বাংলা গান নিয়ে আশা-নিরাশার কথা শোনালেন সংহতি-অরিজিৎরা

Main বিনোদন রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: ফেব্রু ২৭, ২০২৪ at ১০:২৮
Reporter: Joydeep Roy

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৭ ফেব্রুয়ারি: একটা সময় ছিল বাংলা গান নিয়ে পাগল ছিল বাঙালি তথা অন্যরাও। অথচ আজ সেই বাংলা গান যে কেমন যেন অবহেলিত হয়ে পড়ছে। তাহলে কি কি ভাল বাংলা গান তৈরি হচ্ছে না? শ্রোতাদের গান শোনার স্বাদ বদলে গিয়েছে? ভালো সুরকার, গায়িকা, গীতিকারের অভাব হয়েছে? সংবাদ প্রভাকর টাইমস-এর পক্ষ থেকে এই প্রশ্নগুলি তুলেছিলেন প্রধান সম্পাদক অনিরুদ্ধ পাল। সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সংহতি দাসের ‘অন্তত একবার দেখা কোরো’ গানের রিলিজ অনুষ্ঠানে এই প্রশ্নগুলির জবাব দেন উপস্থিত বিশিষ্ট সংগীত পরিচালক অরিজিৎ চক্রবর্তী, শিল্পী সংহতি দাস সহ অন্যরা। সকলেই বাংলা গান নিয়ে তাদের আশা-নিরাশার কথা শোনালেন এসপিটি-কে।

দোষটা আমাদের আছে, এটা স্বীকার করে নেওয়া ভালো-অরিজিৎ

সংগীত পরিচালক অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন- কোনও কিছুরই অভাব নেই। গীতিকারের অভাব নয়, সুরকারের অভাব নয়, গান তৈরিও হচ্ছে প্রচুর। কিন্তু গানের আউটলেট আমরা পাচ্ছি না। একটা সময় এফএম খুব হেল্প করেছিল। কিন্তু এখন সেরকম প্ল্যাটফর্ম আমরা পাচ্ছি না। আসলে এটা আমাদেরও দোষ, আমরা সেভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারিনি। আমরা ইউটিউব গান শুনে ভুলে যাই। ফেসবুকে গান শুনে ভুলে যাই। দোষটা আমাদের আছে, এটা স্বীকার করে নেওয়া ভালো। তারপর দেখা পাচ্ছি না যারা বেসিক বাংলা গানকে প্রমোট করবে। তারপর আমি লক্ষ্য করেছি- ছবির গানও যে সেরকমভাবে প্রমোট হচ্ছে তাও দেখতে পাচ্ছি না। যাই হোক এটা তো আমাদের শূন্যতা সব থেকে বেশি। গীতিকাররাও আছেন, সুরকাররাও একইভাবে কাজ করছেন। যারা ছিলেন তার তো কাজ করছেনই। নতুন যারা আছেন তারাও চেষ্টা করছেন ভালো কাজ করার। এটা দেখে আমার মনে হয় খামতি নেই। এই খামতিটা কিভাবে পূরণ হবে এটা সত্যি আলোচনা সাপেক্ষ। এ ব্যাপারে আপনারাও যদি ভাবেন , মতামত দেন সেটাও আমাদের কাজে আসবে।“

এটা বাংলা সংগীত জগতের খারাপ একটা সময়, উচিত নয়-সংহতি

“অরিজিৎদার কথার প্রসঙ্গ টেনেই বলি-  ভালো গান প্রচুর তৈরি হচ্ছে, কিন্তু খারাপ গান লোকের কাছে পৌঁছচ্ছে বেশি। আমাকেই একটা খুব খারাপ গান শেয়ার করে বলছে- এটাকে শেয়ার করবেন না। শেয়ার করে বলছে শেয়ার করবেন না। শেয়ার হতে হতে তো অনেকটাই শেয়ার হয়ে চলেছে। তাই সেই কাজগুলি সামনে আসছে। ভালো কাজগুলি আসছে না। এখন ৩০ সেকেন্ডে এসে থেমেছে গান। আগে আগে ১০টা গানের অ্যালবাম হয়েছিল। তারপর অরিজিৎদার সঙ্গে ছ’টি গানের রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম করেছি। সেখান থেকে ৩টে , তারপর একটা তাও শোনে না মানুষ। ৩০ সেকেন্ডের রিল হিসাবে শোনে। এটা বাংলা সংগীত জগতের খারাপ একটা সময়, উচিত নয়।“ আক্ষেপ সংহতির।

মানুষের কাছে অপশানটা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে- সৌরভ

সংগীত আয়োজক সৌরভ চক্রবর্তী বিষয়টিকে একটু অন্যভাবে ব্যাখ্যা করেন-“আসলে মাধ্যমটা বদলে গিয়েছে। ট্রিপিক্যাল প্ল্যাটফর্ম থেকে এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চলে এসছে। সেটা মানুষের মানিয়ে নিতে একটু সমস্যা হচ্ছে। আগে যে ক্যাসেট কিনে শুনতাম, সেই সিস্তেমটাই এখন নেই। মানুষের কাছে অপশানটা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ইউটিউবটা রয়েছে। সেখানে কোটি কোটি গানের অপশান চলে এসছে যেটা আগে ছিল না। আগে ক্যাসেট কিনে গান শুনতাম। স্বাভাবিকভাবেই কিছু ভালো গান হারিয়ে যাচ্ছে আবার কিছু গান সামনে চলে আসছে।“

‘ডিজিটাল দুনিয়ায় আমরা কতটা  অভ্যস্ত হতে পারছি, সেটাই দেখার’

“যোগ্য গায়ক-গায়িকা, যোগ্য সুরকাররা অবশ্যই চান্স পাচ্ছেন। আসলে প্রপার আউটলেট দরকার, সেটা থেকেই দেখবেন যারা যোগ্য ছিলেন তারা তো আছেনই আরও অনেক যোগ্য মানুষ এসছেন কাজ করতে। তারা ভালোভাবেই কাজ করছেন। যোগ্যতার সঙ্গেই কাজ করছেন। ডিজিটাল দুনিয়ায় আমরা কতটা  অভ্যস্ত হতে পারছি, সেটাই দেখার। আশাবাদী অরিজিৎ চক্রবর্তী।

Published on: ফেব্রু ২৭, ২০২৪ at ১০:২৮


শেয়ার করুন