Published on: জুলা ১৪, ২০১৮ @ ১৮:১০
এসপিটি স্পোর্টস ডেস্কঃ এক মাস আগেও এই দেশটির নাম বহু মানুষ জানতেন না। ক্রোয়েশিয়া ইউরোপের একটি দেশ, এই তথ্য কিছু মানুষের জানা থাকলেও বাকি অনেক কিছুই সকলেরই প্রায় অজানা রয়ে গেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র ২৭ বছরের মধ্যে একটি দেশ যে এভাবে ফুটবলের বিশ্ববিখ্যাত দু’টি দেশ আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ডকে ধরাশায়ী করে ফাইনালে পৌঁছে যাবে প্রতিযোগিতা শুরুর আগে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। অথচ বিশ্বের এক ছোট্ট দেশ ক্রোয়েশিয়া সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাল। তারা এখন এক স্বপ্ন রাজ্যের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছে। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা-তারপর ছবিটা সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।তার আগে জেনে নেওয়া যাক এই দেশটির সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। আসুন দেখে নেওয়া যাক এই পাঁচটি তথ্য।
তথ্য ১- দেশটির জন্ম ১৯৯১ সালে
অনেকেই ভাবছেন, এ আবার কি ব্যাপার-১৯৯১ সালে এই দেশটির কোনো অস্তিত্ব ছিলই না। তাহলে তখন এ দেশটির মানুষজন কোথায় বাস করত? যথার্থ প্রশ্ন। এর আগে ক্রোয়েশিয়া দেশটির অংশ যুগোশ্লাভিয়ার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৯১ সালের জুন মাসে তারা ঐ দেশ থেকে নিজেদের আলাদা করে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। তখন জন্ম হয় ক্রোয়েশিয়ার।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য এই দেশটির জনসংখ্যা বর্তমানে ৪০ লাখের কিছু বেশি। সারা বিশ্ব যতগুলি দেশ আছে সেইসব দেশের জনসংখ্যা হিসেব করলে যা দাঁড়াবে সেই অনুযায়ী ক্রোয়েশিয়ার স্থান ১৩০ নম্বরে। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই দেশটিতে কত কম সংখ্যক মানুষের বাস।
রোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকেই এই ক্রোয়েশিয়ার অস্তিত্ব থাকলেও বর্তমানে যে ক্রোয়েশিয়া দেশটির জন্ম হয়েছে সেই দেশটির অস্তিত্ব কোনও দিনই ছিল না।
তথ্য ২- দেশটির তিনভাগের এক ভাগ অরণ্য
প্রকৃতি যেন দেশটিকে তার নিজের মতো করে সাজিয়ে দিয়েছে। সত্যি, বিশ্বকাপে এমন চমকে দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স করার জন্য আজ আমরা এই দেশটি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারছি। না হলে এসব তথ্য হয়তো আমাদের সকলের কাছে অজানাই থেকে যেত।
বিশ্বব্যাঙ্কের হিসেব অনুযায়ী এই দেশটি তিন ভাগের এক ভাগ এলাকা জুড়েই আছে অরণ্য। দেশটিতে এমন এমন অরণ্য আছে যেখানে এতটুকু আঁচড় লাগেনি। আছে অপূর্ব সব পার্ক ও লেক। যেখানে নেমে নিরিবিলতে সাঁতার কাটতে পারবেন আর পারবেন প্রকৃতিকে নিজের মতো উপভোগ করতে।
এখানে আছে আটটি জাতীয় পার্ক। আর আছে অসাধারণ সব লেক যার মধ্যে অন্যতম প্লিৎভিচ লেক। এইটি দেশের বৃহত্তম লেক। রাষ্ট্রসংঘের বিজ্ঞান ও শিক্ষা বিভাগ এই এলাকাকে হেরিটেজ বলে ঘোষণা করেছে।সত্যি ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে এরপর ক্রোয়েশিয়া অবশ্যই হতে পারে এক উল্লেখযোগ্য ডেস্টিনেশন।
তথ্য ৩-বিখ্যাত ডালমাশিয়ান কুকুর এই ক্রোয়েশিয়ারই
কুকুরপ্রেমীদের কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হয়ে উঠতে পারে। এরপর যদি এই ডালমাশিয়ান কুকুরের চাহিদা বেড়ে যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আসলে এই কুকুরের জন্ম এই ক্রোয়েশিয়াতেই। সারা বিশ্বে এই ধরনের কুকুর আর কোথাও পাওয়া যায় না। সাদা চামড়ার উপর কালো কালো ছোপ। দেখতে ভারী সুন্দর। ক্রোয়েশিয়ার ডালমাশিয়া অঞ্চলেই এই কুকুরের দেখা পাওয়া যায়। তাই এলাকার নাম অনুসারেই কুকুরের নামকরন হয়েছে ডালমাশিয়ান ডগ।
ষোড়শ শতাব্দীর পেইন্টিং ও গির্জার ক্রিনিকালেও এই কুকুরের ছবি দেখতে পাওয়া যায়।
তথ্য ৪-গেম অফ থ্রোন্সের শহর ডুব্রোভনিক এই ক্রোয়েশিয়াতেই
গেম অফ থ্রোন্স সিনেমাটি কি আপনি দেখেছেন, না দেখে থাকলে এবার দেখে নিতে পারেন। কারণ, এই অ্যাডভেঞ্চার মূলক সিনেমাটির চিত্রায়ন করা হয়েছিল এই ক্রোয়েশিয়াতেই। আর সেই শহরটি হল ডুব্রোভনিক। গেম অফ থ্রোন্স আদতে এক কল্প রাজ্য। যেখানে আছে অসংখ্য ড্রাগন আর হোয়াইট ওয়াকার। তবে এটা স্বপ্নের কোনও জগৎ নয়। কারণ, এর অস্তিত্ব আছে যেন ক্রোয়েশিয়ারই একটি ছোট্ট শহর ডুব্রোভনিকেই। এই শহরেই আছে প্রাচীনকালের ঐতিহ্যবাহী গথিক ও রেনেসাঁ গির্জা। আছে অপুর্ব সব নৈসর্গিক সব দৃশ্য। তার উপর গেম অফ থ্রোন্স সিনামার পর এই শহরে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। এবার যে তা আরও বাড়বে সে বিষয়ে দ্বিমত থাকতে পারে না।
তথ্য ৫- ক্রাভাত টাই-ও কিন্তু এই ক্রোয়েশিয়ারই
ক্রোয়েশিয়ায় এই বিশেষ ধরনের টাই-এর নাম ক্রাভাত। পরা হয় গলার চারপাশে। সপ্তদশ শতাব্দীতে ‘থার্টি ইয়ার্স ওয়ার’-এর সময় ফরাসি সেনাবাহিনীতে ক্রোয়েশিয়ানরা তাদের গলায় এভাবে একধরনের কাপড় টাই-এর মতো করে জড়িয়ে রাখতেন। সেই রীতি আজও অব্যাহত আছে। প্রতি বছর ১৮ই অক্টোবর এই দিনটিকে পালন করে থাকেন ক্রোয়েটরা। তারা এদিন গলায় একইভাবে এই ক্রাভাত টাই পরে দিনটিকে স্মরণ করেন। সূত্রঃ বিবিসি
Published on: জুলা ১৪, ২০১৮ @ ১৮:১০