‘পুলিশকে দেখে নেওয়ার হুমকি’ দিলীপের, তৃণমূলকে শাঁসানি- “এখনও না পাল্টালে এবার তোদের পার্টি অফিস বাড়িতেও তালা মারবো”

রাজ্য লোকসভা ভোট 2019
শেয়ার করুন

  1. দিলীপ ঘোষের শাঁসানি- “মেদিনীপুরের এসপি কোথাও কোথাও আমাদের পুলিশ দিয়ে ধমকাচ্ছে।কোনও গুন্ডা- পুলিশের দাদাগিরি চলবে না। গাড়ি প্যাক করে পাঠিয়ে দেব।”

  2. “সব কিছুর একটা সীমা আছে, অনেক তড়পানি দেখেছি। ভোটটা যদি দিতে চাও এখন থেকে বুঝে যাও। না হলে ভোটও দিতে দেব না টিএমসি-র লোকেদের বলে দিচ্ছি।”

  3. “মেদিনীপুর বিজেপিকে জেতাবেন। এত বেশি ভোট করব, যা রেকর্ড করব আমরা।”

সংবাদদাতা– বাপ্পা মন্ডল

ছবি-বাপন ঘোষ

Published on: এপ্রি ১০, ২০১৯ @ ০৯:৩৯

এসপিটি নিউজ, দাঁতন, ১০ এপ্রিলঃ দাঁতনে নিজের ভোট প্রচারে বেরিয়ে নরমে-গরমে প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেস, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেদিনীপুর পুলিশ সুপারকে এক হাত নিলেন বিজেপির প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। রীতিমতো চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণই করলেন না শাঁসিয়ে গেলেন তৃণমূল ও পুলিশকে। দিলীপের হুমকি তৃণমূল কর্মীদের- তৃণমূল যদি এখনও না পালটায় তাহলে টিএমসির অফিসেও তালা মারব তোদের বাড়িতেও তালা মারব।

মানসবাবু রাস্তায় বেরিয়েছেন। ওনার হয়েছে মুশকিল। কংগ্রেসের লোকেরাও সঙ্গে নেই টিএমসি-র লোকেরাও সঙ্গে নেই। খড়গপুর থেকে কিছুই নাই। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে মন খারাপ। টিএমসি ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে গেছে। লোক পাচ্ছে না। আর যারা আসছে হতাশ হয়ে নিজেদের মধ্যে মারপিঠ করে বাড়ি চলে যাচ্ছে। খড়্গপুরের টিএমসি সেখানে তাদের চারজন পুরনো নেতা আছে। তাদের পুলিশ দিয়ে ভয় দেখিয়ে বসিয়েছে যে আমরা এক হয়ে গেছি। কিন্তু তাদের চ্যালারা মারামারি করছে। সেইজন্য ভারতীয় জনতা পার্টি মেদিনীপুর সিট জিতবে বলে ঠিক করেছে।

“বিজেপির যে ওষুধ আছে না- সব ঠান্ডা হয়ে যাবে।”

দিলীপ ঘোষ দাঁতনের সভায় ছিলেন স্বমেজাজে। প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে শুধু শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস নয় পুলিশকেও শাঁসিয়ে গেলেন। “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা এখানে র‍্যালি করেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনে নমিনেশন করতে দেয়নি টিএমসি-র গুন্ডারা। ভোট প্রচার করতে দেয়নি। ভোট দিতে দেয়নি। ভোট গুনতে দেয়নি। আমি বলে দিচ্ছি- আর এক মাস। দেড় মাস ২৩ মে যখন লোকসভার রেজাল্ট বেরোবে ওখানে মোদিজি প্রধানমন্ত্রী হবেন খড়গপুরে আমাদের চেয়ারম্যান হবেন। দুটো এক সঙ্গে হবে। বিজয় মিছিল হবে। সেই জন্য কয়েকদিন আনন্দ করে নিক।”

“আমি যখন এখান দিয়ে আসছিলাম- দেখলাম, টি এমসি-র পার্টি অফিস আছে। যারা বসে ছিল মনে হচ্ছে ঘরের ছেলে মারা গেছে। মুখ শুকিয়ে গেছে। কি হল রে বাবা। ছ’মাস আগে পঞ্চায়েতের সময় কি চমকানি-ধমকানি। আর আজ সেই গলা কেটে নিলে লাউ গাছ যেমন ঝিমিয়ে যায় সেরকম হয়ে গেছে। ঠিক জায়গায় ওষুধ পড়েছে। বিজেপির যে ওষুধ আছে না- সব ঠান্ডা হয়ে যাবে।”

“কেউ যদি মনে করে এটা তার জমিদারি- তবে তার ভুলটা আমরা ভাঙিয়ে দেবো।”

“অনেক তড়পেছে। নারায়নগড়, দাঁতন এই সব এলাকা থেকে আমাদের বাড়ি ভেঙেছে। কর্মীদের গ্রাম ছাড়া করেছে মাসের পর মাস। হাত-পা ভেঙেছে কেস দিয়েছে সেই পুলিশগুলোকে আমরা দেখে নেব। সেই পুলিশগুলো আমাদের কেস দিচ্ছিল, চমকাচ্ছিল, অ্যারেস্ট করছিলো সব লুকিয়ে পড়ছে। আজকে কোচবিহারের এসপিকে পালটে দিয়েছে। ওকে গ্যারেজ করেছে। অন্য একজন এসপি হয়েছে। আর সে মেদিনীপুরের এসপি। কোথাও কোথাও আমাদের পুলিশ দিয়ে ধমকাচ্ছে। বিজেপি করা চলবে না। যদি পুলিশ কাউকে ট্যারা-ব্যাঁকা কথা বলে আমাকে সমীরাদাকে বলবেন। আর টিএমসি-র ওই ভুঁইফোড় নেতা যারা এখানে দাপিয়ে বেড়ায় তারা যদি চোখ দেখায় তাদের ডবল চোখ দেখাবেন, আমাকে খবর করবেন। কোনও গুন্ডা- পুলিশের দাদাগিরি চলবে না। গাড়ি প্যাক করে পাঠিয়ে দেব। ভোটের মধ্যে কোনও কাজ করতে পারবেন না।

বন্ধুগণ আজ আপনারা দেখেছেন- বিজেপি কাকে বলে।আমরা গাড়ি থেকে দেখছিলাম সামনে যত লোক পিছনে তার চেয়ে বেশি লোক। আজকে বিজেপিকে চমকে বাড়ি ঢোকাতে পারবে না। উলটে তোমাদের বাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেবো। তাই বলছিলাম বন্ধুগণ, দিন পালটে গেছে, ওইসব মাস্তানদের বলে দিন- ভালো জায়গায়, ভালোভাবে যেন থাকে। আমরা কারো গায়ে হাত দিই না, কাউকে চমকাই ধমকাই না। কিন্তু সব কিছুর একটা সীমা আছে, অনেক তড়পানি দেখেছি। ভোটটা যদি দিতে চাও এখন থেকে বুঝে যাও। না হলে ভোটও দিতে দেব না টিএমসি-র লোকেদের বলে দিচ্ছি। যারা পঞ্চায়েতে আমাদের ভোট দিতে দেয় নি, সাধারণ মানুষদের ভোট দিতে দেয়নি সেই লোকগুলোকে চিনে রাখুন। তারা যদি এখনও না পালটায় তাহলে টিএমসির অফিসেও তালা মারব তোদের বাড়িতেও তালা মারব।

মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে দিলীপ বললেন- “দিদির মুখটা আমসির মতো শুকিয়ে গেছে।”

ভারতীয় জনতা পার্টি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়ছে। কেউ যদি মনে করে এটা তার জমিদারি ভুল করছে। তার ভুলটা আমরা ভাঙিয়ে দেবো। আপনারা দেখেছেন- মোদিজি মাত্র দু’টো সভা করেছেন অমিত শাহ মাত্র তিনটে সভা করেছেন তাতে পিলে চমকে গেছে। দিদির মুখটা আমসির মতো শুকিয়ে গেছে। কোচবিহারে, আলিপুরদুয়ারে, জলপাইগুড়িতে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আরে মেদিনীপুরে কবে আসবেন? মেদিনীপুরে আসেন ভোট শেষ হয়ে যাবে আর যন্ত্রণা হবে না। দিদিমণি এখন যা আবোল-তাবোল ভাষণ দিচ্ছেন, তা কেউ শুনতে চায় না। সবাইকে বকাবকি করে চলে আসছেন।

দিদিমণির মিথ্যা কথা আর কেউ শুনতে চাইছে না। লোকে মোদির কথা শুনতে চাইছে। তাই মোদিজি পশ্চিমবঙ্গে ১৫টি সভা করবেন। অমিত শাহ করবেন। তাই আমরা প্রথমে শুরু করলাম। মেদিনীপুর বিজেপিকে জেতাবেন এত বেশি ভোট করব যা রেকর্ড করব আমরা।

মানস ভুঁইয়াকে তোপ দিলীপের-বললেন, “মেদিনীপুরের লোক এবার আপনাকে পালটে দেবে।”

আর মানসবাবুর মতো নেতারা যারা জামা-কাপড় পাল্টানোর মতো পার্টি পাল্টান লোক এবার তাকে ত্যাগ করে দেবে। পাশে সবং। তিনি সেখানে অনেক বছর এমএলএ ছিলেন। আপনি গিয়ে খালি পায়ে হাঁটতে পারবেন না। গাড়ি যাবে না। হয় গাড়ি নয় হেঁটে ঢুকতে হবে। তিনি বলছেন নাকি মেদিনীপুরকে পালটে দেবেন। আগে সবংটা পাল্টান। মেদিনীপুরকে আমরা পাল্টাবো। আর মেদিনীপুরের লোক আপনাকে পালটে দেবে আপনাকে এবারে। বন্ধুরা জেনে রাখুন- সবং-এর গ্রামে আসনটা আমরা জিতেছি বিজেপি জিতেছে। যে নিজের গ্রাম জিততে পারে না সে জিতবে এমপি। দেখুন, পয়সা লাগে না স্বপ্ন দেখতে।

তাই পশ্চিমবাংলার মানুষ দেখে নিয়েছে টিএমসি-র আসল রূপ। তাই হিংসার লড়াই, দুর্নীতি, খুনোখুনি আমরা বন্ধ করব। দায়িত্ব নিয়েছি। আর মেদিনীপুর সব সময় পরিবর্তন করে। আর তাই মেদিনীপুর থেকে পরিবর্তন করা দায়িত্ব আপনাদের। আজকে দাঁতন দেখিয়েছে যে মেদিনীপুর পরিবর্তন চায়। রাস্তার ধারের মানুষ হাত দেখাচ্ছেন নমস্কার করছেন হাসছেন। এতদিন আপনারা রক্ত ঝরিয়েছেন মার খেয়েছেন তার ফল এবার নির্বাচনে ফলবে।

Published on: এপ্রি ১০, ২০১৯ @ ০৯:৩৯

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

42 + = 43