
Published on: জুলা ১৩, ২০২১ @ ১৪:৫৩
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, নৈহাটি, ১৩জুলাই: মঙ্গলবার সকালে নৈহাটির জেলেপাড়ার পুকুর থেকে বৃদ্ধার মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। প্রাতঃভ্রমনে বেরিয়ে বৃদ্ধার মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে রহস্য। পুলিশ মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মৃতার নাম আরতি বিশ্বাস বলে জানা গিয়েছে। মৃত বৃদ্ধার গলার সোনার হার ও কানের দুল খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃদ্ধার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা শুরু করেছে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট।
Police have recovered the body of an old woman from a pond in Naihati this morning. Police are investigating how he died on a morning walk. https://t.co/e1ML8a860R pic.twitter.com/akMr0OED6H
— SANGBADPRABHAKARTIMES (@SANGBADPRABHAK2) July 13, 2021
প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথাও হয়েছিল বৃদ্ধার
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটে-পাঁচটা নাগাদ ওই বৃদ্ধা প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। তিনি থাকতেন নৈহাটির ৭বি বিজয়নগরে।এদিন ভোরে তিনি হাঁটতে হাঁটতে চলে আসেন ৭সি, বিজয়নগর এলাকায় জেলেপাড়ায়। ভোরে খুব বেশি লোকজন ছিল না। এর মধ্যে ভোরে পাড়ায় যে গুটি কয়েক লোকজন বের হন তাদের দু’একজনের সঙ্গে বৃদ্ধার কথাও হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তারাও ওই বৃদ্ধার গলায় সোনার হার কানের দুল দেখেছেন।কিন্তু তারপর তারা তাদের কাজে চলে যান। এরই কিছু সময় পর তারা জানতে পারেন পাড়ার পুকুরে একজনের মৃতদেহ ভাসছে।মুহূর্তে খবর ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে।
পুলিশ এসে মৃতদেহটি সনাক্ত করার কাজ করে
পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। মৃতদেহটি জল থেকে তোলার ব্যবস্থা করে। এরপর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বৃদ্ধার বাড়ির লোকজনকে খবর দেওয়া হয়। বাড়ি থেকে বৃদ্ধার দুই ছেলে ঘটনাস্থলে আসে। তারা মৃতদেহটি সনাক্ত করে। তারা জানায় যে এই বৃদ্ধা তাদেরই মা। এক ছেলে বলে ওঠে – মায়ের গলায় এভাবে ফাঁস কেন। আর গলায় যে সোনার হার ছিল সেটাই বা কোথায়? সব শুনে পুলিশ দুই ছেলেকে জানিয়ে দেয় যে তারা যেন মৃতদেহ স্পর্শ না করে। যা বলার তারা যেন থানায় গিয়ে জানায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হচ্ছে বলে পুলিশ তাদের জানিয়ে দেয়।
ছেলেরা পুলিশকে জানান- “গত কয়েকদিন ধরে মা খুব চুপচাপ থাকতেন।কারও সঙ্গে সেভাবে কথা বলতেন না। তাছারা উনি কড়নার সময় বাড়ির বাইরে না বেরোতে পেরে খুব বিরক্ত হতেন। ইদানীং তিনি ভোরে প্রাতঃভ্রমণে বেরোতেন। রোজকার মতো এদিনও বেরিয়েছিলেন। মায়ের গলায়, হাতে ও কানে সোনার জিনিস ছিল। কিভাবে এমনটা হল আমাদের জানা নেই।”
এই ঘটনার পর বৃদ্ধার মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে রহস্য। উঠছে বেশ কিছু প্রশ্ন-
১) এত ভোরে করোনা কালে বৃদ্ধা প্রাতঃভ্রমনে কেন নিজের পাড়া ছেড়ে অন্য পাড়ায় এসেছিলেন?এটা কি ছেলেরা জানতো?
২) শরীরে সোনার জিনিস নিয়ে এত ভোরে তিনি কেন বেরিয়ে এসেছিলেন?
৩) বৃদ্ধার গলায় শাড়ির ফাঁস কে লাগালো? তবে কি ফাঁস লাগিয়ে কেউ তার গলা ও কান থেকে সোনার জিনিসগুলি লুঠ করে জলে ফেলে দিয়েছিল?
৪) বৃদ্ধা কি মানসিক হতাশায় ভুগছিলেন?
৫) যদি বৃদ্ধা আত্মহত্যাই করতেন তাহলে গলা থেকে সোনার হার কিংবা কানের দুল থাকতো? তবে কি লুঠ করার সময় কেউ তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে পুকুরের জলে ঠেলে ফেলে দিয়েছিল?
৬) যাদের সঙ্গে বৃদ্ধার কথা হয়েছিল তার কয়েক মুহূর্তের মধ্যে এমন ঘটনার কোনও কিছুই তারা জানতে পারল না, এটা কিভাবে সম্ভব?
সব মিলিয়ে বৃদ্ধার মৃত্যুর রহস্য কিন্তু ক্রমশই জোরালো হয়ে উঠছে। পুলিশ অবশ্য এসব কিছুই খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে।
Published on: জুলা ১৩, ২০২১ @ ১৪:৫৩