Published on: ফেব্রু ৭, ২০২৪ at ২৩:৫৮
Reporter: Joydeep Roy
এসপিটি নিউজ, অযোধ্যা, ৭ ফেব্রুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনে দিন সাধারণ মানুষের কাছে এক অনুরোধ রেখেছিলেন। বলেছিলেন যে ওইদিন তারা যেন অযোধ্যায় না আসেন। কিন্তু ২৩ জানুয়ারি থেকে যে কোনওদিন তারা অযোধ্যায় এসে প্রভু শ্রীরামলালাকে দর্শন করে যান। প্রধানমন্ত্রী মোদির সেই কথা অনুযায়ী এখন সাধারণ মানুষ দর্শন করতে আসছেন প্রতিদিন। অযোধ্যায় এই তীর্থভ্রমণে ভারতের বিভিন্ন সংস্থা যুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম আইআরসিটিসি। তারা আস্থা স্পেশাল ট্রেনে যাত্রীদের অযোধ্যা দর্শনের ব্যবস্থা করেছে। যেখানে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ বিবিধ ক্ষেত্রের কার্যকর্তাদের এই দর্শনের আয়োজন করে। হাওড়া থেকে প্রায় ২০ ঘন্টার এই রেলযাত্রায় ছিল বিপুল আয়োজন।
এই রেলযাত্রায় অন্যতম শ্রিক হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। আর তাই সেই যাত্রার অভিজ্ঞতা সংবাদ প্রভাকর টাইমস-এর সমস্ত পাঠকদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।
হাওড়া থেকে আস্থা স্পেশাল ট্রেন গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাত আটটায় ছাড়ে। এই ট্রেনে মোট ২০টি বগি। ট্রেন ছাড়ার আগে হাওড়ায় রেল পুলিশের স্নিপার ডগ দিয়ে গোটা ট্রেন তল্লাশি চালানো হয়। নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখেনি রেল পুলিশ বা আরপিএফ। ট্রেনে ওঠার সময় আমাদের প্রত্যেকের হাতে খাবারের প্যাকেট এবং জলের বোতল দিয়ে দেওয়া হয়। ট্রেন ছাড়ার পর রাতের খাবার আসে। এই খাবার আইআরসিটিসি-র পক্ষ থেকেই ব্যবস্থা করা হয়। রাতের মেনুতে ছিল- সরু চালের ভাত, দাল, পনিরের তরকারি, সবজি, চারটে রুটি, দই, মিস্টি। রাতের খাবার খেয়ে সকলেই আমার যার যার আসনে বিশ্রামে চলে যাই।
পরদিন অর্থাৎ ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রত্যেকের কাছেই চা ও বিস্কিট চলে আসে। এরপর আসে প্রাতঃরাশের খাবার। সেখানে দেওয়া হয় দুটো করে স্যান্ডউইচ, ভেজ কাটলেট, মিস্টি। এরপর দুপুরের আহারেও ছিল বিপুল আয়োজন। এ তো ছিল খাবারের আয়োজন।
ট্রেনে নিরাপত্তাও ছিল দেখার মতো। প্রতিটি বগিতেই ছিল দু’জন করে আরপিএফ জওয়ান। এই ট্রেনে কোনঅ বহিরাগত উঠতে পারেনি। একমাত্র এই ট্রেনে যাদের আসন সংরক্ষিত করা হয়েছিল এবং যে সমস্ত জায়গা থেকে যাত্রীদের আসন সংরক্ষিত ছিল কেবলমাত্র সেইসব জায়গা থেকেই যাত্রীদের ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। গোটা ট্রেন হয়ে উঠেছিল রামময়। প্রভু শ্রীরামের জয়গানে মেতে ওঠে গোটা আস্থা স্পেশালের রামভক্তরা।
অযোধ্যায় রাম্মন্দির দর্শনের অনুভূতি যে কত মধুর হতে পারে এই রেলযাত্রা তার জ্বলন্ত প্রমাণ হয়ে রইল। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথার গুরুত্ব যে কত মুল্যবান তাও বুঝলাম আমরা সকলে। তিনি আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের জন্য ২৩ জানুয়ারি থেকে রামমন্দির দর্শনের কথাই বলেননি, দর্শনের সুবন্দোবস্তও যে করে রেখেছেন সেটাও টের পেলাম আমরা সকলে। এও আমাদের কাছে কাছে এক অনন্য অনুভূতি।
প্রধানমন্ত্রী মোদি রামমন্দির উদ্বোধনের দিন তার বক্তৃতায় প্রভু শ্রীরাম নিয়ে বলেন- “রামলালার এই মন্দির নির্মাণ – ভারতীয় সমাজের শান্তি, ধৈর্য, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সমন্বয়েরও প্রতীক। আমরা দেখছি যে এই নির্মাণ কোন আগুনের জন্ম দিচ্ছে না, শক্তির জন্ম দিচ্ছে। রাম মন্দির একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সমাজের প্রতিটি স্তরের অনুপ্রেরণা নিয়ে এসেছে। আমি আজ সেই লোকদের কাছে আবেদন করব… আসুন, আপনি উপলব্ধি করুন, আপনার চিন্তাভাবনা পুনর্বিবেচনা করুন। রাম আগুন নয়, রাম শক্তি। রাম বিবাদ নয়, রাম সমাধান। রাম শুধু আমাদের নয়, রাম সবার। রাম শুধু বর্তমান নয়, রাম চিরন্তন।”
ছবিঃ জয়দীপ রায়
Published on: ফেব্রু ৭, ২০২৪ at ২৩:৫৮