Published on: জুন ৩০, ২০১৮ @ ১৭:১০
এসপিটি স্পোর্টস ডেস্কঃ ম্যাচে কি হবে তা নিয়ে কোনও কথা আমরা বলতে চাই না। আমরা শুধু এই ম্যাচে মুখোমুখি হতে যাওয়া দুই দল সম্পর্কে কিছু পরিসংখ্যান, কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসব জানাতে চাই পাঠকের কাছে।
কোথায় হতে চলেছে ম্যাচঃ
রাশিয়ার কাজান এরিনায় হতে চলেছে ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা শেষ ১৬-র প্রথম ম্যাচ। এই স্টেডিয়ামে আসন সংখ্যা ৪৫ হাজার ৩৭৯। ২০১৩ সালে এই স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন হয়। এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ৪৩৯.৭ মিলিয়ন ডলার। এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে মোট চারটি ম্যাচ হয়েছে এখানে। এবার রাউন্ড-১৬-এর এই ম্যাচটির পর ৬ তারিখের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
ম্যাচ পরিচালনায় কোন দেশের রেফারি
ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকছেন ইরানের রেফারি ফাঘানি আলি রেজা। তাঁকে সহযোগিতা করবেন সহযোগী রেফারি ইরানেরই সোখন্দন রেজা ও মন্সৌরি মহম্মদরেজা। চতুর্থ রেফারি থাকছেন চিলির বাসচুনান জুলিও।
পরিসংখ্যান
পরিসংখ্যান বলছে শেষ দুই সাক্ষাৎকারে ফ্রান্স দু’বারই হেরেছে আর্জেন্টিনার কাছে। ফ্রান্স ১ গোল দিয়েছে ৩ গোল খেয়েছে।
ফ্রান্স বলছে
তারা তাদের স্বাভাবিক খেলাই খেলবে। এই ম্যাচটিকে নিয়ে তারা বেশি ভাবতে রাজি নয়। কারণ উত্তেজনা বাড়িয়ে আখেরে লাভের চেয়ে ক্ষতি হয় বেশি। তাছাড়া তারা ভালো মতোই জানে যে প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনা দলে একজনই আছে যিনি আলোচনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন সবসময়, ভেবে নিন সেই খেলোয়াড়টি কে হতে পারেন!
আর্জেন্টিনা বলছে
তারা একই একাদশ খেলাবে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে। তারা জানে কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে খেলতে হয়। সেটা তারা করে দেখিয়েছে নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে। জানান ম্যানেজার জর্জ স্যাম্পোলি। তবে তরুণ, ক্রীড়া নৈপুন্যে ভরপুর ও প্রতিভাবান খেলোয়াড়ে সমৃদ্ধশালী ফ্রান্স দলের বিরুদ্ধে আজ আর্জেন্টিনাকে তাদের আসল খেলাই খেলতে হবে।
জেনে রাখুন
গত সাতটি বিশ্বকাপের ম্যাচে ৭৫৭মিনিট ফ্রান্স দক্ষিণ আমেরিকার কোনও দলের বিরুদ্ধে গোল খায়নি। তারা শেষ গোল খেয়েছিল ব্রাজিলের কাছে। ব্রাজিলের হয়ে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে গোল করেছিলেন কারেকা।
যাঁরা হলুদ কার্ডের ফাঁসে
ফ্রান্সের করেন্তিন তোলিস্যো (জার্সি নম্বর-১২), পল পোগবা (জার্সি নম্বর-৬), ব্লাইসি মাতুইদি (জার্সি নম্বর-১৪)এবং আর্জেন্টিনার গ্যাব্রিয়েল মার্কাডো (জার্সি নম্বর-২), নিকোলাস ওতামেন্দি (জার্সি নম্বর-১৭), মার্কোস অ্যাকিউনা (জার্সি নম্বর-৮), জেভিয়ার ম্যাসচিরানো (জার্সি নম্বর-১৪), ইভার বানেগা (জার্সি নম্বর-৭) , লিওনেল মেসি(জার্সি নম্বর-১০)। আজকের ম্যাচে এঁদের কেউ হলুদ কার্ড দেখলেই পরের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে খেলার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে।
ফ্রান্সের পরিসংখ্যান
গত পাঁচটি বিশ্বকাপে ফ্রান্স শেষ ১৬-র ম্যাচে কখনও হারেনি। একমাত্র ১৯৩৪ সালে তারা খেলার অতিরিক্ত সময় ২-৩ গোলে পরাজিত হয়েছিল অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে।
তিনটি বিশ্বকাপে রাউন্ড ১৬ ম্যাচের প্রথমার্ধে ফ্রান্স কখনও গোল খায়নি।
কিলিয়ান এমবিঅ্যাপে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হতে পারে যিনি কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিপক্ষের জালে বল ঢুকিয়ে দিতে পারেন। এর আগে আমেরিকার জুলিয়ান গ্রিন চার বছর আগে বেলজিয়ামের গোল বল ঢুকিয়েছিলেন।
ফ্রান্সের ম্যানেজার দিদিয়ার দেশচ্যাম্পের সামনে থাকছে একটা অভূতপূর্ব সুযোগ-তা হল বিশ্বের তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ী দলের খেলোয়াড় যিনি ম্যানেজার হয়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন করার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারবেন। দেশচ্যাম্পে ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্স দলের অধিনায়ক ছিলেন।এর আগে এই সম্মান লাভ করেছেন ব্রাজিলের মারিও জাগালো। তিনি খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জেতেন ১৯৫৮ ও ১৯৬২ এবং ম্যানেজার হিসেবে জেতেন ১৯৭০ সালে।জার্মানির ফ্রাঞ্জ বেকেনবাউয়ারও খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জেতেন ১৯৭৪ সালে। ম্যানেজার হিসেবে জেতেন ১৯৯০ সালে।
আর্জেন্টিনার পরিসংখ্যান
একটি উয়েফা দল প্রতি বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে বিদায় নেওয়ানোর ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা নিয়ে থাকে।১৯৮৬ সাল থেকে এটা চলে আসছে। ২০০২ সালে তো তারা ইংল্যান্ড ও সুইডেনের পিছনে থেকে গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ করে।
লিও মেসি ও জেভিয়ার ম্যাসচিরানো এখন দিয়েগো মারাদোনার সঙ্গে একই সারিতে। এঁরা সকলেই ১২টি করে বিশ্বকাপের ম্যাচে জয়ী হয়েছে।
জর্জ স্যাম্পোলি যখন ২০১৪ সালে চিলির ম্যানেজার ছিলেন তখন আয়োজক দেশ ব্রাজিলের কাছে পেনাল্টিতে পরাজিত হয়েছিলেন শেষ ১৬-র ম্যাচে।
আর্জেন্টিনা গত ১৪টি নক-আউট পর্বের বিশ্বকাপের ম্যাচের মধ্যে আটটিতে জয়ী হয়।এর মধ্যে সব কটিতেই ৯০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর গোল পায় তারা। পাঁচটি পেনাল্টি ও বাকি তিনটি ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ে গোল পায় আর্জেন্টিনা।
ইউরোপের সেরা ক্লাবে খেলা আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়
মার্কোস রোজো (জার্সি নম্বর-১৬)-খেলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, নিকোলাস ওতামেন্দি (জার্সি নম্বর-১৭) খেলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে, লুকাস বিগলিয়া(জার্সি নম্বর-৫)খেলেন মিলানে, মার্কোস অ্যাকুনা(জার্সি নম্বর-৮)খেলেন স্পোর্টিং লিসবনে, জিওভেনি লো সেলসো (জার্সি নম্বর-২০)খেলেন প্যারিস সেন্ট জার্মেইনে, গঞ্জালো হিগুয়ান(জার্সি নম্বর-৯)খেলেন ইতালির জুভেন্তাসে, লিও মেসি(জার্সি নম্বর-১০)খেলেন বার্সিলোনায়, অ্যাঞ্জেল দি মারিয়া (জার্সি নম্বর-১১)খেলেন পিএসজি-তে, সের্গেই অ্যগুয়েরা (জার্সি নম্বর-১৯)খেলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে, পাওলো দিবালা (জার্সি নম্বর-২১) খেলেন জুভেন্তাসে।
ইউরোপের সেরা ক্লাবে খেলা ফ্রান্সের খেলোয়াড়
হুগো এল লরিস (জার্সি নম্বর-১)খেলেন টটেনহ্যামে, প্রেজনেল কিম্পেমবে (জার্সি নম্বর-৩) খেলেন পিএসজিতে, রাফায়েল ভারানে (জার্সি নম্বর-৪)খেলেন রিয়েল মাদ্রিদে, স্যামুয়েল উমতিতি(জার্সি নম্বর-৫)খেলেন বার্সিলোনায়, লুকাস হার্নান্ডেজ (জার্সি নম্বর-২১)খেলেন আটলাটিকো মাদ্রিদে, বেঞ্জামিন মেন্ডি (জার্সি নম্বর-২২) খেলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে, পল পোগবা (জার্সি নম্বর-৬)খেলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে, এন’গুলু কান্তে (জার্সি নম্বর-১৩) খেলেন চেলসিতে, ব্লাইসি মাতুইদি (জার্সি নম্বর-১৪) খেলেন জুভেন্তাসে, অ্যান্টনি গ্রিজম্যান (জার্সি নম্বর-৭) খেলেন আটলাটিকো মাদ্রিদে, অলিভার জিরাড (জার্সি নম্বর-৯)খেলেন চেলসিতে, এমবিঅ্যাপে (জার্সি নম্বর-১০)খেলেন পিএসজি-তে, উস্মানি ডিম্বেলে (জার্সি নম্বর-১১) খেলেন বার্সিলোনায়।
আসুম, তাহলে চোখ রাখা যাক টিভির পর্দায়।
Published on: জুন ৩০, ২০১৮ @ ১৭:১০