এসপিটি নিউজ, পুরুলিয়াঃ উন্নয়নের মঞ্চ থেকে ফের বিজেপিকে সহবত শেখালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সোমবার পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকাসার পর আজ পুরুলিয়ার কোটশিলা। ৩০ হাজার মানুষের হাতে পরিষেবা তুলে দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন কেন তাঁর সরকার মা-মাটি-মানুষের সরকার। তিনি বুঝিয়ে দিলেন বাংলার মানুষই তাঁর শক্তি, বাংলার মানুষই তাঁর গর্ব, বাংলার মানুষই তাঁর সবকিছু। বাংলা-বাঙালির অপমান তিনি কোনঅদিন মেনে নেননি আর ভবিষ্যতেও মেনে নেবেন না।রাজস্থানে কাজ করতে গিয়ে মালদহের এক যুবকের যে নৃশংস পরিণতি হয়েছে তা নিয়ে এদিনও মুওখ্যমন্ত্রীর গলায় ক্ষোভ ফুটে ওঠে।তিনি বলেন,বাইরে যারা কাজ করছেন, তারা ফিরে আসুন। যদি কেউ ফিরে আসে আমরা তাকে ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য করতে পারি।মনে রাখবেন বাংলার মানুষ সবাইকে ভালবাসে।বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার করা যাবে না। আর বাংলাও কারো উপরে অত্যাচার করবে না। এটা আমাদের বাংলার মানুষের গর্ব।বিজেপি-র কোনও কোনও নেতা আছে কিছু বোঝেই না। বোঝবার ক্ষমতাই নেই।কি করছে ঝাড়খণ্ডে, কি হয়েছে? কত কি আছে, ওদের ঐ ঝাড়খণ্ড রাজ্যে।ওটা যদি আমাদের তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে থাকত আমরা সোনা ফলিয়ে দিতাম।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে থাকেন- বাইরের রাজ্য থেকে যখন কেউ আমাদের এখানে কাজ করতে আসে আমাদের রাজ্য থেকেও বাইরে কাজ করতে যায়। আমাদের রাজ্যে রাজস্থান থেকে কেউ কাজ করতে আসে তখন সে বাংলাকে নিজের ঘর বলে জানে, ঝাড়খণ্ড থেকে কেউ যখন আসে তখন সে বাংলাকে নিজের ঘর বলে জানে, বিহার থেকে কেউ যখন কাজ করতে আসে তখন সে বাংলাকে নিজের ঘর বলে জানে। তাহলে আমাদের রাজ্য থেকে কেউ যদি অন্য রাজ্যে কাজ করতে যায় তবে তাকে কেন মারা হয়, কেন তার উপর জুলুম করা হয়, কেন তার উপর অত্যাচার করা হয়। আমি বলব যারা কাজ করছেন দরকার নেই চলে আসুন এখানে, যখন নোটবন্দি করেছিলেন দিল্লির সরকার তখন এক লক্ষ পরিবার ফিরে এসেছিল, আমরা প্রত্যেকটা পরিবারকে মোটা ভাত- মোটা কাপড়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে দিয়েছিলাম। সে যাতে ছোট চায়ের দোকানও করতে পারে। যদি কেউ ফিরে আসেন ডিএম(জেলাশাসক)-এর কাছে নাম লেখাবেন।আমরা তাকে ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য করতে পারি।তারা একটা চায়ের দোকান করুক।চায়ের দোকান থেকেও বড় দোকান হতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে।আমি চাই না আমাদের ভাইরা বাইরে গিয়ে বিপদে পড়ুন। আমরা সাহায্য করব জেনে রাখুন। আমাদের এখানে কাজের অভাব নেই। এখন তো অনেক সময় ১০০ দিনের কাজে লোক পাওয়া যায় না। এখানে ১০০ দিনের কাজ হয়েছে ডিএম আমায় বলেছে।দরকার হলে ১০০ দিনের কাজের জায়গায় আমি ২০০ দিনের কাজ দেব। যারা ফিরে আসবে, আমি ইন্সট্রাকশান দিচ্ছি যদি কেউ ফিরে আসে তাকে ১০০ দিনের কাজ কম্পালসারি করে দেবেন। কিন্তু মনে রাখবেন বাংলার মানুষ সবাইকে ভালবাসে।বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার করা যাবে না। আর বাংলাও কারো উপরে অত্যাচার করবে না। এটা আমাদের বাংলার মানুষের গর্ব।বিজেপি-র কোনও কোনও নেতা আছে কিছু বোঝেই না। বোঝবার ক্ষমতাই নেই।কি করছে, ঝাড়খণ্ডে কি হয়েছে? কত কি আছে ওদের ঐ ঝাড়খণ্ড রাজ্যে।ওটা যদি আমাদের তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে থাকত আমরা সোনা ফলিয়ে দিতাম। যা মিনারেল ওখানে আছে, কিছুর দরকার নেই, শুধু একটু বুদ্ধি খরচ করা দরকার।কিছু না থেকেও তো বাংলা আজকে এক নম্বরে চলে গেছে।অনেক ব্যাপারেই।
মমতা মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপি-র উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন, বলুন ঝাড়খণ্ডে করতে পারেন না, বাংলায় কি করবেন? রাজস্থানে দলিতদের উপর অত্যাচার করেন, গুজরাটে দলিতদের উপর অত্যাচার করেন, রাজস্থানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করেন, অন্য কোন জায়গায় খ্রিস্টানদের উপর অত্যাচার করেন দলিত হলেও সে আমার ঘরের লোক, খ্রিস্টান হলেও সে আমার ঘরের লোক, সংখ্যালঘু হলেও আমারা ঘরের ভাই-বোন, সাধারণ মানুষ হলেও সে আমার ঘরের ভাই-বোন-এ পার্থক্য আমরা করি না। বলুন তো-মমতা ব্যানার্জী আর শান্তিরাম মাহাতর মধ্যে কোনও পার্থক্য আছে? না শান্তিরাম মাহাত-ফিরহাদ হাকিমের কোনও পার্থক্য আছে? না ফিরহাদ হাকিম আর নিয়তি মাহাতর কোন পার্থক্য আছে? না ফিরহাদ হাকিম আর মমতা ব্যানার্জীর মধ্যে কোনও পার্থক্য আছে? কোনও পার্থক্য নেই।আমরা সবাই এক। আমরা মানব পরিবারের সদস্য। আমরা মানবিক পরিবারের সদস্য। মনে রাখবেন, মানুষের উপর অত্যাচার করলে সে দেশ ভাল যায় না। আমরা ছাই পুরুলিয়া আরও ভাল করে ঘুরে বেড়াক।পুরুলিয়ার ছেলে-মেয়েরা গর্ব করে সারা পৃথিবী জয় করুক। পুরুলিরার ছাত্র-ছাত্রীরা সারা বিশ্ব জয় করুক। পুরুলিয়ার ছাত্র-ছাত্রীরা বিশ্ব-বাংলাকে জয় করুক।পুরুলিয়ার ছাত্র-ছাত্রীরা মাথা উঁচু করে চলুক। ওরা বাঁচতে শিকুক, ওরা পথ দেখাক। আমি এখনও মনে করি পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েরা অবহেলিত নয়।