ব্রজাঙ্গনারা ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের হ্লাদিনী শক্তির প্রকাশ, জেনে নিন তাদের পরিচয়

Main দেশ ধর্ম ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: নভে ৮, ২০২২ @ ১৬:১৬

লেখকঃ রসিক গৌরাঙ্গ দাস

এসপিটি প্রতিবেদন: ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলা জড়জাগতিক কাম উপভোগ নয়। আমাদের কাম- কলুষিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে শুদ্ধ চিত্তে রাসলীলা রহস্য উন্মোচনে প্রয়াসী হতে হবে। মনে রাখতে হবে ব্রজাঙ্গনারা সাধারণ স্ত্রীলোক ছিলেন না। প্রকৃত পক্ষে তাঁরা ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের অন্তরঙ্গ পার্ষদ। ব্রহ্মসংহিতায় বলা হয়েছে যে, তাঁরা হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণের হ্লাদিনী শক্তির প্রকাশ।

ব্রজললনারা ছিলেন চার শ্রেণীর

শ্রীধাম বৃন্দাবনের চার শ্রেণির ব্রজললনাদের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণ রাসনৃত্য করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিল নিত্যসিদ্ধ গোপকন্যারা, যাঁরা ছিলেন শ্রীমতী রাধারানীর কায়ব্যূহ। অন্য শ্রেণী ছিল দেবকন্যারা, যাঁরা নিত্যসিদ্ধ দের সঙ্গের ফলে নিত্যসিদ্ধ স্তর লাভ করেছিলেন। অন্য আর এক শ্রেণী ছিল মূর্তিমানশ্রুতিরা, যাঁরা তপস্যা করে গোপকূলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তারা ছিল সাধন্সিদ্ধ। আর ছিলেন ঋষিরা, যাঁরা দন্ডকারন্যে ভগবান শ্রীরামচন্দ্রকে দেখে শ্রীকৃষ্ণকে পতিরূপে লাভ করতে চেয়েছিলেন।

কেন তারা এই রাসলীলায় অংশ নিয়েছিলেন

ব্রজরামারা যমুনার তীরে একমাস ব্যাপী কাত্যায়নীর ব্রত করেছিলেন। তাঁরা শ্রীকৃষ্ণকে পতি রূপে লাভ করতে চেয়েছিলেন। ব্রজবালাদের মনোবাসনা পূর্ণ করার জন্যই রাসনৃত্য অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

শ্রীকৃষ্ণ নিজেকে অসংখ্য রূপে বিস্তার করে প্রত্যেক গোপীর সঙ্গে যুগপৎভাবে নৃত্য করেছিলেন। রাসপূর্ণিমার রাতটি ছিল ব্রহ্মরাত। মানুষের চারশত বত্রিশ কোটি বছর। ব্রজগোপিকারা একটু গর্বিত হলে রাধারানীকে নিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অন্তর্হিত হয়ে যান।

ব্রহ্মারও দুর্লভ প্রেম গোপীরা লাভ করেছিলেন

কৃষ্ণবিরহে গোপাঙ্গনারা প্রেমে উন্মাদগ্রস্ত হয়েছিলেন এবং সারা রাত্রি কৃষ্ণের লীলা আনুসরণ করে অন্বেষণ করেছিলেন। অবশেষে কৃষ্ণ দর্শন দান করে রাসনৃত্যের মাধ্যমে গোপীদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেছিলেন। এইভাবেই ব্রহ্মারও দুর্লভ প্রেম গোপীরা প্রাপ্ত হয়েছিলেন।

সব সাধন-মার্গের মূল কথা প্রেম-গভীর আকর্ষণ

ব্রজগোপাঙ্গনাদের কৃষ্ণের প্রতি যে আকর্ষণ বা ভালোবাসা, এই আকর্ষণ বা ভালোবাসাই তাঁদের সব কিছু পরিত্যাগ করে কৃষ্ণ সান্নিধ্য লাভে সহায়তা করেছিল। গভীর প্রেমার্তি না থাকলে তাঁকে পাওয়া যায় না। যত রকমের সাধন-মার্গ আছে, সবেরই মূলকথা প্রেম-গভীর আকর্ষণ। আমাদের মনপ্রাণকে কৃষ্ণের সেবার প্রতি, কৃষ্ণের প্রেমের দিকে নিয়ে যাওয়াই আমাদের সাধনা। কামার্ত মানুষ যদি রাসনৃত্য অনুকরণ করার চেষ্টা করে তা হলে রুদ্রকে অনুকরণ করে বিষ পান করার মতোই সে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।

শ্রদ্ধা সহকারে যিনি শ্রীকৃষ্ণের এই অপাকৃত রাসলীলা শ্রবণ, কীর্তন ও স্ম্রণ করবেন তিনি অচিরেই শ্রীকৃষ্ণ পাদপদ্মে প্রেমভক্তি লাভ করবেন। লেখক পরিচিতিঃ ইসকন মায়াপুরের জনসংযোগ আধিকারিক

Published on: নভে ৮, ২০২২ @ ১৬:১৬


শেয়ার করুন