ভূতের আতঙ্ক নারায়নগড়ের রাইপুরে- পালাচ্ছে অনেকেই

এসপিটি এক্সক্লুসিভ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • কয়েকদিন আগে গ্রামেরই বাসিন্দা সমর বারিক রাতে নিজের বাড়িতে ভূতের ভয় পেয়েছিলেন।
  • এরপরই দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।
  • তারপর থেকে রাইপুর গ্রামজুড়ে ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
  • সন্ধ্যার পর ঘরের দরজা বন্ধ করে দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা।

 Published on: সেপ্টে ১৪, ২০১৯ @ ২০:৫৫

সংবাদদাতা– বাপ্পা মণ্ডল

এসপিটি নিউজ, নারায়নগড়, ১৪ সেপ্টেম্বর: সন্ধ্যা নামতেই গা ছমছমে ভাব। টিম টিম করে জ্বলে বাতি। গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতে সন্ধ্যার পর আর কেউ ঘর ছেড়ে বেরোনোর সাহস পান না। পাছে যদি ভূতে ধরে। এরই মধ্যে এক গ্রামবাসীর কয়েকদিন আগে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর গোটা গ্রামে মানুষের ভিতর ভূতের ভয় আরও বেড়ে গেছে। তারা ভাবছে- এবার না জানি আবার কাকে ভূতে ধরে!

‘ভূতে’র আতঙ্কে তটস্থ রাইপুর গ্রামের মানুষ

ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়নগড়ের রাইপুর গ্রাম। সেখানে বাস করে বহু মানুষ। গ্রামবাসীদের কথায়- “এতদিন সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় কিছুদিন আগের একটি ঘটনায়। যার পর থেকে এখন গোটা গ্রামে ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে গুজব বলে পরিস্থিতিকে হালকা করে দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু পরিস্থিতি এত হালকা নয় বেশ গম্ভীর। কারণ, কয়েকদিন আগে গ্রামেরই বাসিন্দা সমর বারিকের রাতে আচমকা ঘুম ভেঙে যায়। গ্রামের বাড়ি। রাতের দিকে চারিদিকে একেবারে নিঃঝুম হয়ে যায়। সেইসময় তিনি বাড়ির ভিতর অস্বাভাবিক কিছু অনুভব করেন। খুব ভয় পেয়ে রাতে ঘরের ভিতর কাঁপতে থাকেন। সকালে বাড়ির সকলের ঘুম ভাঙলে তিনি রাতের ঘটনার কথা বলেন।”

সেদিন রাতের সেই বিভীষিকাময় মুহূর্ত

সেইদিন রাতে যা হয়েছিল তা বলার সময় গ্রামের মানুষের চোখ-মুখের আদল বদলে যেতে দেখা গেছে। তারা বলছিলেন বেশ চাঁপা গলায়। তাদের কথা মতো যা জানা গেল তা হল- “ওই দিন রাতে সমর বারিকের বাড়িতে নাকি ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। ওই দিন রাতে তিনি নাকি এমন কথাও শুনেছিলেন যে তারা কেউ বাঁচবে না। সবাই মরবে। বাড়ির একজন মানুষও বাঁচবে না। আর এই ঘটনার দিন কয়েকের মধ্যেই এক দুর্ঘটনায় সমর বারিকের মৃত্যু হয়। এরপর ভূতের আতঙ্ক ওই পরিবারকে প্রবলভাবে গ্রাস করে।”

অনেকেই বলছেন ভূতের আতঙ্ক এসবই গুজব আসলে হয়তো ওই পরিবারের উপর কারও আক্রোশ থাকতে পারে। আর তার জন্যই হয়তো কেউ এ ধরনের ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়ে গটা গ্রামের মানুষকে হকচকিয়ে দিয়ে তার কার্যসিদ্ধি সফল করাতে চাইছে। যদিও গ্রামবাসীদের কথায়- তাই যদি হবে তাহলে ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গোটা গ্রামজুড়ে কেন রোগ-ব্যাধির পরিমাণ বেড়ে যাবে? যদি ওই পরিবারের উপর কার ও রাগ থেকে তাহলে তো ওই পরিবারের উপরেই সব হবে কিন্তু এসব তো এখন গোটা গ্রামজুড়ে মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সন্ধ্যা নামতে মানুষ এখন ঘর ছেড়ে বেরোনোর সাহস পাচ্ছেন না।অনেকে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র যেতে শুরু করেছে। এমনিতেই রাতের বেলায় অন্ধকারে পথঘাট এখানে শুনশান হয়ে যায়। তার উপর আবার ভূতের আতঙ্ক , কোথায় যাবে বলুন তো সবাই? প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা।

সন্ধ্যা নামতেই শুনশান গোটা গ্রাম

গ্রামে গিয়ে দেখা দেল, সত্যি পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। গ্রামবাসীদের চোখেমুখের আতঙ্কের ছাপ লেগে আছে। এমনিতেই গ্রামের পথঘাট, খাল-বিল, নদী-নালা আর গাছপালায় ভর্তি। সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকার নেমে আসে। তখন নারায়নগড়ের এই রাইপুর গ্রাম যেন হয়ে ওঠে এক ‘ভূতুড়ে স্থান’। চারিদিক শুনশান হয়ে যায়। দূরে যতদূর চোখ যায় শুধু নির্জনতা আর ঘন অন্ধকারে মুড়ে যায় চারিদিক। ঝিঁঝিঁপোকার ডাক নিস্তব্ধতাকে যেন আরও ভূতুড়ে করে তোলে। তখন মানুষ শুধু ভাবে কখন এই অন্ধকার কেটে আবার ভোরের আলো ফুটবে।

কি করছে প্রশাসন

স্থানীয় প্রশাসনকে এখনও বিষয়টি কেউ সেভাবে জানায়নি। প্রশাসন অবশ্য এই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে। এখন গ্রামবাসীদের অপেক্ষায় থাকা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও রাস্তা নেই।তবে পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু এমন ‘ভূতূড়ে স্থানের’ অভাব নেই। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ সমস্ত জায়গাতেই কিন্তু এমন ভূতুড়ে স্থান আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।এমন অনেক জায়গা নিয়ে একাধিকবার সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে।

Published on: সেপ্টে ১৪, ২০১৯ @ ২০:৫৫


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

54 − = 46