সারা দেশের কাছে এ এক আদর্শ উদাহরণঃ সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্র গড়ে তুলেছেন শালবনীর এই “সন্ন্যাসীমাতা”

Main ধর্ম রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল                                                      ছবি-বাপন ঘোষ

এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ১৮ জানুয়ারিঃ এ সময় যেটা খুব প্রয়োজন সেটাই করে দেখিয়েছে শালবনীর সাতপাটি অঞ্চলের পাড়ুআয়সা এলাকার বাসিন্দারা। যেখানে হিন্দু-মুসলমান- খ্রিস্টান থেকে শুরু করে অন্য ধর্মেরও মানুষ জমায়েত হন। সকলেই মঙ্গলকামনা করেন। সম্প্রীতির মেলবনব্ধন ঘটান তারা। আর এটা সম্ভব করেছেন গ্রামের দেবী “সন্ন্যাসীমাতা”। যাকে সকলে বামুনবুড়ি নামেই চেনে। বছরের পর বছর ধরে এখানে সব ধর্মের মানুষ তাঁর পুজোয় মেতে ওঠেন। যা সারা দেশের কাছে এক আদর্শ উদাহরণ হয়ে উঠেছে আজ।

শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে এই সন্ন্যাসীমাতার পুজো। এই উপলক্ষ্যে শুরু হয়েছে মেলাও। এই পুজো ও মেলার দায়িত্বে রয়েছেন হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের মানুষজন। যা এক দৃষ্টান্ত স্বরূপ।

অনেকেই ভাবছেন- কে এই সন্ন্যাসীমাতা? আসলে ইনি হলেন বাংলার এই প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের আরাধ্যদেবী। যার কাছে পৌঁছনোর জন্য কোনও বামুন পুরোহিতের মাধ্যম লাগে না। এই আরাধ্যদেবীকে গ্রামের সব ধর্মের মানুষ নিজের সাধ্য অনুযায়ী পুজো দিয়ে থাকেন। যেমনটা হয় মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহে। পুজোয় কোনও ফলমূল লাগে না। এই পুজোতে সকলে মাটির তৈরি মালসায় চিড়ে আর বাতাসা দিয়ে সাজিয়ে সন্ন্যাসীমাতার কাছে প্রার্থণা করেন। সেটাই পুজো হিসেবে সন্ন্যাসী মাতা গ্রহণ করে থাকেন। বলছিলেন পুজো ও মেলা কমিটির সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ মাহাতো ও সভাপতি বিমল মাহাতো ও পুজো ও মেলা কমিটির অন্যতম সদস্য শেখ রাসেদ, শেখ কুরবান ও শেখ আনোয়াররা।

তারা আরও বলেন- এই পুজোয় নেই কোনও ব্রাহ্মণ, হয় না তন্ত্রো-মন্ত্রোচ্চারণ, পুজোর নৈবেদ্য মানুষ নিজের সাধ্যমতো অর্পন করে তা প্রসাদ হিসেবে নিয়ে যান। এটাই রীতি এই পুজোর। এখানে সব ধর্মের মানুষ হাতে হাত মিলিয়ে এই উৎসবে মেতে ওঠেন। ধর্ম যার যার- উৎসব সবার। সত্যিই এখানে না এলে বোঝা যাবে না গ্রামের এই মানুষগুলি যে স্মপ্রীতির যে নিদর্শন তুলে ধরেছেন তা এক বিরল নজির হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে সর্বসমক্ষে। এই উৎসবের আনন্দ নিতে মেদিনীপুর থেকেও এসেছেন বহু মানুষ। আজ প্রথমদিনে লক্ষধিক মানুষের সমাগম নজর কেড়েছে।


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 5 = 3