ছাঁটাই, সংসার চলবে কি করে ! অবসাদেই অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন শালবনী টাকশালের কর্মী

রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল

Published on: জানু ২৯, ২০১৮ @ ১৫:২২

এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ২৯ জানুয়ারিঃ এখন একটা চাকরি জোটানোই বিরাট ব্যাপার। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে করে আসা কাজ যদি হঠাৎ করে চলে যায়, তাহলে কি অবস্থা হবে একবার ভাবুন! আর সেটাই হয়েছে শালবনী টাকশালের জেনারেল স্টোর বিভাগের চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দিব্যেন্দু ধলের জীবনে। মাত্র ৩৭ বছরের এই যুবক যেদিন শুনলেন যে তার আর চাকরি নেই, তাকে কাজ থেকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে সেদিন থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। অবসাদে অসুস্থ হয়ে শেষে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। তাঁর এই মৃত্যুতে টাকশালের শ্রমিকদের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে তবে কি এবার তাদের সামনে এমন বিপদ নেমে আসছে?

চাকতারিনী গ্রামের দিব্যেন্দু ধল শালবনী টাকশালের জেনেরাল স্টোর বিভাগে কন্ট্রাক্টর শ্রমিক রূপে কাজ করতেন। তিনি সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই কর্মরত ছিলেন। দিনগুলি তার ভালই চলছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে দায়িত্ব প্রাপ্ত কন্ট্রাকটার দিব্যেন্দু সহ ৪জন স্থায়ী শ্রমিককে টাঁকশাল কর্তৃপক্ষ ছাঁটাই-এর কথা জানিয়ে দেয়। এরপর দিব্যেন্দু সহ অন্য ছাটাই কর্মীরা টাঁকশাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের সাথে কথা বললে তিনিও একই কথা বলেন। এ খবর শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।

বাড়ি ফিরেই অবসাদে অসুস্থ হয়ে পড়েন দিব্যেন্দু। তাকে শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠায় তাকে মেদিনীপুর নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আজ ভোরেই তার মৃত্যু হয়। নতুন করে আবার একটা পরিবারে অন্ধকারের কালো ছায়া ঘনিয়ে এল।

টাকশালে 500 জনের বেশি কন্ট্রাক্টর শ্রমিক কাজ করেন তার মধ্যে জেনারেল স্টোর বিভাগে 18 জন স্থায়ী এবং 3 জন এক্সট্রা অস্থায়ী শ্রমিক আছেন। এই ঘটনা জানার পর শ্রমিকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক এবং অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

ইতিপূর্বে শ্রমিকদের বার বার প্রতারণা ও বঞ্চনার অভিযোগ উঠেছে টাকশাল এবং কন্ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে।অভিযোগ, বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের পিএফ , ইএসআই প্রভৃতি প্রাপ্য না দিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে, এমনকি ন্যুনতম মজুরি যা টাকশাল কর্তৃপক্ষের ঘোষিত তাও দেওয়া হয় না শ্রমিকদের।

কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে বার বার অমানবিক আচরণেরও অভিযোগ উঠেছে, গেটপাস ছাড়িয়ে নেওয়ারও হুমকি দিয়ে শ্রমিকদের মুখ বদ্ধ করা হয়েছে।

এখন কাজ না থাকার অজুহাত তুলে বিভিন্ন সেকশন থেকে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত শ্রমিকদের ছাঁটাই করার চেষ্টা হচ্ছে।অথচ নোটবন্দির সময়কালে প্রচন্ড পরিশ্রম করে ১২ ঘন্টা কাজ করে এই শ্রমিকরাই তখনকার চাহিদা মিটিয়েছে।আজ কাজ নেই বলে তাদের ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।

Published on: জানু ২৯, ২০১৮ @ ১৫:২২


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 5 = 3