SANGBAD PRABHAKAR TIMES: পক্ষপাতিত্ব কিংবা তোষামোদ নয় বৈচিত্র্যপূর্ণ সংবাদ পরিবেশনই আমাদের লক্ষ্য

উত্তর সম্পাদকীয় দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • সংবাদ প্রভাকর টাইমস মুখে নয় সংবাদ পরিবেশনে অভিনবত্ব আনার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
  • খুব সাধারণ মানের সংবাদ যদি অন্য কোথাও আগে প্রকাশিত হয়ে যায় সেই সংবাদ আমরা আর প্রকাশ করব না।
  • আমরা পাঠকের কাছে রোমঞ্চকর, অভিনব সংবাদ পরিবেশন করব রাজ্যের অন্য কোনও সংবাদ মাধ্যমে থাকবে না।
  • নেতা-নেত্রীদের গালাগালি আর এলাকার খুনোখুনি আর একে অপরের সমালোচনা মূলক ঘটনাকে সংবাদ প্রভাকর টাইমস কোনও সংবাদ বলেই মনে করে না।
  • আমরা মনে করি সংবাদ হোক স্বচ্ছ, বাস্তবতায় পরিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, আকর্ষণীয়।
  • আমাদের কাছে উৎসবের খবর মানে সাধারণ একজন নাগরিকের অভিনব কিছু করা প্রচারের পিছনে থাকা সেইসব অখ্যাত নাম না জানা শিল্পী-কুশলীদের প্রচারের সামনের সারিতে নিয়ে আসা।

প্রধান সম্পাদক: অনিরুদ্ধ পাল

Published on: অক্টো ২৭, ২০১৯ @ ২১:৩০

এসপিটি: সর্বাধিক প্রচারিত কাগজে প্রথম পাতায় ছয় কলম জুড়ে প্রকাশিত হয়েছে সংবাদটি। সঙ্গে দিয়েছে ছবিও। অফিসে ঢুকতেই বড়-মেজো-ছোটো সব সাংবাদিক দাদাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল সেদিন আমাকে। কেন আমি খবরটি পেলাম না। এত বড় খবর কিভাবে আমি মিস করলাম। কারণ, অন্য প্রায় সব কাগজেই সংবাদটি প্রকাশ করেছিল তাদের সম্পাদকীয় নীতি মেনেই।পারিনি শুধুমাত্র আমরাই। হ্যাঁ মানছি, সেদিন আমি খবরটি পাইনি। এর দায় আমি স্বীকার করে নিয়েছিলাম। তবে, সেদিন আমার মনে একটা প্রশ্ন জেগেছিল যে শুধুমাত্র এই সংবাদ না পাওয়ার জন্য কি সেদিন “আমাদের” সংবাদ প্রতিদিন সংবাদপত্রের বড় রকমের ক্ষতি হয়ে গেছিল? না, এর জবাব সেদিন আমি পাইনি। তবে পরবর্তীকালে আমি নিজের সাংবাদিক কর্মজীবনের মধ্য দিয়ে এর জবাব পেয়েছিলাম। বুঝেছিলাম একটা খবর মিস করে যাওয়াটা যতটা দুর্ভাগ্যের কিংবা অপরাধের তার চেয়ে বেশি আনন্দের এবং অনেক বেশি সাফল্যের হল- একটি ব্যতিক্রমী কিংবা দুর্লভ খবর পাঠকের সামনে তুলে ধরা। এই বোধ আসার পর আরও বুঝেছিলাম সেই সাংবাদিক ভালো সংবাদ পরিবেশন করার পরও তাঁকে তাঁর যোগ্য সম্মান না দেওয়াটা হল সেই সংবাদপত্রের আরও বড় অপদার্থতা। আর এজন্যই আজ পশ্চিমবঙ্গের বহু বাংলা সংবাদপত্র পাঠকের মন থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। তারা যতই এবিসি সার্কুলেশন রিপোর্ট পেশ করুক না কেন আদতে পাঠক সংখ্যা আগের চেয়ে অনেকখানি কমে গেছে।

যে দিকে নজর দেবে সংবাদ প্রভাকর টাইমস

  • পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে আজ আমি এই সম্পাদকীয় লিখতে বসে একটা কথা পরিষ্কার করে পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে চাই- সংবাদ প্রভাকর টাইমস মুখে নয় সংবাদ পরিবেশনে অভিনবত্ব আনার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। খুব সাধারণ মানের সংবাদ যদি অন্য কোথাও আগে প্রকাশিত হয়ে যায় সেই সংবাদ আমরা আর প্রকাশ করব না। বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে নানা রাজনৈতিক দলের মারামারি-খুনোখুনি-দলাদলি এসমস্ত সংবাদ। যারা এ ধরনের সংবাদ পড়তে চান তাদের জন্য অন্য অনেক সংবাদ মাধ্যম আছে। কেউ কেউ খুব সাধারণ মানের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী হয়েও খবরের শিরোণাম হতে চান। এর আগে আমরাও সেরকম কিছু মানুষের খবর প্রকাশ করেছি। আমরা বুঝেছি এবং আমাদের কাছে পাঠকের মতামত এসেছে, তারা অনুরোধ করেছেন- এধরনের মানুষের রাজনৈতিক ব্যক্তির খবর যেন প্রকাশ না করা হয়। তাদের ছবি যেন ফলাও করে না বের করা হয়। আমরা তাদের প্রতি সম্মান রেখেই তাদের মতামতকে শিরোধার্য করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে সংবাদ প্রভাকর টাইমস আর এই ভুল দ্বিতীয়বার করবে না।
  • আমার পূর্ব কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আরও একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে অন্য সংবাদমাধ্যমে যে খবরই প্রকাশিত হোক না কেন তা নিয়ে আমরা হা-হুতাশ করব না। সংবাদ প্রভাকর টাইমস চলবে একেবারে তাদের মতো করে তাদের নিজস্ব ঢঙে-নিজস্ব রীতি মেনে-নিজস্ব চিন্তাধারা অনুসারে। আমরা পাঠকের কাছে এমন কিছু সংবাদ প্রতিদিন তুলে ধরবো যে খবর রাজ্যের অন্য কোনও সংবাদ মাধ্যমে থাকবে না। আমরা তুলে ধরব রাজ্য-দেশ-বিশ্বের নানা প্রান্তের অভিনব সেই সমস্ত সংবাদ যা মানুষ পড়ার পর তৃপ্ত হবে।

যা আমরা সংবাদ বলেই মনে করি না

নেতা-নেত্রীদের গালাগালি আর পাড়ার খুনোখুনি আর একে অপরের সমালোচনা মূলক ঘটনাকে সংবাদ প্রভাকর টাইমস কোনও সংবাদ বলেই মনে করে না। আর তাই এখন থেকে সেই সমস্ত সংবাদ আমাদের পাতায় কেউ যেন আশা না করে। এর ফলে আমাদের সাইট যদি কম মানুষ লাইক করে কিংবা দেখে তাও আমরা মাথা পেতে স্বীকার করে নেব।খবর মানে শুধু এক জিনিস নিয়ে সারাদিন ধরে ঘ্যানঘ্যানানি আর প্যানপ্যানানি নয়।ওসব আমাদের দ্বারায় হবে না।

সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকায় কাজ করার সময় আমি বেশ কয়েকজন প্রথিতযশা সাংবাদিককে অভিভাবক হিসেবে পেয়েছিলাম। যাদের কাছ থেকে আমি কাজ শিখেছিলাম। যাদের মধ্যে সর্বাগ্রে চলে আসবেন অঞ্জন বসু। সেইসময় তিনি পত্রিকার কার্যনির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার সামলেছিলেন এবং পত্রিকার শ্রীবৃদ্ধি ঘটিয়েছিলেন। তিনি শিখিয়েছিলেন একজন সাংবাদিকের বিচারধারা কেমন হতে হয়। সংবাদ পরিবেশনের সময় তাকে কোন কোন দিকের উপর নজর দিতে হয়।বিশেষ করে একজন সাংবাদিককে নির্লোভী হতে হয়। কখনোই প্রলোভনের ফাদে যেন সে পা না দেয়। কারণ, সাংবাদিকের সামনে প্রলোভন আসবেই আর তাতে পা দিলেই সেই সাংবাদিকের সমস্ত শিক্ষা, অধ্যবসায়, রীতি-নীতি সব জলাঞ্জলী দিতে হবে। তাই সেদিকে সর্বদা সতর্ক থাকা উচিত। আজ যা ভয়াবহ আকার নিয়েছে।পকেটে গরমেন্ট অ্যাক্রিডেটেশন কার্ড বা সরকারি সাংবাদিক পরিচিতিপত্র কিংবা নামে আর ভারে পরিচিত সংস্থার প্রেস কার্ড গলায় ঝুলিয়ে কিছু খবর করলেই সাংবাদিক হিসেবে সম্মান পাওয়া যায় না।

নানা দিকের নানা ধরনের সংবাদ তুলে ধরছি

আমি স্বীকার করছি যে সংবাদ প্রভাকর টাইমস এখনও পর্যন্ত সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি। সেই সঙ্গে এটাও দাবি করছি যে আমরা বাজারের সস্তা খবর- যেমন কোনও নেতা-প্রাক্তন মন্ত্রী পরস্ত্রীর হাত ধরে দল বদলাচ্ছে আবার তা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে প্যানপ্যানানি করছে কিংবা কোনও বর্তমান কিংবা প্রাক্তন আইপিএস-কে নিয়ে প্রতি মুহূর্তের নানা ঘটনা এমন আরও কত কী! আমাদের সাইটে যেমন আমরা বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য, বন্যপ্রাণ, ভ্রমণ, রেল, বিমানের মতো নানা দিকের সংবাদ পরিবেশন করছি ঠিক তেমনই আমরা বিশ্বের নানা দেশের অভিনব বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সংবাদ আমরা পাঠকের সামনে তুলে ধরছি।

সাহিত্যকেও আমরা জুড়তে চলেছি

আমরা মনে করি সংবাদ হোক স্বচ্ছ, বাস্তবতায় পরিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, আকর্ষণীয়। আর কখনো কখনো যদি সেই সংবাদ রোমঞ্চকর হয়ে তাহলে তো ভালোই হয়। আমরা আগামিদিনে পাঠকের জন্য নিয়ে আসতে চলেছি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ- সাহিত্য। আমরা চেষ্টা করব সেখানে ভিন্ন ধর্মী কিছু ব্যতিক্রমী সাহিত্য উপযোগী লেখা সেখানে তুলে ধরতে। পাঠকের কাছেও আমাদের আবেদন থাকবে আপনারা লেখালেখি করে থাকেন তারাও ইচ্ছে করলে আমাদের কাছে লেখা পাঠাতে পারেন। নির্বাচিত লেখা অবশ্যই আমরা প্রকাশ করব।

এ আমাদের কাছে এক মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ

উৎসবের খবর মানেই লোকজনের ভিড় নয়, সেলিব্রিটিদের ঢাক পেটানো নয়, নেতা-মন্ত্রীদের দাপাদাপি নয় আমাদের কাছে উৎসবের খবর মানে সাধারণ একজন নাগরিকের অভিনব কিছু করা প্রচারের পিছনে থাকা সেইসব অখ্যাত নাম না জানা শিল্পী-কুশলীদের প্রচারের সামনের সারিতে নিয়ে আসা তাদের পরিশ্রমের কাহিনি শোনানো, ছোটো-ছোটো ছেলে-মেয়েদের সৃষ্টিশীলতাকে তুলে ধরা। বিশ্বে প্রতিনিয়ত এখন হরেক রকমের ঘটনা ঘটে চলেছে। সেইসব ঘটনার বেশিরভাগই কিন্তু সব আড়ালে চলে যাচ্ছে কৌশলগতভাবে। একটা অপরাধ কিংবা রাজনীতির খবরের চেয়ে কোনও নতুন আবিষ্কারের খবর সংবাদ মাধ্যমের শিরোণামে খুব বেশি জায়গা পায় না। বিশ্বজুড়ে নানা বিভাগের বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সৃষ্টিশীল ব্যক্তিরা কত কিছুই না প্রতিনিয়ত আবিষ্কার কিংবা সৃষ্টি করে চলেছেন তার কটা খবর সংবাদ মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই বলতে পারেন? আজ সময় এসেছে এই সমস্ত বিষয়কে তুলে ধরার। এ আমাদের কাছে এক মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। সংবাদ প্রভাকর টাইমস নিজের সাধ্য মতো সেই প্রয়াস চালিয়ে যাবে। এই অঙ্গীকার করছি আপনাদের সামনে। সকল পাঠক-পাঠিকা এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের জানাই শুভ দীপাবলীর প্রীতি ও শুভেচ্ছা। সঙ্গে থাকুন আর চোখ রাখুন আমাদের পাতায়।

Published on: অক্টো ২৭, ২০১৯ @ ২১:৩০


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

62 − = 54