পাকিস্তানি ‘কিলার মাউন্টেন’ এ মৃত্যুর মুখ থেকে ফরাসি পর্বতারোহীকে উদ্ধার করে আনল পোল্যান্ডের এক পর্বতারোহী দল

বিদেশ ভ্রমণ
শেয়ার করুন

Published on: জানু ২৮, ২০১৮ @ ১২:০৬

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ  ভারতীয় পর্বতারোহীদের জন্য পাকিস্তানের পর্বতগুলিতে পর্বতারোহন বন্ধ থাকলেও বিশ্বের অন্য সমস্ত দেশের পর্বতারোহীদের কাছে তা খোলাই রয়েছে। কিন্তু সেসব পর্বতগুলি বড়ই সাঙ্ঘাতিক। এর মধ্যে বিপজ্জনক পর্ব হিসেবে দুর্নাম আছে নঙ্গা পর্বতের। যা “কিলার মাউন্টেন” নামে পরিচিত। আর বিদেশিরা কিন্তু সেই বিপজ্জনক পর্বতেই আরোহন করতে ভালবাসেন। যেমনটা ঘটেছে ফরাসি মহিলা পর্বতারোহী এলিজাবেথ রিভেলের ক্ষেত্রে।একটা সময় এমন হয়েছিল তিনি ফিরতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পোল্যান্ডের এক পর্বতারোহী দলের সাহায্যে তিনি প্রাণে রুখা পান। তারাই তাকে ২৬,৬৬০ফুট উউচতা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সূত্র ধরে জানা গেছে, দুই ফরাসি পর্বতারোহী এলিজাবেথ রিভেল এবং টমাস্ ম্যাকুইভিজ পাকিস্তানের নঙ্গা পর্বতে আরোহনের জন্য গেছিলেন।শুক্রবার প্রবল ঠান্ডা আর তুষারপাতের মধ্যে তাঁরা পর্বতের ৭,৪০০ মিটার অর্থাৎ ২৪ হাজার ২৪০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উঠে গেছিলেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর পরই আবহাওয়া বিরুদ্ধাচরন করা শুরু করে। প্রবল তুষারঝড়ের মুখে পড়ে তাঁরা সেখানে আটকে পড়েন।

এরপর তাঁরা আর এগোতে পারছিলেন না। কি করবেন ভেবেও উঠতে পারছিলেন না। বিপদ তখন তাদের পিছু তাড়া করা শুরু করে দিয়েছে। ঐ অবস্থায় তাঁরা তাঁদের স্যাটেলাইট ফোন থেকে সাহায্যের জন্য বলতে থাকে। কিন্তু পরিস্থি তখন এতটাই ভয়ানক হয়ে উঠেছে যে তাঁদের কাছে যে কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে সেই সুযোগও ছিল না। ফলে ওই অবস্থায় অপেক্ষা করা ছাড়া তাঁদের আর কিছুই করার ছিল না।

চারিদিকে তখন বরফে ঢেকে গেছে। সমানে চলছে তুষারঝড়।গুরুতর অবস্থায় ম্যাকুইভিজকে দেখা গেছিল। আর বরফে ঢাকা পড়ে ঠকঠক করে কাঁপছিলেন রিভেল। ঐ অবস্থায় তিনি নিজের শরীরকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনি ভালোমতোই জানতেন, এক জায়গায় পড়ে থাকা মানে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা। যদি বাঁচতে হয়ে তবে তাঁকে অন্য কোনও তাঁবুর দিকে এগোতেই হবে। সেই কথা ভেবে ওই অবস্থায় বিপদের ঝূঁকি নিয়েই তিনি পোলিশ তাঁবুর দিকে এগোতে থাকেন।

শনিবার নঙ্গা পর্বতের উপর দিয়ে যখন পাকিস্তানি সামরিক হেলিকপ্টার দল উড়ে যাচ্ছিল সেইসময় ৬হাজার ৭০০ মিটার উঁচুতে তারা রিভেলকে দেখতে পায়। রিভেল একটি টেক্সট বার্তা পাঠিয়ে বলেন, “আমি নিচে যাচ্ছি, আগামীকাল দয়া করে হেলিকপ্টার পাঠিও।”

এরমধ্যে অভিজাত পোলিশ পর্বতারোহী দলটি যখন পাকিস্তানের কে-টু পর্বতের কাছাকাছি চলে এসেছিলেন এবং সেখানে ওঠার চেষ্ঠা করছিলেন তখন তারা তারা তাদের নিজস্ব পর্বতারোহন বন্ধ করে দিয়ে উদ্ধার কার্যে যোগদান করেন।কারণ, তাঁরা বুঝে যান, তাঁদের পরবতারোহনের একজনের জীবনের দাম অনেক বেশি।তাই তাঁরা দেরি করেননি সিদ্ধান্ত নিতে। তাঁরা দূর থেকে দেখতে পান অনেক উঁচুতে দাঁড়িয়ে একজন সাহায্যের জন্য আকুতি জানাচ্ছে। এগিয়ে যান রিভেলের দিকে।পোলিশ পর্বতারোহীরা অবশেষে ৮,১২৬ মিটার অর্থাৎ ২6,660 ফুট উচ্চতার নঙ্গা পর্বত থেকে রিভেলকে অবশেষে খুঁজে পান।

স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন রিভেল। ফেসবুকে সেকথা পোলিশ পর্বতারোহী দলটি জানিয়েছেও সেকথা। তবে তাঁরা ম্যাকুইভিজের ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেনি। তাঁর অনুসন্ধান বন্ধ করা হয়েছে।সূত্রঃ এএনআই

Published on: জানু ২৮, ২০১৮ @ ১২:০৬

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

90 − 87 =