সংবাদদাতা– কৃষ্ণা দাস
Published on: অক্টো ১১, ২০১৮ @ ২৩:৩২
এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি, ১১ অক্টোবরঃ সমস্যা আজকের নয়। দীর্ঘদিনের। কিন্তু তা যে পূরণ হবার নয় সেটা এতদিনে বুঝে গেছেন শিলিগুড়ির কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা।না হলে প্রতিমা গড়েও তাদের এখন দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়তে হয়। কিভাবে কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা মণ্ডপে পৌঁছবে তা নিয়ে জট পাকিয়েছে। সরু রাস্তা দিয়ে প্রতিমা বের করা সমস্যা হয়ে যাবে বলে মৃৎশিল্পীরা প্রশাসনের কাছে আর্জি, রেল পুলিশ ফাঁড়ির রাস্তাটা খুলে দিলে এই সঙ্কট দূর হতে পারে, মা দুর্গাও তাহলে তাঁর সন্তানদের নিয়ে নির্বিঘ্নে পৌঁছতে পারবেন মণ্ডপে।
শিল্পী অরূপ পাল বলেন, সাধারণত বেশিরভাগ ক্লাবগুলি পঞ্চমীর দিন বিকেলের পর প্রতিমা নিতে আসে। অথচ কুমোরপাড়ার রাস্তা সরু ও একটি পথই প্রবেশ ও প্রস্থানের হওয়ায় অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। শুধু শিল্পীদের নয়, যারা প্রতিমা নিতে আসেন তাদেরও প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়৷ একটা হিসেব দিয়ে তিনি বলেন, এই কুমোরপাড়ায় প্রায় ১৯টা ঘর রয়েছে। প্রতিটি ঘর থেকে পঞ্চমীর দিন ১২ টা থেকে ১৫ টা করে প্রতিমা বিভিন্ন জায়গায় যায়। এক একটা প্রতিমা নিতে তিন থেকে চারটি ট্রাক দরকার। সেক্ষেত্রে প্রচুর গাড়ি একসাথে এই কুমোরপাড়ায় আসে। সেখানে রাস্তা মাত্র একটা ও বেশ সরু। একটা গাড়ি গেলে আর একটা গাড়ি আসতে পারে না। তিনি জানান, সামনের জিআরপির রাস্তাটা আগে খোলা থাকায় গাড়িগুলো ওদিক দিয়ে বের হত। কিন্তু গত তিন বছর হল জিআরপির রাস্তাটা বন্ধ করে দিয়েছে। আর তার ফলে পঞ্চমীর দিন মারাত্মক যানজটের সৃষ্টি হয়।
গত আড়াই বছর আগে রাজ্য সরকারের সহায়তায় পুরসভা থেকে পাকা ঘর তৈরি করে দেবার জন্য কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। সেই অর্থের সাথে আরও কিছু অর্থ যুক্ত করে পাকা ঘর তৈরি করেছে কুমোরপাড়ার প্রায় ১৯জন মৃৎশিল্পী। দিনরাত এক করে কেউ ২৩টা কেউবা আবার ৩০টা, কেউ ১৯টা দুর্গা প্রতিমা গড়েছেন এবার। তাদের এই প্রতিমা শিলিগুড়ি তো বটেই সংলগ্ন জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কার্শিয়াং কালিম্পং সহ ভিন জেলা ও রাজ্য সিকিম ও মেঘালয়েও যায়।
এ বছর ইতিমধ্যেই সিকিম, গ্যাংটক ও মেঘালয়েও প্রতিমা পৌছে গেছে। শিলিগুড়ি সহ পার্শবর্তী এলাকায় প্রচুর নেপালি বসবাস করে। তারাও মা দুর্গা ও তাঁর সন্তানদের তাদের সংস্কৃতির পোষাকে দেখতে চান। সেই মতো বায়নাও করে গেছে অনেক ক্লাব। আর তাদের সেই চাহিদা অনুযায়ী প্রতিমাকে নেপালি পোষাকে সাজানোর ব্যবস্তাও চোখে পড়ে৷ তারাই এই পোষাক শিল্পীদের দিয়ে গেছে। তাই দুর্গা শুধু বাঙালির মা নন তিনি হয়ে উঠেছেন নেপালি সহ সমগ্র জাতিরও মা৷ তাই প্রায় প্রতিটি শিল্পীর ঘরেই দুটি কিংবা তিনটি দুর্গা প্রতিমা নেপালি পোষাকে সেজে উঠেছে।
Published on: অক্টো ১১, ২০১৮ @ ২৩:৩২