সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল
Published on: মার্চ ১৩, ২০১৮ @ ১১:২৪
এসপিটি নিউজ, গোয়ালতোড়, ১৩ মার্চঃ এক বাঘেই নাজেহাল, দিশেহারা, সন্ত্রস্ত। নাস্তানাবুদ বন দফতর। মঙ্গলবার সকালে গোয়ালতোড়ের হামারগোড়া জঙ্গলে হাতি তাড়ানোর গাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার করা হল দুই বনকর্মীর মৃতদেহ।মৃতদের নাম অমল চক্রবর্তী(৪৬) ও দামোদর মুর্মু (৪৭)। তাদের মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই সেখানে ছুটেছেন বন দফতরের আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত অমল চক্রবর্তীর বাড়ি শালবনী থানার সাতপাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পিড়াকাটা মালিদা গ্রামে। বাড়ি স্ত্রী ও দুই পুত্র বর্তমান। খবর পাওয়া মাত্রই তারা এসেছেন ঘটনাস্থলে। দামদরের বাড়ি গোয়ালতোড় থানার আকছরা গ্রামে।
তাদের গোয়ালতোড়ে হামারগোড়া জঙ্গলে বাঘ তাড়ানোর পাহারায় পাঠানো হয়েছিল। রাতে তারা হাতি তাড়ানোর গাড়ির ভিতর ঘুমিয়েছিলেন। গাড়ির কাচ বন্ধ করা ছিল। জেনারেটর চলছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ভিতরে অক্সিজেন কমে যাওয়া অথবা গ্যাস-এ দম বন্ধ হয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই চূড়ান্ত ভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা।মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তিন সেখানে যাচ্ছেন। পুরো ঘটনা জেনে পরে তিন বলবেন।
গত ৩০ জানুয়ারি থেকে বাঘের আতঙ্ক শুরু হয়। তারপর ২ মার্চ প্রথম ট্র্যাপ ক্যামেরায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি ধরা পড়ে। এরপর বাঘটিকে ধরতে সুন্দরবন থেকে খাঁচা নিয়ে আসেন বন দফতরের অভিজ্ঞ বনকর্মীরা। একে একে লালগড়, গুড়ুগুড়িপাল, শালবনী, গোয়ালতোড়ে মোট পাঁচটি খাঁচা পাতা হয়। এর মধ্যে বাঘের আক্রমনে এক ব্যক্তি জখমও হন।
সোমবার থেকে এই আতঙ্কের মধ্যেই ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যায়। বন দফতর এদিন থেকে বাঘের জন্য মানুষের পাহারায় জোর দেয়। সেই মতো দুই বনকর্মী অমল ও দামোদর ছিলেন গোয়ালতোড়ের হামারগোড়ার জঙ্গলে। বাঘের গতিবিধি যদি দেখা যায়, কাউকে নতুন করে সে যাতে আক্রমন করতে না পারে। কিন্তু রাত বাড়তেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তারা। গাড়ির কাচ তুলে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল হতেই তাদের ডেকে তুলতে না পেরে নিয়ে যাওয়া হয় গোয়ালতোড়ের কেওয়াকোর হাসপাতালে। সেখানেই তাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এই ঘটনার পর বনকর্মী সহ গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।বনকর্মীরা এই ঘটনায় মুষড়ে পড়েছেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান শালবনীর বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাত। তিন দুই মৃতের পরিবারকে সমবেদনা জানান। তিনি বলেন এই ঘটনা বনকর্মীদের মনোবলে ধাক্কা দেবে। তবে তা যাতে কাটিয়ে উঠতে পারে সেদিকে বন দফতরকে নজর দিতে হবে।
Published on: মার্চ ১৩, ২০১৮ @ ১১:২৪