মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দৃষ্টিহীনের আর্তিঃ আমাদের বাঁচান, না হলে পরিবার নিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু করার অনুমতি দিন

রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল                                     ছবি-বাপন ঘোষ

Published on: আগ ৫, ২০১৮ @ ২২:৫৬

এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ৫ আগস্টঃ শারীরিক ভাবে এমনিতেই সক্ষম নন তিনি। ঠিক মতো হাঁটাচলা করতে পারেন না। হুইল চেয়ারই সম্বল। অবলঅম্বন ছিল দুটি চোখ। কিন্তু ভুল চিকিৎসা তাঁর সেই চোখ কেড়ে নিয়েছে। ছাত্র পড়িয়ে সংসারের যেটুকু আয় হত আজ এই অবস্থায় সেই রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনাহারা-অর্ধাহারে কাটছে আরেফুল মল্লিকের জীবন।বাধ্য হয়ে তিনি আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন।

কেশপুর থানার আমুড়িয়ার লাঙ্গডিহি গ্রামের বাসিন্দা আরেফুল মল্লিকের জন্ম থেকেই দুটি পা বিকলাঙ্গ। তাঁর ডান চোখের সমস্যার জন্য গত বছর দাসপুরের এক নার্সিংহোমে ডাক্তার অক্ষয় দাসের কাছে চিকিৎসা করান। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, এই সময় তাঁর চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এরপর থানা-পুলিশ করেন। অভিযোগ দায়ের করেন অভিযুক্ত চিকিৎসক অক্ষয় দাসের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করে। পরে তিনি আবার জামিনে ছাড়াও পেয়ে যান।

এইসমস্ত কথা লিখে আরেফুল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লেখেন। যে চিঠিতে নিজের অসহায়তা প্রকাশ করেন আরেফুল।

লেখেন-“আমি এখনও কলকাতায় আরআইও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিভাবে আমার পরিবারের সংসার খরচ এবং চিকিৎসা খরচ চলবে? কারণ আমি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী।পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন পড়িয়ে এবং রত্না শিশু শিক্ষা কেন্দ্র বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে সংসার চালাতাম। বিগত ১০ মাস যাবৎ আমার পরিবারের আশপাশের লোকজনের দয়াদাক্ষিণ্যে কোনওরকমে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছি। আমার পরিবারের সদস্য বলতে ৬জন। এক স্ত্রী, ২ বছরের নাবালিকা শিশু কন্যা ও ৮ বছরের নাবালক পুত্র এবং অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা-মা। তাঁরা সকলেই আমার উপার্জনের উপর নির্ভরশীল। না আছে কোনও জমি, না আছে কোনও জায়গা, আছে কেবল বাবার নামে এক কাঠা বাস্তু তার উপর ছোট মাটির ঝুপড়ি।আমাদের এই অসহায় নিঃস্ব পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য কেশপুর ব্লকের বিধায়ক শিউলি সাহা, পঞ্চায়েত সমিতির সভাধিপতি শুভ্রাদি, ব্দল্ক সভাপতি সঞ্জয় পান এবং শালবনীর বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাত থেকে জেলাশাসকের কাছে দ্বারস্থ হয়েও প্রশাসনিকভাবে কেউ আমাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি।আজ আমার চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর উপার্জনের পথ একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

আপনি আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে আমার দুধের শিশু সহ পরিবারটির মুখে অন্ন তুলে দিতে পারব। অন্যথায় আমি ও আমার দুই শিশু সহ ছয়জনের পরিবার স্বেচ্ছায় মৃত্যুগ্রহণ করার জন্য আপনার অনুমতি কামনা করি। এছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই।”

Published on: আগ ৫, ২০১৮ @ ২২:৫৬


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 9 = 18