প্রাক্তন পুরপ্রধান রথীন ঘোষের উন্নয়নের পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করছে মধ্যমগ্রাম পুরসভা, বললেন পুরপ্রধান নিমাই ঘোষ

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

মধ্যমগ্রামে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট হয়েছে।

১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সাজিরহাট থেকে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে।

কেএমডিএ-র সহায়তায় মধ্যমগ্রামে ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ইকো পার্ক গড়ে উঠছে, শুরু হতে চলেছে বায়ো ডাইভার্সিটি পার্কের কাজও

Published on: আগ ২০, ২০২৩ @ ২০:০৬

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, মধ্যমগ্রাম, ২০ আগস্ট: নামের মধ্যে জড়িয়ে আছে গ্রাম। কিন্তু একসময়ের গ্রাম আজ হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শহর। মাত্র ৩০ বছরের মধ্যগ্রাম পুরসভা জেলা তথা রাজ্যের শতাব্দী প্রাচীন পুরসভাগুলিকে উন্নয়ন ও পরিষেবামূলক কাজের নিরীখে ছাপিয়ে গিয়েছে। আর এই কৃতিত্ব এখানকার দীর্ঘদিনের পুরপ্রধান রথীন ঘোষের, তা মধ্যমগ্রামের মানুষ একবাক্যেই স্বীকার করে। বাম আমল থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস পইচালিত এই পুরসভাটি তার উন্নয়নের কর্মকান্ড বজায় রেখেছে। পুরসভা গঠনের পর থেকে মধ্যমগ্রামের মানুষ আস্থা ভ্রেখে গিয়েছে রথীন ঘোষের উপর। যদিও এখন তিনি রাজ্যের খাদ্য দফতরের একজন মন্ত্রী। তবে আজ বৃহত্তর কলকাতার বুকে নগারায়নের ধারার যে উজ্জ্বল ছবি মধ্যমগ্রামে জ্বল জ্বল করছে তা কিন্তু মূল রূপ দিয়ে গিয়েছেন রথীন ঘোষ। সেকথ অবশ্য এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন বর্তমান পুরপ্রধান নিমাই ঘোষ। উন্নয়নের প্রসঙ্গ উঠতেই নিমাই ঘোষ বললেন- প্রাক্তন পুরপ্রধান রথীন ঘোষের উন্নয়নের পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করছে মধ্যমগ্রাম পুরসভা।

উত্তর ২৪ পগনা জেলার অন্যান্য পুরসভার মধ্যে সব থেকে উজ্জ্বল মধ্যমগ্রাম পুরসভা। রাস্তা, পানীয় জল, নিকাশি ব্যবস্থা, কর আদায় সহ অন্যান্য সবেতেই এই পুরসভা আজ খুবই ভাল জায়গায় অবস্থান করছে, এর পিছনে রয়েছে রথীন ঘোষের প্রচেষ্টা।যিনি পুরপ্রধাম থাকার সম্য প্রতিনিয়ত পুর এলাকাকে এক নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। আজ সেই গুরু দায়িত্ব এসে পড়েছে নিমাই ঘোষের উপর। তিনিও সেই কাজকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।

সংবাদ প্রভাকর টাইমস-এর মুখোমুখি হয়ে সেই কথাই জানালেন মধ্যমগ্রাম পুরসভার পুরপ্রধান নিমাই ঘোষ।জানালেন- “মধ্যমগ্রাম পুসভায় ২৮টি ওয়ার্ড জুড়ে রাস্তা, জল, নিকাশি ব্যবস্থার কাজ হয়ে চলেছে। ধারাবাহিকভাবে এই কাজ চলছে। মধ্যমগ্রাম পুরসভার পুরকর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে আদায় করা হয়ে থাকে। যত বকেয়া এবং চলতি বছরের কর আছে তা আমাদের ট্যাক্স আদারকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে আদায় করেন। অফিসে এসেও বেলা ১১টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত এসেও জমা দিতে পারেন নাগরিকরা।

রাজস্ব আদায়

“মধ্যমগ্রামে ২০১১ সালের জণগননা অনুসারে আজ ২০২৩ সালে অনেক বেড়েছে। ২৮টি ওয়ার্ডে ২ লক্ষ ২০ হাজার জনসংখ্যা। কাজেই মধ্যমগ্রাম পুরসভা রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রেও আমরা ভাল জায়গাতেই আছি। রাজ্য সরকারের পুর-নগরোন্নয়ন দফতরের যে নির্দেশিকা সেটা মেনেই কাজ করি। রাজ্য সরকার যে অর্থ আমাদের বরাদ্দ করে তা সময় মতো পেশ করতে হয়।”

পুর উন্নয়ন দফতর থকে ৬ কোটি টাকা

“এলাকার উন্নয়নের জন্য পুর উন্নয়ন দফতর থকে আমরা ৬ কোটি টাকা পেয়েছি। প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের নিয়ে বসে আমরা্ যেখানে যেমন প্রয়োজন সেখানে ততটুকুই দিয়েছি।”

জল প্রকল্প প্রসঙ্গে

“দেখুন, ওয়াটার ট্রিটমেন্টের আওতায় খড়দহ থেকে যে জল আসছে আমাদের প্রজেক্ট অনুযায়ী ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করা হয়েছে। এর পরিষেবা পাবে নব বারাকপুর, মধ্যগ্রাম ও বারাসত পুরসভা। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এটার উদ্বোধন করেছেন। এই জল আময়া সরবরাহ করছি। কিছু কিছু জায়গায় জলের সমস্যা হচ্ছে তবে সেটার সমাধানেরও দ্রুত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

ট্রাফিক জ্যাম

“মধ্যগ্রাম পুসভার উপর দিয়ে হাইওয়ে গেছে। সেখানে খুব ভাল কাজ হয়েছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সাজিরহাট থেকে চৌমাথা পর্যন্ত রাস্তার সম্প্রসারণ করা হছে, ফুটপাত করা হচ্ছে।আমাদের পূর্ত দফতর দ্রুততার সাথে কাজ করছে। পুরসভার পূর্ত বিভাগের পুরপারিষদ সদস্য তারা কাজ করছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলার, থানা সকলকে নিয়ে আমরা কাজ করছি। কাজ যাতে সম্পন্ন হয় সেজন্য মধ্যমগ্রাম পু্রসভা ও পূর্ত দফতর নজরদারি করছি।”

সোদপুর রোড সংলগ্ন স্কুলগুলির সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা

“মধ্যমগ্রাম পু্রসভার নিজস্ব স্টাফদের আমরা স্কুলগুলির সামনে নিয়োগ করেছি। সোদপুর রোডের ধারে স্কুল্গুলির সামনে এটা করেছি। এছাড়া এখানে ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রাখতে স্কুলের ছাত্র-ছত্রীরা যাতে অসুবিধার মুখে না পড়ে তার জন্য সেখানে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ ও পুরসভা ব্যবস্থা নিয়েছে। মধ্যগ্রাম পুরসভায় চৌমাথায় ভূগর্ভস্থ রাস্তা হয়েছে। সেখান দিয়ে বাদু রোড, সোদপুর রোডের মধ্যে যাতায়াত ব্যবস্থ চালু আছে। আগের মতো যানযট চৌমাথায় নেই বললেই চলে। সোদপুর রোড অনেকটাই চওড়া হচ্ছে।ফুটপাত হচ্ছে। ফেন্সিং লাগানো হচ্ছে। এজন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমত বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ।”

“আমাদের দীর্ঘদিনের পুরপরধান ছিলেন রথীন ঘোষ, তিনি এখন রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দফতরেওর মন্ত্রী তিনি যা ক্লাজেরত পরিকল্পনা করে গেছিলেন সেই কাজগুলো এখন হচ্ছে। আমরা পুরসভার সব কাউন্সিলার থেকে শুরু করে স্টাফ সবাই মিলে এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। দেখুন আমি চেয়ারম্যান হতে পারি। কিন্তু আমাদের সেই উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করে চলেছি। একটা কাজ করা সহজ কিন্তু সেটাকে রক্ষণাবেক্ষন করা খুবই বড় কাজ। সেই কাজটা আমরা করছি। মধ্যমগ্রাম শহরের বিশেষ বিশেষ যে  কাজকর্মগুলি ছিল সেগুলি করছি। আগামিদিনে আরো উন্নততর পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে মধ্যমগ্রাম পুরসভা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে।”বলেন পুপ্রধান নিমাই ঘোষ।

ইকো পার্ক ও বায়ো ডাইভার্সিটি পার্ক

সামাজিক, জনমুখী প্রকল্পের পাশাপাশি মধ্যগ্রাম পুরসভা নাগরিকদের বিনোদন মূলক কাজও শুরু করেছে। সেই প্রসঙ্গে পুরপ্রধান নিমাই ঘোষ বলেন, “যেখানে আমাদের জল প্রকল্প আছে সেখানে ইকো পার্ক তৈরি হবে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ড পানিহাড়াতে ৫০ বিঘা জমি কিনেছিলাম। কিছুটা জায়গায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট আর অবশিষ্ট জায়গায় ইকো পার্ক গড়ে তোলা হবে। কাজ শুরু হয়েছে। কেএ্মডএ এই কাজ করছে। সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাস্তবায়িত করব। এই কাজের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৬ কোটি টাকা। এছাড়াও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বায়ো ডাইভার্সিটি পার্ক গড়ে তোলা হবে। এজন্য কেএমডিএ-র কাছে চার বিঘা জমি চেয়েছি। ১৭ আগস্ট এব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।উন্নয়নের সেরা মডেল হিসাবে মধ্যমগ্রামকে তুলে ধরাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”

Published on: আগ ২০, ২০২৩ @ ২০:০৬


শেয়ার করুন