- জেরোনিমো স্টিল্টন বইটি খুবই জনপ্রিয় শিশুদের কাছে।লেখক হলেন ইতালিরই বিখ্যাত শিশু লেখক এলিসাবেটা দামি।
- ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তিনি জেরোনিমো স্টিল্টন বইটি ইংরাজিতে পড়বেন।
- ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বলছে- “পড়ার আনন্দ কীভাবে তরুণদের মনকে উদ্দীপিত করতে পারে, উত্তেজনা কমায় এবং আশা জাগাতে পারে।”
Published on: এপ্রি ৩, ২০২০ @ ১৭:১২
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, ৩ এপ্রিল: কোভিড-১৯ এখন বিশ্বজুড়ে মহামারীর আকার নিয়েছে। শিশুরা আজ স্কুল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পড়াশুনোর প্রবণতা এখন কেমন যেন আলগা হয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু তা তো হতে দেওয়া যায় না। পড়াশুনোর মধ্যেই আছে এক অফুরন্ত শক্তি, যা শিশুদের দিতে পারে এক আলাদা মনোবল। আর সেই কথা চিন্তা করে ইতালিয়ান লেখক শিশুদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন। সেজন্য তিনি তাঁর ব্যক্তিগত ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে নিজের বিখ্যাত বই ‘জেরোনিমো স্টিল্টন’ ইংরাজিতে পড়বেন বলে স্থির করেছেন। তাঁর এই উদ্যোগকে সামনে রেখে এক যৌথপ্রয়াস নিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইপিএ),ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডাব্লুএইচও) এবং ইউনিসেফ।যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘রিড দ্য ওয়ার্ল্ড’- বিশ্বকে পড়ুন।
ইতালিরই বিখ্যাত শিশু লেখক হলেন এলিসাবেটা দামি
বিশ্বজুড়ে এখন শুধুই একটি নাম -করোনা ভাইরাস। ইউরোপ জুড়ে শুরু হয়েছে মৃত্যুর মিছিল। যার মধ্যে রয়েছে ইতালি, স্পেনের মতো উন্নত দেশগুলি। আর এই ইতালিরই বিখ্যাত শিশু লেখক হলেন এলিসাবেটা দামি। যিনি বিখ্যাত শিশু গল্পের সিরিজ জেরোনিমো স্টিল্টন-এর স্রষ্টা। যদিও বইটির লেখক হিসেবে দেখানো হয় জেরোনিমো স্টিল্টনকেই। বইটি খুবই জনপ্রিয় শিশুদের কাছে। এই বইয়ের সিরিজগুলি ইতালির মিলান শহর থেকে এদিজিয়োনে পিয়েম্মা প্রকাশ করে আসছে।2004 সাল থেকে এর ইংরাজি সংস্করনগুলি স্কলাস্টিক কর্পোরেশন প্রকাশ করে আসছে। 6 থেকে 12 বছর বয়সের শিশুদের উদ্দেশ্যেই বইগুলি লেখা হয়েছে। সারা বিশ্বে এই সিরিজের 13 কোটি বই বিক্রি হয়েছে। বইয়ের প্রধান চরিত্র জেরোনিমো স্টিল্টন হল একজন কথা বলতে পারা ইঁদুর। যে কিনা মাউস দ্বীপ নামে এক কাল্পনিক ইঁদুরদের দেশের রাজধানীতে বাস করে।
জেরোনিমো স্টিল্টনের সঙ্গে শুরু
জেরোনিমো স্টিল্টন সিজিজের লেখক এলিসাবেটা দামি মনে করেন বর্তমান সময়ে শিশুরা এ ধরনের বই পড়ে আনন্দ পাবে। তাই তিনি এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। এই মহামারীর মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া লক্ষ লক্ষ শিশুদের কাছে বই পড়ার নির্যাস মিলবে, যা তাদের আনন্দ দেবে।রিড দ্য ওয়ার্ল্ড হ’ল ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইপিএ), ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডাব্লুএইচও) এবং ইউনিসেফের মধ্যে একটি যৌথ প্রচেষ্টা। এটি গতকাল আন্তর্জাতিক শিশু বই দিবসে ইতালিয়ান লেখক এলিসাবেটা দামি তাঁর জনপ্রিয় গল্পের চরিত্র জেরোনিমো স্টিল্টনের সঙ্গে শুরু করেছেন।
আইপিএ সভাপতি হুগো সেত্তজার বলেছেন
আইপিএ সভাপতি হুগো সেত্তজার এই বিষয়টি নিয়ে তাঁর মতামত জানাতে গিয়ে বলেন- “এগুলি আমাদের সকলের জন্যই অরক্ষিত জল যেখানে কি হবে আমরা কেউ জানি না এবং দীর্ঘায়িত বিচ্ছিন্নতা অর্থাৎ কতদিন যে আমরা এভাবে দূরে সরে থাকবো তাও জানি না এবং সামাজিক দূরত্বের এই মানসিক-সামাজিক প্রভাবগুলি তাই এখনও দেখা ও বোঝা যাচ্ছে না।” একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন- “আমাদের সকলের তাই এই মুহূর্তে এবং বিশেষত শিশু-তরুণদের কথা ভেবে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষ দিকে যত্ন নেওয়া উচিত।” আইপিএ তাই শিশুদের তাদের প্রিয় লেখকদের কাছাকাছি আনার জন্য, বইগুলির প্রতি আগ্রহী করে তোলার প্রয়াস নিয়েছে।
ইউনিসেফের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর হেনরিটা ফোর
ইউনিসেফের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর হেনরিটা ফোর বলেছিলেন, “মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শিশুদের জীবন ও রুটিনগুলি ওলোট-পালোট হয়ে গিয়েছে। তার কেমন যেন উদাসীন হয়ে পড়েছে। বহর্বিশ্বের সঙ্গে তারা কেমন যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই এই বই পড়ার দিকে তাদের উৎসাহিত করে মনে করিয়ে দিতে হবে যে বইয়ের ট্রান্সপোর্টিভ শক্তি সীমাহীন।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, বিশেষত যখন তরুণদের সুরক্ষার কথা চলে আসে। ডব্লিউএইচও-র ডিরেক্টর জেনারেল ডা টেড্রোস অ্যাধানম ঘেরবাইয়াস বলেন- ” আমরা অনেকেই যে ভয় ও উদ্বেগ অনুভব করি তা বেশ বুঝতে পারি এবং আমরা এটাও জানি যে পড়ার আনন্দ কীভাবে তরুণদের মনকে উদ্দীপিত করতে পারে, উত্তেজনা কমায় এবং আশা জাগাতে পারে।”
এগিয়ে আসছে আরও অনেক লেখক
এলিসাবেটা দামি তার ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে জেরোনিমো স্টিল্টন বইটি ইংরেজিতে পড়বেন দুপুর তিনটে থেকে সাড়ে তিনটে এবং বিকেল পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটা অবধি।তাঁর বইগুলি বিশ্বজুড়ে 180 মিলিয়নেরও বেশি অনুলিপি বিক্রি হয়েছে এবং 50 টি ভিন্ন ভাষায় তা প্রকাশিত হয়েছে।এভাবে আরও অনেক শিশু লেখক “রিড দ্য ওয়ার্ল্ড” কর্মসূচিতে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করতে আগ্রহ প্রকাশ করে এগিয়ে আসছেন।
Published on: এপ্রি ৩, ২০২০ @ ১৭:১২