পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আশাবাদী উপাচার্য, বললেন- দেশের মধ্যে সেরা হবে

রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-ডা. সৌমিত্র পন্ডিত

Published on: জানু ৩, ২০১৮ @ ১৬:২৫

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৩ জানুয়ারিঃ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান চিকিৎসায় ক্রমেই উন্নতি করছে এ রাজ্য।গত ২৪ বছর ধরে সেই ধারাকে রক্ষা করে চলেছে বেল্গাছিয়ায় অবস্থিত প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়। যাক নিয়ে গর্বের শেষ নেই বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের। উপাচার্য তো বলেই দিয়েছেন-আগামীদিনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম-যশ ও কর্মকাণ্ড শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় ভারতের মধ্যে উৎকর্ষতার শিখরে পৌঁছে যাবে।প্রাণী চিকিৎসায় যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা সাড়া ফেলছেন তাতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়কে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

দেখতে দেখতে ২৩টি বছর পেরিয়ে ২৪তম বর্ষে পদার্পন করল পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়-যার মূলধারা প্রাণিচিকিৎসা ও প্রাণিবিজ্ঞান, মৎস্যবিজ্ঞান ও দেহপ্রযুক্তি বিদ্যার উপর ভর করে গ্রামীণ অর্থনীতির ভীতকে ক্রমান্বয়ে ঊর্দ্ধমুখী করে নিয়ে চলেছে নিরন্তর।সেই ধারাকে অব্যাহত রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস অর্থাৎ ২ জানুয়ারি দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার ও আগামী দিনের জন্য কর্মকাণ্ডের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করার প্রয়াস-আজ দ্বিতীয়বার অনুষ্টিত হল।

মূল অনুষ্ঠানটি বেলগাছিয়ায় বিশ্ববিদ্যাল্যের মূল ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়।সমগ্র অনুষ্ঠানটি মূলত ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী এবং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদযাপিত হয়। উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য্য অধ্যাপক পূর্ণেন্দু বিশ্বাস, ভিডিজি ড. জে কে জেনা, মালা সাহা, তরুণ সাহা, পশ্চিমবঙ্গ পোলট্রি ফেডারেশনের সম্পাদক মদন মাইতি, অধ্যাপক শুভাশীষ বটব্যাল, অধ্যাপক অরুণাশীষ গোস্বামী, অধ্যাপক অজিত কুমার সাহু, অধ্যাপক বিপুল কুমার দাস, কুমার মাইতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্যরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক পূর্ণেন্দু বিশ্বাসের অনুপ্রেরণায় অনুষ্ঠানটিতে সফল ছাত্রী-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মচারীদের উৎকৃষ্টতার সম্মান দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে প্রান্তিকচাষী-খামারীদেরও সম্মান প্রদান করা হয়।উপাচার্য বলেন-আগামীদিনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম-যশ ও কর্মকাণ্ড শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় ভারতের মধ্যে উৎকর্ষতার শিখরে পৌঁছে যাবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গ হিসেবে কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রগুলি যেভাবে গ্রামীণ মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করে চলেছে তাকে আরও বেশি করে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।প্রাণী চিকিৎসায় যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা সাড়া ফেলছেন তাতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়কে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।দিবারত্রি (২৪ ঘণ্টা), বহির্বিভাগ, ডায়ালাইসিস, আইসিইউ, ইন্ডোর-কি হয় না, বর্তমান প্রযুক্তি বিদ্যার সঙ্গে সঙ্গে-শিক্ষা,গবেষণা, সম্প্রসারণের মাধ্যমে যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে তিনি খুশি এবং আরও সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরও বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতির ভীত আরও মজবুত করতে আগামী দিনে উত্তরবঙ্গেজোড়া কলেজ স্থাপনের কথা জানান।যার আর্থিক সহাওয়তা দেবে রাজ্য সরকার। দু’ট একটি প্রাণী বিজ্ঞান আর দ্বিতীয়টি মৎস্যবিজ্ঞান-দুটি কলেজের পরিচালনার মূল দায়িত্ব থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের।আগামী ফেব্রুয়ারিতে নতুন কলেজের কাজ শুরু হবে বলে জানান উপাচার্য পূর্ণেন্দু বিশ্বাস। অধ্যাপক বিশ্বাস বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের কথা, গ্রামীণ গরিব মানুষের কথা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে আগামী ২০১৯ সালে নতুন দুটি কলেজের পঠন-পাঠন যাতে শুরু করা যায় সেই চেষ্টা তিনি করবেন। এছাড়াও তিনি জানান, ঝাড়গ্রাম জেলার লোধাশুলিতে ৪০ একর জমিতে পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন। যার মধ্যে থাকবে “প্রাণী প্রজণন কেন্দ্র”, “বাংলার কালো ছাগল পালন” এবং দেশি প্রজাতি “ঘূংরূ শুকর পালন” এবং গারমীণ মানুষের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বনির্ভর করে তোলার প্রয়াস।

এছাড়াও তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক আনুকূল্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায় একটি নতুন “কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র” স্থাপন করা হবে। যেখানে চাষীবন্ধু বা খামারীরা হাতেনাতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আগামিদিনে আরও লাভবান চাষাবাদ ও প্রাণী পালনের মাধ্যমে অধিক উন্নতি করতে পারবে।

এছাড়াও খামারীদের প্রশিক্ষণ-প্রাণীপালন বা মৎস্যচাষ বা কৃষি যাই হোক -সারা বছর ধরে চলতে থাকে। ভিডিজি ড.জে কে জেনা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে তি্নি ভীষণ খুশি এবং আগামী দিনে আরও দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। মাছ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন যাতে আরও বৃদ্ধি করা যায় তার জন্য নতুন নতুন গবেষণা করা ও তার ফলগুলি গামীণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায় বিশ্ববিদ্যালয়কে নিতে হবে।

সারা দিনের এই অনুষ্ঠানটিতে নাচ, গান, আবৃত্তি এবং সান্ধ্যকালীন নাটক “আসবি তুই কোন সকালে”-মঞ্চস্থ হয়।

Published on: জানু ৩, ২০১৮ @ ১৬:২৫


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 79 = 89