে খুব নিরাপদ জায়গা হবে এই ভেবে।

২) তিনি বললেন – বন্দুকধারী যখন গুলি চালাচ্ছিল থখন তিনি এই মসজিদের ভিতরেই ছিলেন। আমি চারটি বড় ধামাকার শব্দ শুনতে পেলাম। ভাবলা হয়তো কোথাও পটকা ফাটানো হছে। কারণ, নিজিল্যান্ডে এমনটা তো আর কখনও হয়নি।

৩) এমন দৃশ্য দেখে তিনি পিছনের দরজা দিয়ে পালাতে থাকেন এবং পাঁচিল টপকান তখন তিনি দেখতে পান মানুষ পালাচ্ছে এবং কি ঘটছে তারা তা উপলব্ধি করছে।

৪) এই ব্যক্তিটি বলেন যে যারা এখানে মারা গেছে তাদের কয়েকজনকে তিনি চেনেন।  যাদের মধ্যে একজন ছিলেন সিরিয়ার শরণার্থী- যিনি ছয় মাস আগে তার পরিবারের সাথে নিউজিল্যান্ডে এসেছিলেন – একজন স্ত্রী এবং তিন “ফুটফুটে” শিশুকে নিয়ে।

রক্ষা পেল না সাত বছরের এক বালকও

১) একজন ব্যক্তি যিনি মারা যান, তিনি ছিলেন জর্ডনের মানুষ, তিনি ছিলেন ক্যানটারবারি মুসলিম এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক, যিনি “জনগণকে সেবা করতে পছন্দ করেছিলেন … এবং পরামর্শ দিয়েছিলেন।”

২) প্রায় ৭ বছর বয়সী এক বালককেও হত্যা করা হয় বলে তিনি জানান।

৩) “এটা প্রত্যেকের জন্য এক দুঃখজনক ঘটনা। মানুষ অ্যাম্বুলেন্স অপেক্ষা মেঝেতে চিত্কার করে উঠছিল, কিন্তু পুলিশ নিরাপদে ছিল না কারণ আমাদের সাহায্যের অনুমতি দেয়নি। আমরা আমাদের ভাইদের জন্য কিছু করতে পারিনি।”

Published on: মার্চ ১৫, ২০১৯ @ ১৮:০৩


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 5 = 5