মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ, ধ্বনি ভোটে বহিষ্কারের প্রস্তাব পাশ

Main দেশ
শেয়ার করুন

Published on: ডিসে ৮, ২০২৩ at ২০:১৪

এসপিটি নিউজ, নয়াদিল্লি, ৮ ডিসেম্বর: আজ লোকসভায় চ্রম বিশৃঙ্খলার মধ্যে ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ করে তাকে বহিষ্কার করা হল। “ক্যাশ-ফর-কোয়েরির” অভিযোগে এথিক্স কমিটির রিপোর্টের সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল।

এদিন মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে আনা সংসদের এথিক্স কমিটির রিপোর্ট নিয়ে বিরোধী দলের সদস্যরা হইচই শুরু করে। কংগ্রেসের সাংসদ মনীশ তেওয়ারি, অধীররঞ্জন চৌধুরী এদিন মহুয়া মৈত্রের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন। অধ্যক্ষের কাছে তারা প্রস্তাব রাখেন এথিক্স কমিটির রিপোর্ট অনুসারে সংসদে আলচনার সুযোগ দেওয়া হোক। অধীর রঞ্জন চৌধুরী একাধিকবার বলতে থাকেন মহুয়া মৈত্রকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হোক।

এরপর একই দাবি করতে দেখা যায় তৃণমূলের দুই সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। কিন্তু অধ্যক্ষ ওম বিড়লা এদিন অনড় থাকেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন তা সম্ভব নয়। উনি যে চেয়ারে বসে আছেন একদিন এই চেয়ারে ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রণব মুখোপাধ্যায়। এমনকি তি তো সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের উদাহরণ টেনে পরিষ্কার বলেন- “২০০৫ সালে তখনকার অধ্যক্ষ্য সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এথিক্স কমিটির রিপোর্ট অনুসারেই ১১ জন সাংসদকে বহিষ্কার করেছিলেন। তাই এখানেও আজ একই পথ অনুসরণ করতে হবে। সেটা না করলে সংসদের অধ্যক্ষ পদের নিয়ম লঙ্ঘিত হবে এটা আমি হতে দিতে পারি না।”

তারপরও এদিন সাংসদে তৃণুমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময় উঠে দাঁড়িয়ে অধ্যক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন- মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হোক। তিনি একথা বলেই মহুয়াকে বক্তব্য রাখতে উঠে দাঁড়াতে বলেন। এই সময় অধ্যক্ষ্যকে বলতে শোনা যায়- না, এটা আপনি করতে পারেন না। এখন আপনাদের কল্যাণ বন্দ্যোপাধজ্যায়ের সুযোগ। তিনি বলবেন। অগত্যা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে উঠে- এথিক্স কমিটির রিপোর্টের সমালোচনা করেন।এমনকি, রিপোর্টে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও আনেন।

যদিও শেষ পর্যন্ত সব অনুরোধ, অভিযোগই নস্যাত হয়ে যায়। এরপর সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট অনুসারে “ক্যাশ-ফর-কোয়েরির” অভিযোগে তাকে বিহিষ্কারের প্রস্তাব আনে। সেটি ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে যায়। অধ্যক্ষ ওম বিড়লা জানিয়ে দেন যে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে ৮ ডিসেম্বভর, ২০২৩ তারিখে লোকসভার সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করা হল।

আত্মপক্ষকে সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে- মমতা

এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এদিন কার্শিয়াং থেকে সংবাদ মাধ্যমকে নিজের প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন- “এটা খুবই দুঃখজনক। মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগরের জণগনের দ্বারা নির্বাচিত।ভোটে তাকে পরাজিত করতে না পেরে বিজেপি তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে ৪৯৫ পাতার রিপোর্ট পাঠায়। ইন্ডি অ্যালায়েন্সের সাংসদরা বারবার বলেছিলেন যে আমাদের পড়বার সুযোগ দিন। সেটা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এমনকি, মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।এটা দেখে বোঝা যায় বিজেপি রাজনৈতিকভাবে গণতন্ত্রের সঙ্গে লড়তে পারে না।ওদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য।একজন মহিলা যিনি তরুণ প্রজন্মের প্রতিনধিত্ব করছেন। তাকে যেভাবে হেনস্থা করা হয়েছে, যেভাবে আত্মপক্ষকে সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে আমি সেটাকে ধিক্কার জানাই। দল সম্পূর্ণ ভাবে মহুয়া মৈত্রের পাশে ছিল আছে থাকবে। আমরা চেয়েছিলাম সুবিচার হোক। তুমি সিবিআই-ও করবে আবার বহিষ্কারও করবে। দু’তিন মাস বাদে নির্বাচন। বড়জোড় আর একটা সেশন উপস্থিত থাকতে পারত। সেই সুযোগটাও তোমরা দিলে না।এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে বিজেপি কতটা প্রতিহিংসা পরায়ণ রাজনীতি করে।”

Published on: ডিসে ৮, ২০২৩ at ২০:১৪


শেয়ার করুন