Published on: আগ ৬, ২০১৮ @ ২২:৫৪
এসপিটি নিউজ, বারাকপুর, ৬ আগস্টঃ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম যুগের একজন বিশিষ্ট নেতা ছিলেন রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ছিল তাঁর ৯৩তম প্র্যান দিবস। এদিন বারাকপুরে নিজ বাসভবনে রাষ্ট্রগুরুকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বিশিষ্ট জনেরা। তাঁর সমাধিস্থলে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট তপাদার, মহাদেবানন্দ কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর নারায়ণ কুমার সরকার, অভিজিৎ চক্রবর্তী, প্রদীপ মুখার্জী প্রমুখ।
১৯৯০ সালে রাষ্ট্রগুরুর ব্যারাকপুরের এই বাস ভবনটিকে হেরিটেজ বিল্ডিং ঘোষণা করা হয়। তার ইচ্ছাতেই গঙ্গার পারে তার গৃহের মধ্যে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় এবং পরে সমাধিস্থল হিসাবে সাজানো হয়। ১৯৯৫ সালে রাষ্ট্রগুরুর এই বাস ভবনটিতে মহাদেবানন্দ মহাবিদ্যালয়টি স্থানান্তরিত করা হয়।
তিনি ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রতিষ্ঠাতা। পরে এ দলটিকে নিয়ে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন। তাঁকে রাষ্ট্রগুরু সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল।তাঁর বাবা দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন সেইসময়ের একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড চলে যান। ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করেন। কিন্তু আইসিএস-এর চাকরি তাঁর বেশিদিন সয়নি। কাজে মন নেই। সময় দিতে পারছেন না এই অজুহাত দেখিয়ে সেইসময় চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাতে অবশ্য তাঁর তেমন ক্ষতি হয়নি। এই সময় তিনি ফের ইংল্যান্ড চলে গিয়েছিলেন। একজন স্বভাবজাত লেখক ও বাগ্মী হিসেবেও নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ইংরাজির অধ্যাপক হিসেবে প্রথমে মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন এবং পরে ফ্রি চার্চ কলেজে যোগ দেন। সব শেষে তিনি যোগ দিয়েছিলেন কলকাতায় রিপন কলেজে। যে কলেজের পরে নাম হয় সুরেন্দ্রনাথ কলেজ।
শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিক হিসেবেও নিজেকে মেলে ধরেছিলেন। ১৮৭৮ সালে তিনি বেঙ্গলি শিরোণামে একটি কাগজ সম্পাদনা শুরু করেন। যেখানে তিনি জাতীয় সংস্কৃতি, একতা, স্বাধীন্তা, মুক্তির বিষয়ে লিখতেন। জাতীয় কংগ্রেসকে শক্তিশালী করতে তিনি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ১৮৯৫ ও ১৯০৭ সালে তিনি দলের সভাপতিত্ব করেন।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে যখন সারা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল সেইসময় সুরেন্দ্রনাথ এর বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। তিনি স্বদেশী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। যদিও পরবর্তী সময়ে মতানৈক্যের কারণে ১৯১৮ সালে জাতীয় কংগ্রেস থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। ১৯২১ সালে তিনি নাইট উপাধিতে ভূষিত হন।
একসময়ে তিনি রাজা রামমোহন রায়ের নির্দেশিত সমাজ-ধর্ম বিষয়ক পুনর্জাগরণের অন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
১৯২৫ সালের ৬ই আগস্ট ৭৭ বছর বয়সে রাশট্রগুরু স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজ বাসভবনেই প্রয়াত হন।
Published on: আগ ৬, ২০১৮ @ ২২:৫৪