
সংবাদতাতা-বাপ্পা মণ্ডল
Published on: এপ্রি ২৪, ২০১৮ @ ২০:৫৯
এসপিটি নিউজ, চন্দ্রকোনা, ২৪ এপ্রিলঃ এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। তবু এই প্রবণতা আজও থামেনি।বাবার বিরুদ্ধে এক স্কুল ছাত্রী টানা তিন বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ তুলল।বাড়ির লোকজনকে বলেও এতদিন কিছু না হওয়ায় এবার সে অভিযোগ জানাল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে। চিঠি লিখল স্থানীয় বিধায়ক ও পুরপ্রধানের কাছে। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরই চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ অভিযুক্ত বাবা অনুপ কর্মকারকে গ্রেফতার করল। সেইসঙ্গে মেয়েকে মেডিক্যাল টেস্টের জন্য পাঠাল হাসপাতালে। এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়।
জানা গেছে, মেয়েটি স্থানীয় একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।চন্দ্রকোনা পুরসভা এলাকার এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা এখন ছিঃ ছিঃ করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, এতদিন যখন মেয়েটি তাদের বেশ কয়েকজনের কাছে জানিয়েছিল তখন কিন্তু তারাই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। সেইসময় তারা সতর্ক হলে আজ মেয়েটির এই পরিণতি হত না। মেয়েটি বাবার কাছে টানা তিন বছর ধরে ধর্ষণের শিকার হয়ে এসেছে।পেশায় গ্যারেজ মিস্ত্র ওই ব্যক্তি তার মেয়েকে নানা অছিলায় মামার বাড়িতে গিয়ে মামা-মামিমার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ধর্ষণ করত বলে অভিযোগ। সোমবার মেয়েটি সুযোগ বুঝে একটি চিঠি যা স্থানীয় বিধায়ক ও পুরপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে লেখা তা কোনওভাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে পাঠায়। এরপরই পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। ‘নরপিশাচ’ সেই ব্যক্তির হাত থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে অভিযুক্ত অনুপ কর্মকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সাদা কাগজে মেয়েটি স্থানীয় বিধায়ক ও পুরপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে যা লেখে তা খুবই মর্মান্তিক। মেয়েটি চিঠিতে যা লিখেছে তাতে তার হতাশা আর যন্ত্রণার কথাই প্রকাশ পেয়েছে।
সে লিখেছে- বড়ই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমি একজন কন্যাশ্রী। আমার বাবা অনুপ কর্মকার। আমি আপনাদের কিছু কথা বলতে চাই। আমার বাবা আমাকে গত তিন বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছে। আমি আমার বাবার শস্তি চাই। আমার কাছে কোনও প্রমাণ না থাকায় কাউকে কিছু বলতে পারছি না।তবু আপনাদের সব কথা জানাচ্ছি। আমার বাবা আমার উপর শারীরিক ভাবে অত্যাচার করে। আমি এই অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছি না।আমি আমার বাবার এই চরিত্রের কথা জানিয়েছিলাম আমার পাশের বাড়ির দিদিকে। সে আমার কথা শুনে আমার ছোট মামাকে বলে। তারপর সে বলে ছোটদের কথায় কান দিস না। তারপর থেকে চুপ করে অত্যাচার সহ্য করতাম। দিনের পর দিন আমার নিজের বাড়িতেও এমনকী রাতের বেলায় রাস্তাতেও আমাকে ধর্ষণ করে। আমি যে ওনার মেয়ে বাবা সেটা মনে করেন না। আমি বাড়িতে জানাই ঠিকই কিন্তু আমি আপনাদেরকেও জানাচ্ছি। আপনারা আমাকে এই ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করুন। আমার বাবা জানতে পারলে আমাকে মেরে দেবে।
কিভাবে এতদিন এই ঘটনা ঘটে গেল সেটা নিয়েও পুলিশ মেয়েটির মামা-মামিকেও জিজ্ঞসাবাদ করছে। কারণ, মেয়েটি থাকত তার মামার বাড়িতে। বিষয়টি জানা সত্ত্বেও মেয়েটির মামা কেন গুরুত্ব দেয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
Published on: এপ্রি ২৪, ২০১৮ @ ২০:৫৯