বাংলাকে ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে কেন্দ্রের বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Main কোভিড-১৯ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জুলা ১৫, ২০২১ @ ২০:৫৪
Reporter:Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৫ জুলাই:  বাংলার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার সদা সক্রিয় আছে। প্রয়োজনে রাজ্য সরকার প্রতিদিন ১০ লক্ষ কেন ২০ লক্ষ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে পারে, আমাদের হাতে এমনই লোকবল আছে। কিন্তু আমাদের যেখানে ১৪ কোটি ভ্যাকসিন প্রয়োজন সেখানে আজ আমরা পেয়েছি মাত্র ২ কোটি ১২ লক্ষ। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে সারা দেশের মধ্যে বাংলা সেরা হওয়া সত্ত্বেও আমদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে না। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন নিয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে বৃষ্পতিবার এভাবেই সরব হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

হেরেও লজ্জা নেই, নানা রকম চক্রান্ত করছে

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার নবান্নে ভ্যাকসিন নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন-“আমি আজ প্রধানমন্ত্রীর একটা বক্তৃতা শুনছিলাম। উত্তরপ্রদেশে গিয়ে উনি বলেছেন সব চেয়ে বেশি ইউপি-তে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। উনি ইউপি-কে বেশি দিন আমার আপত্তি নেই। সব মানুষই একই মানুষ। যেহেতু বিজেপি আছে বলে সেখানে আপনি বেশি দেবেন আর বাংলাকে আপনি সব সময় টাকা দেবেন না পয়সা দেবেন না বন্যার ত্রাণের টাকা দেবেন না খরার ত্রাণে টাকা দেবেন না ভ্যাকসিন ঠিক মতো দেবেন না এ তো অন্যায়। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করে বাংলার নামে বদনাম করে বেরাচ্ছে। এ তো হার হেরেও লজ্জা নেই। কিছুতেই হার মেনে নিতে পারছে না। নানা রকম চক্রান্ত করছে।”

রাজ্যে পজিটিভ রেট ১.৫ শতাংশ

মমতা বলেন- ” রাজ্যে কোভিড পজিটিভ কেস ৮০০-৯০০’র মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে। আমরা চেষ্টা করব আরও কমানো। অন্যান্য রাজ্যে এটা বাড়ছে। কারণটা বুঝতে পারছি না। পজিটিভ রেট বিধানসভা নির্বাচনের সময় যেদিন অষ্টম পর্যায়ের নির্বাচন হয়েছিল তখন তা ছিল ৩৩ শতাংশ। আর আজ সেটা ১.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এজন্য আমি রাজ্যের সমস্ত জেলা, পুরসভা, পঞ্চায়েত, জেলাপরিষদ, স্বাস্থ্য দফতর, পুলিশ প্রশাসন সকলে ধন্যবাদ জানাব।”

সুস্থতার হার এ রাজ্যে ৯৮ শতাংশ

“সুস্থতার হার এ রাজ্যে ৯৮ শতাংশ। আমরা ইতিমধ্যেই ২.৫ কোটি মানুষকে কোভিড টিকা দিয়েছি। প্রথম ডোজ দিয়েছি আমরা ১.৮ কোটি মানুষকে। দ্বিতীয় ডোজ দিতে পেরেছি আমরা ৭০ লক্ষ মানুষকে। এছাড়াও ৫১ লক্ষ সুপার স্প্রেডারদের দিয়েছি।”

দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে সারা দেশে আমরাই কিন্তু সেরা হয়েছি-মুখ্যমন্ত্রী

“ভ্যাকসিন আমাদের প্রয়োজন ১৪ কোটি। আপনারা জানেন এটার জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা বাজেট রেখে কেন্দ্র সরকার বলেছিল যে ভ্যাকসিনটা আমরা দেব। অর্থাৎ তা কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় আসবে। কিন্তু তা আমরা পাচ্ছি না। দরকার আমাদের ১৪ কোটি অথচ আজ পর্যন্ত আমরা পেয়েছি ২.১২ কোটি।” বলেন  মুখ্যমন্ত্রী।

এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলতে থাকেন- “আমরা নিজেরাও কিনেছি ১৮ লক্ষ ভ্যাকসিন ৬০ কোটি টাকা দিয়ে।বাদবাকি প্রাইভেট কিনেছে। আমরা কিন্তু প্রতিদিন ১০ লক্ষ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে পারি। মনে রাখবেন, দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে সারা দেশে আমরাই কিন্তু সেরা হয়েছি। অনেক রাজ্যকে বেশি টাকা দেওয়া হচ্ছে কোনও রাজ্যকে দেওয়াই হচ্ছে না।”

ভ্যাকসিনই তো আসছে না

“আমরা তো সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১২ বছর পর্যন্ত যেসব শিশু আছে তাদের মায়েদের আগে ভ্যাকসিন দেব। কিন্তু ভ্যাকসিনই তো দিচ্ছে না। এই মাসেও স্বাস্থমন্ত্রী বলেছেন নাকি ৭৫ লক্ষ ভ্যাকসিন দিচ্ছে কিন্তু পেয়েছি মাত্র ২৫ লক্ষ।” এই তথ্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন- “এই অবস্থায় আমি আজকেও কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছি যে আমাদের রাজ্যকে ভ্যাকসিন দেওয়া হোক। আসলে ওদের কথায় আর কাজের মধ্যে অনেক ফারাক। ভ্যাকসিন এ রাজ্যে অনিয়মিত। কোনওদিন আসছে কোনও দিন আসছেই না। মাঝে তো সাতদিন ভ্যাকসিন আসেই নি। ঠিক আছে মাসে আপনারা দু’কোটি করে তো দিন । তাহলেও ছ’মাস লেগে যাবে।”

উত্তর পাই বা না পাই আমার চিঠি আমি লিখে যাব- মুখ্যমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখা নিয়ে নিজের অভিমান প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন- “আমি আজকেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। হয়তো এর উত্তর আমরা পাব না। কারণ এর উত্তর আমরা কোনওদিনই পাই না। তবু আমার দায়িত্ব বিষয়টা প্রধানমন্ত্রীর নজরে নিয়ে আসা। উত্তর পাই বা না পাই আমার চিঠি আমি লিখে যাব।”

Published on: জুলা ১৫, ২০২১ @ ২০:৫৪


শেয়ার করুন