ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ – শ্রমিকের কাজ করে যিনি হয়ে উঠেছিলেন বিশ্বের মহান গোলকিপার

খেলা বিদেশ
শেয়ার করুন

Published on: মে ২৪, ২০১৮ @ ১৯:৫৯

এসপিটি স্পোর্টস ডেস্কঃ এমন অনেক ফুটবলার আছেন যাঁরা জীবনের প্রথম দিকে দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়েছেন। রাশিয়ার বিখ্যাত গোলকিপার ইভানোভিচ ইয়াসিন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের প্রবাদপ্রতিম গোলকিপারের তালিকায় অবশ্য চলে আসবে ইয়াসিনের নাম। যাঁকে জীবনের প্রথম দিকে ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকের কাজ করে পেটের ভাত জোগাড় করতে হয়েছে। পরে তিনি তাঁর মূল্য পেয়েছেন। রাশিয়ার বিশ্ব কাপ ফুটবল দলে স্থান করে নিয়েছিলেন।

১৯২৯ সালের ২২ অক্টোবর মস্কোর এক গরিব পরিবারে জন্ম হয় ইয়াসিনের। তাঁর বাবা-মা কারখানায় কাজ করতেন। তখন বিশ্বযুদ্ধের ফলে সারা পৃথিবী জুড়েই শুরু হয়ে যায় হাহাকার। ১২ বছরের ইয়াসিনকেও লেগে পড়তে হয় কারখানায় শ্রমিকের কাজে। তাড় যখন ১৮ বছর বয়স তখন সে এক মিলিটারি কারখানায় কাজ পায়।

ইয়াসিন খুব গরিব ছিলেন। অভাব-অনটনেই চলত দিন। বিশ্বযুদ্ধের ফলে তখন দেশ জুড়ে মন্দা শুরু হয়।  এসবের মধ্যেও ইয়াসিন ফুটবল খেলা ছাড়তে পারেননি। তিনি চালিয়ে গেছেন খেলা। এরই মধ্যে কারখানার ফুটবল দলে মিলে যায় স্থান।

এরপর মস্কোর বিখ্যাত ফুটবল ক্লাবের নজরে পরে যায় ইয়াসিন। তারা তাঁকে সুযোগ দেয়। ইয়াসিন সেখানে ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত খেলার সুযোগ পায়। এর পর তিনি জাতীয় দলের খেলার জন্য মুখিয়ে থাকেন। সেখানো মিলে যায় সেই সুযোগ। এরপর বাকি সব তো ইতিহাস। তার পর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ডায়নামো তাঁকে সারা জীবন তাদের ক্লাবে রেখে দেয় ।

১৯৫৪ সালে  ইয়াসিন প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন। তিনি তিনটি অলিম্পিক গেমসে অংশ নেন। তার পারফরম্যান্স মনে রাখার মতো ছিল। যদিও তাঁর দল কখনো কোনও শিরোপা পায়নি।  ১৯৫৮সালের বিশ্বকাপে তিনি প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেন। এটি ছিল তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ, যার ম্যাচগুলি আন্তর্জাতিকভাবে সম্প্রচারিত হয়েছিল। তিনি ১৯৬২ ও ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। ইয়াসিন কালো রঙের কাপড় পরে খেলতে নামতেন, এই কারণে তিনি ‘ব্ল্যাক স্পাইডার ম্যান’ নামেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৯০ সালে  তিনি পেটে ক্যান্সারের কারণে মারা যান। ৭৪টি আন্তর্জাতিক ও ৩২৬টি ক্লাব ম্যাচ খেলেছেন ইয়াসিন।

ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় সম্মানজনক পুরস্কার ‘ব্যালন ডি আর’ বিশ্বের একমাত্র গোলকিপার হিসেবে ইয়াসিন লাভ করেছিলেন ১৯৬৩ সালে। এছাড়াও তিনি জীবনে আরও এক বড় সম্মান লাভ করেছিলেন। ২০০২ সালে ফিফা যে স্বপ্নের বিশ্ব একাদশ গড়েছিলেন সেই দলে গো্লকিপার হিসেবে স্থান হয়েছিল ইয়াসিনের। ফুটবল জীবনে তিন ১৫০টি পেনাল্টি আটকে এক ইতিহাস তৈরি করে গেছেন বিশ্বের প্রবাদ প্রতিম এই রুশ গোলকিপার।

Published on: মে ২৪, ২০১৮ @ ১৯:৫৯


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + 3 =