নতুনরূপে থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ ওয়েবমিনারে পর্যটকদের জানানো হল থাইল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

Main কোভিড-১৯ বাংলাদেশ বিদেশ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

Published on: ফেব্রু ১৩, ২০২২ @ ২০:২৭
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৩ ফেব্রুয়ারি:   সম্প্রতি ট্যুরিজম অথোরিটি অব থাইল্যান্ড, নিউ দিল্লি অফিসের বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য এক ওয়েবমিনারের আয়োজন করে। সেখানে তারা থাইল্যান্ডের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। কোভিড-১৯ মহামারীর পর থাইল্যান্ড নতুনরূপে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।একেবারে অন্যরূপে অন্যভাবে। পর্যটন দুনিয়ায় যা সত্যিই এক অভিনবত্ব নিয়ে এসেছে। সেই নতুনরূপে থাইল্যান্ডকে পরিচিত ঘটাতে এবং সেখানে ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের বিশেষ করে বাংলাদেশের পর্যটকদের কোন কোন দিক জানা কিংবা মানা প্রয়োজন তা নিয়ে ওয়েবমিনারে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওয়েবমিনারটি গত ১১ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত হয়।

থাইল্যান্ড ভ্রমণ নিয়ে বাংলাদেশ ওয়েবমিনার

ওয়েবমিনারটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন এশিয়ান ফুট প্রিন্টের সম্পাদক জুন মুখার্জি। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিস মোকাবিথি সুমিধমো, ট্যুরিজম অথোরিটি অফ থাইল্যান্ড, নিউ দিল্লির ডিরেক্টর ভাচিরাচাই সিরিসুমপান, রয়্যাল থাই এমব্যাসি ঢাকা, মিস কুসুমা সারিবুনিয়ারি এবং থাই এয়ারওয়েজের একজন।বক্তারা সকলেই নতুনরূপে থাইল্যান্ড অর্থাৎ ‘অ্যামেজিং নিউ চ্যাপ্টার’ বিষয়ে পর্যটকদের নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক জানান। এখন থাইল্যান্ডে পরিস্থিতি কেমন, সেখানে কোভিড-১৯ মহামারীর পর ভ্রমণের জায়গাওগুলি থেকে শুরু করে সমস্ত স্থান কি অবস্থায় আছে, সেখানে যাওয়ার জন্য কোন কোন দিক মেনে চলা দরকার, এয়ারপোর্টে গিয়ে কি কি করা প্রয়োজন, শিশুদের জন্য কি কি করনীয়, ভিসার জন্য কি কি করা দরকার, সেখানে সুরক্ষার জন্য কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এসব কিছুই তুলে ধরেন বাংলাদেশের ওয়েবমিনারে উপ্সথিত সব বক্তা।

নতুনরূপে থাইল্যান্ড-কেমন এই থাইল্যান্ড

ওয়েবমিনারটি শুরুতেই একটা ছোট্ট ভিডিও তথ্যচিত্র দেখানো হয়। যেখানে নতুন্রূপে সেজে ওঠা থাইল্যান্ডের নতুন্রূপ তুলে ধরা হয়েছে। বাংলায় তথ্যচিত্রটি অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও অসাধারণ। এক এক একটা বিষয় তুলে ধরে ছবির সঙ্গে বাংলায় তার স্বল্প পরিচিতি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে- “বিশ্ব যখন এক নবযুগের সূচনা হতে চলেছে উন্মোচিত হচ্ছে পর্যটনের এক নব অধ্যায় থাইল্যান্ড আপনাদের জন্য নিয়ে এল অ্যামাজিং নিউ চ্যাপ্টার। ‘থাইল্যান্ড হ্যাজ আ পাওয়ার’ এ টু জেড। ‘অ্যাওয়েকিং ইউ এ সেনশাস’- আপনার সুপ্ত অনুভূতিগুলিকে জাগিয়ে নতুন করে বাঁচুন। বিয়ন্ড এক্সপেকটেশন- চাওয়া পাওয়ার উর্দ্ধে উঠে নতুন অভিজ্ঞতার দিকে এগিয়ে যান। ‘ক্র্যাফট ইওর ইমানিজেশন’-কল্পনার জাল এমন করে বুনুন তা যেন আপনাকে উজ্জ্বীবিত করে সর্বত্র সর্বদা।’নিউ এক্সপেরিয়েন্স অফ রোমান্স’- প্রেমের নতুন অধ্যায় এমন করে শুরু করুন তার অভিব্যাক্তি ভাষায় প্রকাশ করা না যায়। ‘ওভারজয়েড উইথ একসাইটমেন্ট’-উত্তেজনার পারদ চড়তে দিয়ে শুরু করুন আনন্দময় এক দিন। আপনার হৃদস্পন্দন নতুন তালে বাজে। ‘পাম্প ইওর হার্টস উইথ ফ্লেম অফ প্যাশন’- আবেগের আঁচ এসে পড়তে দিন হৃদয়ে আর তা রেখে যাক অবিস্মরনীয় সব স্মৃতি।’রিকানেক্ট উইথ নেচার’ -আবার ফিরে যান প্রকৃতির কোলে, শান্তির নীড় খুঁজে নিন প্রাণের মিলন মেলায়। ‘সাবমার্জ ইউরসেলফ ইন লোকাল কালচার’- দু’চোখ মেলে চারপাশে তাকান। জানার মাঝে অজানারে করে নিন সন্ধান। ছোট ছোট হাসির মুহূর্ত নিয়ে গড়ে নিন আগামীর প্রতিধ্বনি। থাইল্যান্ডের নতুন অধ্যায়ে আপনাদের স্বাগত। ভিজিট থাইল্যান্ড ইয়ার ২০২২।” অসাধারণ এই ভিডিওটি থাইল্যান্ডকে নতুনভাবে চিনিয়েছে, যা সত্যিই অনবদ্য।

থাইল্যান্ড ট্যুরিস্ট অফিস নিউ দিল্লির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে এক ওয়েবমিনারের আয়োজন করা হয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি। ওয়েবমিনারটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন এশিয়ান ফুট প্রিন্টের সম্পাদক সাংবাদিক জুন মুখার্জি।

বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিস মোকাবিথি সুমিধমো যা বললেন

ওয়েবমিনারে প্রথম বক্তা হিসাবে উপস্থিত বাংলাদেশে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিস মোকাবিথি সুমিধমো বলেন- “থাইল্যান্ড আবার পর্যটন দুনিয়ায় ফিরে আসার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। বহু বাংলাদেশি থাইল্যান্ডে পড়াশুনো করতে যায়, চিকিৎসা করাতে যায়। আমি নিশ্চিত আমাদের সঙ্গে মানুষের ভালোবাসা ছিল আছে থাকবে। পর্যটন একটা অত্যন্ত উপযোগী বিষয়। মানুষ মুখিয়ে আছে কবে আবার তারা ভ্রমণ করতে পারবে। এই মুহূর্তে থাইল্যান্ড অফার করছে। থাইল্যান্ডের অর্থনীতিতে পর্যটন এক গুরুত্বপুর্ন দিক। থাইল্যান্ড অথোরিটি বরাবরই পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলেছে। সেই সঙ্গে তারা যথাযথ ব্যবস্থাও নিয়েছে। এরপর সব দিক খতিয়ে দেখে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পর থাইল্যান্ড ২০২১ সালের জুলাই মাসে খুলে দেয়। যেখানে ছিল ফুকেট স্যান্ডবক্স স্কিম। এরপর গত বছর আমরা পর্যটকদের কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ ১৪ থেকে কমিয়ে সাত দিন করি। এখন থাইল্যান্ডের পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। থাইল্যান্ডে ৭৫.৫ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। ৭০.৪ শতাংশ দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় ডোজ। ২০.৩ শতাংশ দেওয়া হয়েছে বুস্টার ডোজ।”

ট্যুরিজম অথোরিটি অফ থাইল্যান্ড, নিউ দিল্লির ডিরেক্টর ভাচিরাচাই সিরিসুমপান যা বললেন

ট্যুরিজম অথোরিটি অফ থাইল্যান্ড, নিউ দিল্লির ডিরেক্টর ভাচিরাচাই সিরিসুমপান থাইল্যান্ডের বর্তমান অবস্থা বিশেষ করে কোভিড মহামারীর পর পরিস্থিতির বিস্তারিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন- থাইল্যান্ড এখন পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে গত ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ থেকে। ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। এখন পর্যন্ত থাইল্যান্ডে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৭৫.২ শতাংশ মানুষকে। সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ৬৯.৯ শতাংশ মানুষকে। বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ২০.৩ শতাংশ। গত দু’মস আমাদের সকলকে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। থাইল্যান্ডে পরিস্থিতি এখন ভালো হয়েছে। শপিং সেন্টার এখন খুলে যাচ্ছে। প্রত্যেক ১৮ বছর বয়সী এবং তার উর্দ্ধে সমস্ত বয়সের মানুষ যারা সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন প্রাপ্ত হয়েছে তারা থাইল্যান্ড ভ্রমণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে থাইল্যান্ড সরকার মোট আটটি ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিয়েছে, এগুলি হল-১)করোনাভ্যাক, ২)অ্যাস্ট্রোজেনেকা অথবা কোভিশিল্ড, ৩) পিফাইজার, ৪) জনসন, ৫) মডারনা, ৬) সিনোফার্ম অথবা কোভিলো, ৭) স্পুতনিক ভি এবং 8) কো-ভ্যাকসিন। পাশাপাশি থাই সরকার পর্যটকদের সুরক্ষার কথা ভেবে চালু করেছে এসএইচএ অথবা সেফটি এন্ড হেলথ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।সেখানে তিনটি ক্যাটাগরি রাখা হয়েছে – এসইচএ, এসএইচএ প্লাস এবং এসএইচএ প্লাস প্লাস।এই পদ্ধতিকে অনুমোদন দিয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড এন্ড ট্যুরিজম কাউন্সিল।” একই সঙ্গে থাইল্যান্ডে প্রবেশ করার জন্য তিনটি ক্যাটাগরি রাখা হয়েছে। প্রথম -আরটি-পিসিআর টেস্ট করুন এবং থাইল্যান্ড ঘুরুন। দ্বিতীয়-স্যান্ডবক্স এবং তৃতীয়-হ্যাপি কোয়ারেনটাইন। যারা সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের জন্য স্যান্ডবক্স প্যাকেজ আর যারা সম্পূর্ণ ভ্যাকসিন প্রাপ্ত হননি তাদের জন্য রাখা হয়েছে সর্বশেষ ক্যাটাগরি অর্থাৎ হ্যাপি কোয়ারেনটাইন। বলেন ভাচিরাসাই সিরিসুমপান।

Published on: ফেব্রু ১৩, ২০২২ @ ২০:২৭


শেয়ার করুন