HELP ME : পেটের জ্বালায় রাস্তার ফুটপাথকেই করেছেন ছবির ক্যানভাস

এসপিটি এক্সক্লুসিভ রাজ্য
শেয়ার করুন

কলকাতার রাস্তায় এমন অনেক প্রতিভাধর শিল্পীদের দেখা মিলবে যারা এভাবেই ভিক্ষার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

সংবাদ প্রভাকর টাইমস চায় এধরনের সংবাদ বেশি করে প্রকাশিত হোক। আপনাদের এমন কিছু অগোচরে থাকলে জানান আমাদের।

 Published on: আগ ১৯, ২০১৯ @ ২৩:০৯

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৯ আগস্ট: উপরের এই ছবিটা আমাদের সমাজের আসল ছবি তুলে ধরতে সাহায্য করেছে।কিভাবে আমাদের এমনসব প্রতিভা ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলেছে এই ছবি বলে দিচ্ছে তার জ্বলন্ত প্রমাণ। কোথায় ? না কলকাতার একেবারে প্রাণকেন্দ্র এসপ্লানেডে ওবেরয় গ্র্যান্ড হোটেলের একেবারে সামনে। যেখান দিয়ে চলেছে কত ধরনের মানুষ। এক প্রতিভাধর শিল্পী আজ পেটের জ্বালায় শেষে কিনা রাস্তার ফুটপাথকে ক্যানভাস বানিয়ে সেখানে ‘হেল্প মি’ লিখে ছবি এঁকে ভিক্ষা করছেন। আর আমরা তাঁকে ১০-২০ টাকা ছুঁড়ে দিয়ে দয়া করছি। কলকাতার রাস্তায় এমন অনেক প্রতিভাধর শিল্পীদের দেখা মিলবে যারা এভাবেই ভিক্ষার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

আমরা চাই এ ধরনের সংবাদ বেশি করে প্রকাশিত হোক

সংবাদ প্রভাকর টাইমস দফতরে কলকাতার এক নাগরিক এই ছবি পাঠিয়ে অনুরোধ করেছেন যদি এ সম্পর্কে একটি সংবাদ পরিবেশন করা সম্ভব হয় তাহলে খুব ভাল হয়।আমরা তাঁর অনুরোধ রক্ষা করে এই বিষয়ে সংবাদ তুলে ধরলাম আমাদের পাঠকের সামনে। আমরা চাই আমাদের পাঠকরাই বিচার করবেন এ ধরনের সংবাদের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে। আমরা চাই এধরনের সংবাদ বেশি করে প্রকাশিত হোক। আপনাদের এমন কিছু অগোচরে থাকলে জানান আমাদের। আমরা তাদের কথা তুলে ধরব।

কিভাবে এঁকে চলেছেন তিনি

প্রতিভাবান এই শিল্পীর নাম-ঠিকানা প্রেরক কিছুই দিতে পারেননি। তাই আমরাও শিল্পীর নাম দিতে পারলাম না- এজন্য আমরা দুঃখিত।তবে নাম না পেলেও এই শিল্পীর প্রতিভার বিকাশ তো আমরা দেখতে পাচ্ছি। ছবিতে দেখা গেছে শিল্পীর বয়স খুব বেশি নয়। অর্থের অভাবে তিনি হয়তো আজ এভাবে দিন কাটাচ্ছেন। পেটের জ্বালা যে বড় জ্বালা – এ জ্বালা সইতে ক’জন পারে বলতে পারেন? আর তাই কিছু রঙিন চক পেন্সিল হাতে নিয়ে ওবেরয় গ্র্যান্ড হোটেলের সামনেই রাস্তার ধারে ফুটপাথ ঘেঁষে নিজের মতো করে ক্যানভাস বানিয়ে নিয়েছেন। আর সেখানেই আপন মনে বসে মহাদেবের ছবি এঁকে চলেছেন। জটাজুটধারী ভগবান শিবের অসাধারণ ছবি এঁকেছেন। আর তার উপরে নীচে-পাশে ইংরাজি অক্ষরে লিখছেন ‘হেল্প মি’।এক দিকে রাখা আছে তার ঝোলা ব্যাগ আর একটি জলের বোতল।  এ থেকে বোঝা যায় শিল্পীর ইংরাজি বর্ণমালা সম্পর্কেও তাঁর জ্ঞান আছে।আমরা জানি না তিনি কতদূর পড়াশুনো করেছেন।তবে তিনি যে শিক্ষিত যুবক তা বেশ বোঝা যাচ্ছে।

ভিক্ষার পয়সায় চলে ক্ষুধাবৃত্তি

নন্দন কিংবা অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস কিংবা নামিদামি বেশ কিছু আর্ট গ্যালারিতে নানা ধরনের ছবি প্রদর্শনী হয়ে থাকে। সেখানে ছবিগুলি চড়া দামে বিক্রিও হয়ে যায় কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের এই প্রতিভাধর শিল্পীর। যার ছবির কদর পায় না থুড়ি বলা ভাল কদর করতে জানে না এই সমাজ তথাকথিত সুশীল সমাজ। এইসব হারিয়ে যেতে বসা ধ্বংসের পথে চলে যেতে থাকা প্রতিভাধর শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কেউ এগিয়ে আসে না। তারাও নিজের জন্য কিছু চায় না। ফুটপাথে ছুঁড়ে দেওয়া ভিক্ষার পয়সায় চলে তাদের ক্ষুধাবৃত্তি।

এ আমাদের লজ্জা

ভাবতে অবাক লাগে- যেসব সংবাদপত্রে উঠে আসে ‘সেলিব্রিটির বিয়ের খবর’, ‘অভিনেত্রীর গর্ভবতী হওয়ার খবর’ সেখানে স্থান হয় না এই সমস্ত প্রতিভাধর শিল্পীদের অসামান্য প্রতিভার খবর। সত্যি, এ আমাদের সমাজের লজ্জা। এ আমাদের সংবাদ মাধ্যমের লজ্জা। এ আমাদের গুণীর কদর করতে না পারার লজ্জা।

Published on: আগ ১৯, ২০১৯ @ ২৩:০৯

 

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 1 = 6