কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম সহ বিরোধীদলের ১২ জন রাজ্যসভার সাংসদকে সাসপেন্ড

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: নভে ২৯, ২০২১ @ ২১:৫৫

এসপিটি নিউজ, নয়া দিল্লি, ২৯ নভেম্বর:    সংসদের বর্ষা অধিবেশনের শেষ দিন ১১ আগস্ট, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগে রাজ্যসভার ১২ জন বিরোধী সাংসদকে পুরো শীতকালীন অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে, যাদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংসদ দোলা সেন ও শান্তা ছেত্রী আছেন। ১১০ দিন আগে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংসদের এই অধিবেশন চলবে ২৯ নভেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সোমবার সংসদের কার্যক্রম শুরু হয়। লোকসভা-রাজ্যসভায় কৃষি আইন প্রত্যাবর্তন বিল পাশ হওয়ার পর মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয় হাউসের কার্যক্রম।

কংগ্রেস, তৃণমূল, শিবসেনা ও বামেদের সাংসদ আছেন

সোমবার রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ সাসপেন্ড করা সাংসদের নাম ঘোষণা করেন। এর মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেসের ৬ জন সাংসদ আছেন: ফুলো দেবী নেতাম, ছায়া ভার্মা, রিপুন বোরা, রাজমণি প্যাটেল, সৈয়দ নাসির হুসেন, অখিলেশ প্রসাদ সিং। তৃণমূল কংগ্রেসের দোলা সেন এবং শান্তা ছেত্রী আছেন।  এদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।

এছাড়াও শিবসেনা থেকে প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এবং অনিল দেশাই অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। একইসঙ্গে সাসপেন্ড করা সাংসদের তালিকায় রয়েছেন সিপিএমের এলারাম করিম এবং সিপিআইয়ের বিনয় বিশ্বমও।

মল্লিকার্জুন খড়গে বলেন- আগামীকাল বিরোধীদের বৈঠক

এখানে, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খার্গের বক্তব্য এসেছে অ্যাকশন নিয়ে। খড়গে বলেছেন- যারা অন্যের পক্ষে আওয়াজ তোলে তাদের কণ্ঠ যদি দমন করা হয়, তাহলে তা গণতন্ত্রকে গলা টিপে মারার মতো। আমরা এর নিন্দা করি, সব দলই এর নিন্দা করে। সামনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল বৈঠকে বসব।

কী হয়েছিল ১১ আগস্ট?

বীমা বিল নিয়ে আলোচনা চলাকালীন ১১ আগস্ট রাজ্যসভায় তুমুল হট্টগোল হয়। সংসদের ভেতরে নারী-পুরুষ সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলের মার্শালদের মধ্যে তুমুল হাতাহাতি হয়। সেদিন হট্টগোল শুরু হলে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ও উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেছিলেন, “হাউসে যা কিছু হয়েছে তা গণতন্ত্রের মন্দিরকে অপবিত্র করেছে।”

অন্যদিকে বিরোধীরা বলেছেন, বিলটি পাসের কোনো চেষ্টা করা হলে তার পরিণতি হবে। এর পাশাপাশি নারী সংসদ সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও তুলেছিল বিরোধীরা। বিরোধীরা এ বিষয়ে উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডুর কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দিয়েছে।

সরকারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছে বিরোধীরা

  • কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন যে আমরা পেগাসাসের প্রসঙ্গ তুলেছি। সংসদে আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয়নি। প্রথমবার রাজ্যসভায় সাংসদদের মারধর।
  • এনসিপি নেতা প্রফুল প্যাটেল বলেছেন যে তিনি তার সংসদীয় জীবনে এমন লজ্জাজনক ঘটনা কখনও দেখেননি।
  • এসপি নেতা বিষম্বর নিষাদ বলেন, আমাদের মহিলা সাংসদদের মারধর করা হয়েছে।
  • আরজেডি নেতা মনোজ ঝা বলেন, বীমা বিল সংসদে পাস হয়নি, সামরিক আইন পাশ করেছে।
  • ডিএমকে বলেছে- সংসদের এমন ছবি কখনও দেখিনি। আমাদের নারী সংসদ সদস্যদের টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিরোধীদের জবাব দিতে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন ৮ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

১১ আগস্ট বিকেলে সরকারের ৮ মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে বিরোধী দলের প্রতিটি অভিযোগের পর্যায়ক্রমে জবাব দেন। সাংবাদিক সম্মেলনে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রলাহাদ জোশী, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ছাড়াও মুখতার আব্বাস নকভি, ধর্মেন্দ্র প্রধান, অনুরাগ ঠাকুর, অর্জুন মেঘওয়াল এবং ভি মুরালিধরন অর্থাৎ ৮ মন্ত্রী ৪৮ মিনিট ধরে সাড়া দেন।

৪৮ মিনিটে সরকার বিরোধীদের ওপর ৮টি বড় ধরনের হামলা

  • সংসদে বর্ষা অধিবেশন চলাকালীন বিরোধীদের অগণতান্ত্রিক ও হিংসাত্মক আচরণ ভারতীয় গণতন্ত্রের এক অন্ধকার অধ্যায়ের গল্প রচনা করেছে।
  • সরকার একাধিকবার বিরোধীদের কাছে আলোচনার প্রস্তাব পাঠালেও প্রতিবারই আমাদের আবেদন শুনানি হয়নি।
  • বিরোধীদের আলোচনায় কোনো আগ্রহ ছিল না এবং তারা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে সংসদ ব্যাহত হবে।
  • বিরোধী সদস্যদের দুর্ব্যবহার ভারতের সংসদীয় ইতিহাসের জন্য লজ্জাজনক এবং এর জন্য তাদের অবশ্যই দেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
  • লজ্জাজনক ও ক্ষতিকর আচরণের জন্য বিরোধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি।
  • সংসদে বিরোধী দলের নাটক দেখেছে গোটা দেশ। তাদের কাছে দেশ যে পরাজয় মেনে নিয়েছে তা হজম করতে পারছে না বিরোধীরা। আমার পথ বা হাইওয়ে চিন্তার নিন্দা করুন। দেশটিও এমন চিন্তার নিন্দা করে।
  • রাহুল গান্ধী বলেছেন, এটা দেশের গণতন্ত্রের হত্যা। তারা সংসদে কী করেছে তা জাতি দেখছে। তার যদি সামান্যতম দায়িত্ববোধও থাকে, তাহলে তার দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। চেয়ারম্যানকেও এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে এ ধরনের কাজের পুনরাবৃত্তি না হয়।
  • বিরোধীরা সাধারণ জনগণ ও করদাতাদের তোয়াক্কা করেনি। কুমিরের কান্না না কেদে বিরোধীদের দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

Published on: নভে ২৯, ২০২১ @ ২১:৫৫


শেয়ার করুন