ছত্তিশগড়ে স্বামী বিবেকানন্দ, প্রভু শ্রীরামকে নিয়ে অভূতপূর্ব পরিকল্পনা, পর্যটনে এক নয়া অধ্যায়

Main দেশ ধর্ম ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ১৬, ২০২৩ @ ২০:৫৮
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৬ জানুয়ারি: মাত্র ২২ বছর হয়েছে ছত্তিশগড় রাজ্যের বয়স। কিন্তু এরই মধ্যে তারা সারা দেশের মধ্যে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতায় কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির এক রোড-শো-এ অংশ নিতে এসে ছত্তিশগড় রাজ্যের সরকারি আধিকারিক ড. অনুরাধা দুবে সেকথাই উল্লেখ করে বলেন যে ছত্তিশগড় ২২ বছর ধরে উৎসাহ, উদ্দীপনা, সম্পদে ভরপুর এক রাজ্য হিসেবে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। রাজ্যের পর্যটন পলিসি নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি স্বামী বিবেকানন্দ ও প্রভু শ্রীরামকে নিয়ে ছত্তিশগড় সরকারের অসাধারণ পর্যটন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। যা সত্যিই ছত্তিশগড়ের পর্যটন মানচিত্রে এক নয়া অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছে।

ছত্তিশগড়ে স্বামী বিবেকানন্দের আন্তর্জাতিক মানের স্মারক

স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে ১২ জানুয়ারি কলকাতায় এই রোড-শো আয়োজিত হয়েছিল। তাই ড. অনুরাধা দুবে শুরুতেই বাংলার এই মনীষীর নাম উচ্চারন করে তাকে তাদের সরকারের কাজ নিয়ে আলোচনা করেন। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তিনি বলেন- “আজ স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন রাষ্ট্রীয় যুবদিবসের প্রেক্ষাপটে আপনাদের সকলকে বলতে চাই ১৮৭৭ সালে স্বামী বিবেকানন্দ ছত্তিশগড়ের বর্তমান রাজধানী রাইপুরে তিনি তার পরিবারের সাথে তিন বছর বসবাস করেছিলেন। তিনি যেখানে ছিলেন সেই সরোবরের নাম স্বামী বিবেকানন্দ সরোবর দেওয়া হয়েছে। আর যে ঘরে স্বামী বিবেকানন্দ তিন বছর তার পরিবারের সাথে ছিলেন সেই ঘরটিকে ছত্তিশগড় সরকার এক আন্তর্জাতিক মানের স্মারক হিসাবে নির্মাণ করার কাজ শুরু করেছে। খুব শীঘ্রই তা সকলের সামনে উন্মোচিত হতে চলেছে। আমি কলকাতায় আজ বলতে চাই যে ছত্তিশগড় রাজ্য খুবই দ্রুত এক উন্নত রাজ্য হিসাবে নিজেকে মেলে ধরতে চলেছে।”

রাম বন গমন পর্যটন পরিপথ নিয়ে জানালেন ড. অনুরাধা দুবে

এই রোড-শো এ রাম বন গমন পর্যটন পরিপথের নোডাল অফিসার জংযোগ প্রধান ডা. অনুরাধা দুবে বলেন- রাম বন গমন পর্যটন পরিপথ।এই বিষয়ে বলার জন্যে নিজেকে গৌরাবান্বিত মনে করছি। ছত্তিশগড় যা মাতা কৌশল্যার জন্মভূমি, বিশ্বে একমাত্র জায়গা যেখানে মাতা কৌশল্যার মন্দির আছে। ঠিক সেইভাবে ভগবান রামের কর্মভূমি ছত্তিশগড়কে মানা হয়। আপনারা পুরান, রামায়নে দন্ডকারণ্যের বিষয়ে শুনে থাকবেন , ছত্তিশগড়ে তা রয়েছে। প্রভু শ্রীরামের বনবাসের সাক্ষী হয়ে আছে। এই বনবাসের স্মৃতিকে জাগিয়ে রাখার জন্য আমাদের আগামী প্রজন্মকে জানানোর জন্য ছত্তিশগড় সরকার রাম বন গমন পর্যটন পরিপথ নাম করা হয়েছে।”

“প্রথম ধাপে সেটিকে নিয়ে আসা হয়েছে যেখানে মাতা কৌশল্যার মন্দির রয়েছে।তীর্থ স্থল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। শিবরিনারায়ন যেখানে মাতা শবরীর জন্মস্থল, কুলেশ্বর মহাদেবের মন্দির আছে। প্রভু শ্রীরাম কুলেশ্বর মহাদেবের স্থাপনা করেছিলেন। তুরতুলিয়া যেখানে লব-কুশের আশ্রম মানা হয়। যেখানে মহর্ষী বাল্মীকির আশ্রম আছে, যেখানে লব-কুশের জন্ম হয়েছিল। আমরা যদি এগিয়ে যাই তাহলে দেখতে পাব যেখানে সপ্ত ঋষির স্থান আছে। পুরানে উল্লেখ আছে যে শৃঙ্গী ঋষিকে রাজা দশরথ পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করার জন্য আহ্বান করেছিলেন। যজ্ঞের পর প্রভু শ্রীরাম ও তাঁর তিন ভাই-এর জন্ম হয়েছিল। এর আগে যদি যাই তাহলে জগদলপুরে চিত্রকূট দেখা যাবে। মনে করা হয় যে, নির্বাসনকালে অযোধ্যা থেকে প্রয়াগরাজ, চিত্রকুট সাতনা যাওয়ার সময় ভগবান রাম দক্ষিণ কোশল অর্থাৎ ছত্তিশগড়ের কোরিয়া জেলার ভরতপুরে পৌঁছেন এবং মাওয়াই নদী পার হয়ে দণ্ডকারণ্যে প্রবেশ করেন। যা মার্চ মাসের মধ্যে সম্পুর্ণ হয়ে যাবে।” যোগ করেন ড. দুবে।

ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল সূচনা করেন

ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, মাতা কৌশল্যার জন্মস্থান চাঁদখুরিতে ৭ অক্টোবর ২০২১-এ উচ্চাভিলাষী রাম বন গামন ট্যুরিজম সার্কিটের প্রথম ধাপের কাজের সূচনা করেছিলেন। রাজ্য সরকার প্রায় ১৩৯ কোটি রুপি বরাদ্দ করার পরিকল্পনা করছে এই বহুস্তরীয় উদ্যোগে। রাম বন গামন প্রকল্পের অধীনে শিবরিনারায়ণ মন্দিরে উন্নয়নমূলক কাজ সমাপ্তির জন্য শিবরিনারায়ণে ৮ এপ্রিল ২০২২-এ একটি তিন দিনব্যাপী জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এখনও অবধি, সরকার ৭৫টি স্পট চিহ্নিত করেছে যা ভগবান রাম ছত্তিশগড়ে তার নির্বাসিত বছরগুলিতে ভ্রমণ করেছিলেন।

রাজ্য সরকারের লক্ষ্য ২০২২ সালের শেষ নাগাদ বা ২০২৩ সালের মাঝামাঝি এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়টি সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথম পর্যায়ের অধীনে, পরিকাঠামো উন্নয়ন, পুনরুদ্ধার এবং সৌন্দর্যায়নের জন্য ৯টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে।

Published on: জানু ১৬, ২০২৩ @ ২০:৫৮


শেয়ার করুন