
ঐতিহ্যবাহী পানিহাটির চিড়াদধি মহোৎসব ৫০৯ তম বছরে পড়ল
Published on: জুন ৭, ২০২৫ at ১৯:৫০
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৭ জুন : প্রতি বছরের মতো এবারও পানিহাটির চিড়াদধি দন্ড মহোৎসব পালিত হতে চলেছে। এবার এই মহোৎসব আয়োজিত হচ্ছে ৯ জুন। তবে এটি শুধু পানিহাটি নয় ইসকনের প্রধান কেন্দ্র শ্রীধাম মায়াপুর সহ বিশ্বের সমস্ত শাখাকেন্দ্রে এই মহোৎসব পালিত হবে। তবে সবচেয়ে বড় উল্লেখযোগ্য চিড়াদধি দন্ড মহোৎসব পালিত হয় আমেরিকার আটলান্টা শাখাকেন্দ্রে। ইসকন পানিহাটির শ্রী শ্রী গৌরনিতাই মন্দিরে ৫ জুন বৃহস্পতিবার ২০২৫ থেকে ৯ জুন সোমবার ২০২৫ এই ৫ দিন ধরে চিড়াদধি মহোৎসব বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপিত হবে।
ইসকন মায়াপুরের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস জানান, দেশ বিদেশের বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লক্ষ লক্ষ মানবের মিলন ক্ষেত্র, মিলন মেলায় পরিণত হয় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পদরজ বিজরিত এই তীর্থক্ষেত্র পানিহাটি। সমগ্র বিশ্বে ইসকনের প্রতিটি কেন্দ্রে এই “পানিহাটি মহোৎসব” মহাসমারোহে উদযাপিত হয়। শ্রীধাম মায়াপুর চন্দ্রোদয় মন্দিরেও পানিহাটি দন্ড মহোৎসব মহাসমারোহে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদার সাথে পালন করা হবে।
এই উৎসবের মাহাত্ম্য কি?
এই প্রশ্নের জবাবে ইসকন মায়াপুর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিশদে জানিয়েছে। এই দন্ড (শাস্তি) দিয়েছিলেন শ্রীমন নিত্যানন্দ প্রভু ১৫১৪ খ্রিস্টাব্দ তথা ৯২১ বঙ্গাব্দে বিশ লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা মাসিক আয় সমন্বিত হুগলি জেলার অন্তর্গত শ্রীকৃষ্ণপুরের জমিদার গোবর্ধন মজুমদারের একমাত্র পুত্র শ্রীচৈতন্যপার্ষদ রঘুনাথ দাস গোস্বামীকে। দন্ডটি ছিল শ্রীশ্রী নিত্যানন্দ-গৌরাঙ্গের ভক্তদের চিড়াদধি ভোজন করানো।
কোন অপরাধে, কেন এই দন্ড দিয়েছিলেন?
অপরাধটি ছিল শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর আশীর্বাদ না নিয়ে রঘুনাথ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপা লাভ করার প্রয়াস লাভ করেছিলেন। অত্যন্ত আনন্দের সাথে তিনি এই দন্ড গ্রহণ করেছিলেন। আজ থেকে ৫০৯ বছর আগে বিশাল সমারোহে রঘুনাথ “চিড়া-দধি” মহোৎসবের আয়োজন করেছিলেন। তখন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সন্ন্যাসীবেশে পুরীধামে থাকলেও নিত্যানন্দ প্রভুর আহ্বানে এই অপ্রাকৃত মহোৎসবে তাঁর দিব্য স্বরূপে যোগদান করে নিত্যানন্দ প্রভুর শ্রীহস্ত থেকে ভোগ গ্রহণ করেছিলেন। রঘুনাথ দাস লক্ষ লক্ষ ভক্তদের “চিড়া-দধি” প্রসাদ বিতরণ করেছিলেন। কয়েকজন পার্ষদ ছাড়া শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর এই দিব্যলীলা অন্যরা দর্শনের সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি।
জনসংযোগ আধিকারিক বলেন- “সেই ঐতিহ্য স্মরণ করে প্রতি বছর জৈষ্ঠ শুক্লা ত্রয়োদশীতে গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদহে গঙ্গাতটে বিশাল বটবৃক্ষের স্নিগ্ধ সুশীতল ছায়ায় আজও এই উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই উৎসব স্তিমিত করে দেয় হিংসা-দ্বেষ এর বাতাবরণকে, আবদ্ধ করে দেয় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রেম-শৃঙ্খলে।জাতি,ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লক্ষ লক্ষ মানবের মিলন ক্ষেত্র,মিলন মেলা এই উৎসব। আজও সমগ্র বিশ্বে ইসকনের প্রতিটি কেন্দ্রে এই “পানিহাটি মহোৎসব” মহাসমারোহে উদযাপিত হয়। শ্রীধাম মায়াপুরে পতিতপাবনী গঙ্গা মন্দিরে মহাসমারোহে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদার সঙ্গে এই উৎসব পালন করা হয়।“
Published on: জুন ৭, ২০২৫ at ১৯:৫০