সম্রাট তপাদার
দেশের রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য হিসেবে পরিচিত গুজরাট।তাই গুজরাট বিধানসভা ছিল দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে মর্যাদা রক্ষার লড়াই। যে লড়াই জিততে তিনি গুজরাট জুড়ে একের পর এক সভা করেছেন। চেষ্টা করেছেন গুজরাটবাসীর হৃদয় দখল করতে। কিন্তু ১৮২ আসন বিশিষ্ট গুজরাট বিধানসভায় বিজেপি যেখানে ১৫০টির মতো আসন পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল সেখানে কোনওরকমে টেনেটুনে পাশ করেছে বিজেপি। ১৬টি আসন কমে বিজেপি যেখানে ৯৯-তে শেষ করেছে সেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনের থেকে ১৯টি আসন বাড়িয়ে কংগ্রেস মোট ৮০টি কেন্দ্র দখল করে কার্যত বিজেপির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে। আরও এক ধাপ এগিয়ে বলা ভাল মোদীর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে কংগ্রেস। একদিকে পাতিদার আন্দোলন আর এক দিকে রাহুল গান্ধীর মতো নবীন নেতৃত্বের কাছে কার্যত ধরাশায়ী হতে হল প্রবীণ আর পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ হিসেবে উঠে আসা নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে।জিতলেও এখন তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, পাতিদার আন্দোলন থেকে জিএসটি ইস্যু ও সর্বোপরি রাহুল গান্ধীর মতো সাবধানী নবীন নেতৃত্বের কাছে পরাজয় হয়েছে মোদী-অমিত শাহ জুটির। বিধানসভা দখল করতে না পারলেও গুজরাটে যেভাবে কংগ্রেস আসন বাড়িয়েছে তাতে কংগ্রেস নেতৃত্ব রাহুল গান্ধীর উপর নতুন করে ভরসা করতে শুরু করেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু ওই যে কথায় আছে আজ বাংলা যা ভাবে, আগামীতে দেশ তা ভাবে। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটিকে আটকাতে নবীনরাই যে ভরসা তা অনেকদিন আগেই বুঝেছিলেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই অনেকদিন আগেই যুব নেতা তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাড়ে তিনি সঁপে দিয়েছেন গুরু দায়িত্ব। যে দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছূটে চলেছেন সংগঠন বিস্তারের লক্ষ্যে।
শুধু তাই নয়, পার্লামেন্টের ভিতরেও এখন আক্রমনাত্মক বাংলার যুব সমাজের নয়নমণি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম বুঝেছিলেন প্রবীণকে ঘায়েল করতে গেলে সামনে দরকার নবীন নেতৃত্বকে। সঙ্গে দলের নীতি ও কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যু। যার উপর ভিত্তি করেই বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক দলকে কুপোকাত করা সম্ভব। একই ভাবনা শেষমেষ কার্যকর করেছে কংগ্রেস। প্রবীণ মুখদের পিছনে সরিয়ে একেবারে গুজরাট ভোটের মুখে রাহুল গান্ধীর মতো নবীন কাউকে সামনে রেখে লড়াই দিয়েছে কংগ্রেস। যার ফলও হাতেনাতে মিলেছে। যেখানে রাহুল গান্ধী স্বয়ং বলেছেন, ‘ ক্রোধের বিরুদ্ধে মর্যাদা রক্ষার লড়াই শুরু হল।’ রাজনৈতিক মহল মনে করছে, একদিকে রাহুল গান্ধী আর একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নবীন নেতৃত্বের হাত ধরে দিশা দেখবে দেশবাসী। অটুট থাকবে সাম্প্রদায়িক মেলবন্ধন। সেখানে কর্পোরেটের পরিবর্তে দেশের গরীব মানুষই প্রাধান্য পাবে।