মায়াপুর ইসকন মন্দিরে চন্দনযাত্রা উৎসব, এর ইতিহাস জানেন

Main দেশ ধর্ম ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: মে ২, ২০২৪ at ২৩:৫৫

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২ মে: বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়াকে অক্ষয় তৃতীয়া বলা হয়। অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিকবিশ্বাসঅনুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভ কার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। এই শুভ দিনে জন্ম নিয়েছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম । বেদব্যাস ও গণেশ এই দিনে মহাভারত রচনা আরম্ভ করেন। এদিনই সত্য যুগ শেষ হয়ে ত্রেতা যুগের সূচনা হয়। এই দিনটি বিশেষ মাহাত্ম্যপূর্ণ। এই দিন থেকে শুরু হয় চন্দন যাত্রা। ভক্তবৎসল ভগবান তাঁর ভক্তের সেবা গ্রহণ করে প্রভূত আনন্দ উপভোগ করেন। সেইজন্য পরমেশ্বর ভগবানের সর্বাঙ্গে চন্দন লেপন করা হয়।

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকামতে, এই বছর ১০ মে ২০২৪ শুক্রবার থেকে শুরু হবে চন্দন যাত্রা উৎসব। চলবে ২১ দিন ধরে। বিশ্বব্যাপী ইসকনের প্রতিটি মন্দিরে একযোগে এই উৎসব পালন করা হবে।

প্রায় পাঁচশত বছর আগে, পুরীধামের নরেন্দ্র সরোবরে শ্রীশ্রীরাধামদনমোহনকে নিয়ে চন্দনযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছিল। স্বয়ং শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভু ওই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে প্রভূত আনন্দ লাভ করেছিলেন। সেই ঐতিহ্য স্ম্রণ করে মায়াপুর ইসকনের প্রভুপাদ সমাধি মন্দির পুস্করিণীতে এই উৎসব মহাসমারোহে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে প্রতি বছর পালন করা হয়। দূর-বিদেশি ভক্তের সমাগম হয় মায়াপুর ইসকন মন্দিরে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়। রাধামাধবের চন্দনযাত্রা উৎসবকে কেন্দ্র করে সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে জাতিবর্ণ্নির্বিশেষে সমস্ত স্তরের মানুষের ভিড়ে যেন মিলন মেলায় পরিণত হয় মায়াপুর ইসকন। এক যোগে সামিল হন দেশ-বিদেশ, ধনী-দরিদ্র সহ সমাজের সমস্ত স্তরের জনসাধারণ।

শ্রীরাধামাধবকে চন্দ্রোদয় মন্দির থেকে বর্ণাঢ্য সংকীর্তন শোভাযাত্রা সহকারে নিয়ে আসা হয় সমাধি মন্দির পুস্ক্রিনীতে। সুসজ্জিত নৌকায় করে চলে সলিল বিহার, চলে প্রদক্ষিণ, চলে আরতি-কীর্তন, ভোগনিবেদন, ভজন ও নৃত্যগীত এবং সেইসঙ্গে চলে আগত দর্শনার্থীদের মদজ্যে বিনামূল্যে প্রসাদ বিতরণ। সমাধি মন্দির এবং পুস্করিণীর চারদিক ফুল ও আলোকমালায় সুসজ্জিত করা হয়।  কৃত্রিম ফোয়ারা চালু থাকে।

চন্দনযাত্রার পরিসমাপ্তিতে পুস্করিণীর তীরে রাধাকৃষ্ণকে সুসজ্জিত সিংহাসনে বসিয়ে দোল খাওয়ানো হয়। প্রতিদিন বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এই উৎসব চলে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য লক্ষাধিক টাকার চন্দন ব্যয় হয় এই উৎসবে। গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহ থেকে মুক্ত আকাশে বাতাসে, শান্তি, স্বস্তি এনে দেয় এই উৎসব সকলের মনেপ্রাণে।

Published on: মে ২, ২০২৪ at ২৩:৫৫


শেয়ার করুন