Published on: জানু ৩, ২০১৮ @ ১৩:২৩
এসপিটি ওয়াইল্ড লাইফ ডেস্কঃ তারা তিনজন কিশোর-কিশোরী। লেসার অ্যাডজুট্যান্ট স্টর্ক বা ক্ষুদ্র হাড়-গিলা সারস। কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্কের কাছে এক বন্যপ্রাণী পুনর্বাসন ও সংরক্ষণ কেন্দ্রে তাদের এখন চিকিৎসা চলছে। এখান থেকে সুস্থ হয়ে উঠেই তারা আবার তাদের যাত্রা শুরু করবে নিজেদের গন্তব্যের দিক। আইএফএডবল্যু-ডবল্যুটিআই এবং আসাম বন দফতরের বন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রে এখন চলছে তারই কর্মযজ্ঞ। গ্রিন হোপ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গত ৯ অক্টোবর নাগাও-কাজিরাঙার জঙ্গলে কাজ করার সময় এই তিনটি সারসকে দেখতে পায় খুব খারাপ অবস্থায়। তখনই তারা পাখি তিনটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।বন্যপ্রাণী পুনর্বাসন ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের পশু চিকিৎসক ডা. পানজিৎ বাসুমাতারে বলেন, জঙ্গলে যে গাছের ডালে তাদের বাসা ছিল সেটি ভেঙে পড়ায় তারা আস্রহীন হয়ে পড়েছিল।এখন তারা অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠছে।
পশু চিকিৎসক বাসুমাতারে বলছিলেন কিভাবে এই সারসগুলি তাদের জীবনধারার সঙ্গে আবারও নতুন করে নিজেদের গড়ে তুলছে। তিনি বলেন, বেঁচে থাকার ইচ্ছা সবার মধ্যেই আছে। আমার-আপনার এমনকী জঞগলের পশু-পাখি সকলের। এদের যখন খুব খারাপ অবস্থা তখন অদের বাসা ও জল শরীরের কাছেই ছিল।কিন্তু তবু তারা সেইসময় বড়ই অসহায় হয়ে পড়েছিল। তাই তারা নিজের থেকে কিছু করে উঠতে পারছিল না। দরকার ছিল একটু সাহায্য। যা আমরা অদের করছি। বাকিওটা সবই ওদের কৃতিত্ব। নভেম্বরের শেষ নাগাদ দেখতে পেলাম তাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি প্রকাশ হচ্ছে: তারা ঘরের ভিতর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তে সক্ষম হচ্ছে, নিজেদের পায়ের উপর ভর করে দাঁড়াতে পারছে এবং হাঁটতে পারছে এবং ঘোরাঘুরি করছে অনায়াসে। তারা ধীরে ধীরে তাদের শক্তি বাড়িয়ে এবং উড়ে যাওয়ার জন্য তাদের পাখা ছড়িয়ে দিতে শুরু করছে। এমনকী, আমরা লক্ষ করছি,তারা সনাক্তকরণের রিং দিয়ে সজ্জিত হইয়ে উঠছে, যা আমাদের অভিভূত করেছে। এদের চিকিৎসার দাইয়েত্বে ছিলেন ডা.পা্নজিৎ বাসুমাতারে ও ডা. সামশুল আলি। ১৬ ডিসেম্বর সারস তিনটিকে পানবাড়ি রিজার্ভ ফরেস্টের বন্যপ্রাণী পুনর্বাসন ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের খোলা জায়গায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
যদিও কিশোর সারসগুলি এখনও বন্যপ্রাণী পুনর্বাসন ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের থেকে মাছ সরবরাহের উপর নির্ভরশীল,তারা সমানে তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থান খোঁজার চেষ্টা করে চলেছে। তারা দিনের বেলায় প্রয়োজনীয় খাবারের খোঁজ চালিয়ে যায় এবং বন্যপ্রাণী পুনর্বাসন ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে রাতের বেলা একটি গাছে গিয়ে আশ্রয় নেয়,যা তাদের বন্যপ্রবৃত্তির একটি ভাল ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ডঃ আলী বলেন, “যখন তাদের দুই মাস আগে আমাদের কাছে আনা হয়েছিল তখন তাদের শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটপূর্ণ অবস্থায় ছিল”। তাদেরকে সুস্থ করে তোলার সময় তাদের সঠিক চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে সেইসময় অনেক চিন্তা-ভাবনা করতে হয়েছে। একবার তারা মাছ খেতে শিখতে পারলে এবং তাদের নিজস্ব খাবার খুঁজে পাওয়ার প্রবণতা এসে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা দেখতে পাব যে তারা বন্য অবস্থায় সফল জীবনযাত্রার পথে উড়ে যাবে। আমরা ধৈর্য ধরে সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।”
ছবি-ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া
Published on: জানু ৩, ২০১৮ @ ১৩:২৩