চিত্তোরগড় ভ্রমণ: মহারানা প্রতাপের দুর্গ থেকে বীর যোদ্ধাদের স্মৃতিধন্য এই স্থান পর্যটকদের নজরে

Main দেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

 Published on: ডিসে ২৬, ২০২০ @ ১৮:৪৩
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ:   ইতিহাসের পাতা ওল্টালে সামনে চলে আসে কত না কাহিনি। রাজস্থান ভ্রমণে এমন কত না স্থান রয়েছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবো। এর মধ্যে চিত্তোরগড়ের কথা অবশ্যই বলতে হয়। একসময় এই শহর ছিল মেবারের রাজা মহারানা প্রতাপ সিং-এর রাজধানী। এখানে অবস্থিত দুর্গটি দেখার মতো যা মহারানা প্রতাপের দুর্গ এবং জওহরের দুর্গ নামেও পরিচিত। কোভিড মহামারীর কালে রাজস্থান পর্যটন এই জায়গাকে সামনে নিয়ে এসেছে পর্যটকদের জন্য।জন্য।রাজস্থান পর্যটন এই স্থানকে নিয়ে এক আকর্ষণীয় ট্যুইট করেছে।

চিত্তোরগড় নিয়ে প্রচলিত কাহিনি

চিত্তোরগড় একটি নাইটদের শহর যা পাহাড়ের উপরে নির্মিত দুর্গের জন্য বিখ্যাত। তবে এই শহর কত প্রাচীন তা বলা কঠিন, তবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে মহাভারতের আমলে মহাবলি ভীম অমরত্বের রহস্য জানতে এই স্থানটি পরিদর্শন করেছিলেন এবং একজন পণ্ডিতকে তাঁর গুরু করেছিলেন। যদিও গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হওয়ার আগে তিনি অধৈর্য হয়ে পড়েছিলেন। শেষপর্যন্ত তিনি তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন নি এবং প্রচণ্ড ক্রোধের বশে তিনি তার পা শক্ত করে মাটিতে আঘাত করেছিলেন। ফলে জলের উত্স ফেটেছিল, সেখান থেকে জল বেরিয়েছিল। এজন্য এখানে সরোবরটিকে ভীম তাল বলা হয়। পরবর্তীকালে এই জায়গাটি মৌর্য রাজবংশের অধীনে এসেছিল। মেবার শাসকদের অধীনে কবে থেকে এই শহর এসেছে সে সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছ।  তবে রাজধানী উদয়পুরে নেওয়ার আগে 1568 সাল পর্যন্ত চিত্তোরগড় মেবারের রাজধানী ছিল। এখানে মৌর্য্যবংশীয় জাটরা দীর্ঘকাল রাজত্ব করেছিলেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে শেষ সোলঙ্কি রাজকন্যাকে বিয়ে করার পরে গুলিয়া বংশী বাপ্পা রাওয়াল চিত্তোরকে যৌতুকের অংশ হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।  পরে তাঁর বংশধররা মেবার শাসন করেন যা গুজরাট থেকে আজমির পর্যন্ত 16 শতাব্দী অবধি বজায় ছিল।

চিত্তোরগড় কোথায় অবস্থিত

ভারতের রাজপুতনার বিখ্যাত চিত্তোরগড় দুর্গটি চিত্রোড়গড় জংশন থেকে প্রায় 2 মাইল উত্তর-পূর্বে একটি পৃথক পাহাড়ের উপরে নির্মিত হয়েছে, এটি আজমির থেকে খান্ডোবা যাওয়া রেলপথের মাঝেই অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 1337 ফুট উঁচুতে অবস্থিত 500 ফুট উঁচু পাহাড়ে নির্মিত এই দুর্গটি প্রায় 3 মাইল দীর্ঘ এবং আধা মাইল প্রশস্ত। পার্বত্য সার্কেলটি প্রায় 8 মাইল এবং মোট 609 একর জমিতে অবস্থিত।

বীরভূমি চিত্তোরগড়

চিত্তোরগড় হ’ল বীরত্বপূর্ণ ভূমি যা সমগ্র ভারতের সামনে বীরত্ব, দেশপ্রেম এবং ত্যাগের এক অনন্য উদাহরণ উপস্থাপন করেছিল। এখানে অগণিত রাজপুত নায়করা তাদের দেশ ও ধর্ম রক্ষার জন্য এক অবর্ণনীয় মাজারে গা ভাসিয়েছিলেন। একই সঙ্গে, রাজপুত নায়িকারা, বহুবার তাদের শিশু ও বাচ্চাদের নিয়ে নিজেদের সত্ত্ব রক্ষার জন্য জোহরের অগ্নিতে প্রবেশ করেছিলেন এবং তাদের আদর্শ বানিয়েছিলেন। এই গর্বিত দেশপ্রেমিক যোদ্ধাদের দ্বারা পরিপূর্ণ এই জমি সমগ্র ভারতের অনুপ্রেরণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে আমাদের মধ্যে দেশপ্রেমের ঢেউ তৈরি করে। এখানে প্রতিটি ভবন আমাদের ঐক্যের লক্ষণ ফিটিয়ে তোলে।

এই দুর্গটি ইতিহাসের নানা উত্থান-পতন দেখেছিল, এটি ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের সাক্ষী। এর তিনটি দুর্দান্ত বিবরণ এবং বেশ কয়েকটি বীরত্বপূর্ণ কাজ াজও স্মরনীয় হয়ে আছে, যা এখনও স্থানীয় গায়কদের দ্বারা গাওয়া হয়।

দ্রষ্টব্য স্থান

চিত্তোরগড়ে অনেক কিছু দেখার আছে।এখানে আছে পদ্মিনীর প্রাসাদ, খাতন রানীর প্রাসাদ, কালী মাতার মন্দির, সূর্যকূণ্ড, গোমুখ কূণ্ড, সোমেশ্বর মহাদেব মন্দির, বিজর স্তম্ভ, জটাশঙ্কর দেবালয়, মীরাবাঈ-এর মন্দির, মহারানা কুম্ভের প্রাসাদ, মোতি বাজার, আল্লা কাওড়ার প্রাসাদ আরও কত কী।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

সারা বছরই আপনি এখানে ঘুরতে যেতে পারেন। তবে উপযুক্ত সময় হল অক্টোবর থেকে মার্চ মাস। শীতকালে এখানে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ 28 ডিগ্রি থেকে সর্বনিম্ন 5 ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে।

কলকাতার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হিঙ্গলজ দন রত্নু যা বললেন

পশ্চিমবঙ্গে রাজস্থান পর্যটনের অফিস আছে কলকাতায়। সেখানে দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হিঙ্গলজ দন রত্নু জানান, কোভিড মহামারীতে সারা বিশ্বে পর্যটন শিল্পে প্রভাব পড়েছে। রাজস্থানও তার থেকে বাদ যায়নি। তবে আমাদের রাজস্থান পর্যটন থেকে দেশের সমস্ত প্রান্তের পর্যটকদের সমস্ত কোভিড বিধি মেনে তাদের ভ্রমণের জন্য আম্ন্রণ জানানো হচ্ছে। আপনারা সকলে আসুন। আমরা আপনার জন্য সব্রকমভাবেই প্রস্তুত আছি।রাজস্থান পর্যটন বিকাশ নিগম সবরকমভাবেই দায়িত্বশীল।

Published on: ডিসে ২৬, ২০২০ @ ১৮:৪৩


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 + 1 =